বাংলাদেশের সেরা ১০ টি ব্যাংক-Top 10 banks in Bangladesh
এখানে যে দশটি ব্যাংকের কথা মেনশন করা হয়েছে, সেই দশটি ব্যাংক বিভিন্ন রকমের রিসার্চ এনালাইসিস করার মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে। তবে, এখানে আরেকটি বিষয় বলে রাখা ভাল আর সেটি হলো, এখানে যে সমস্ত ব্যাংকের কথা মেনশন করা হয়েছে সে সমস্ত ব্যাংক বাদে অন্যান্য ব্যাংক আপনার জন্য যে ভাল হবেনা, সেটা কিন্তু নয়। এখানে যে দশটি ব্যাংকের কথা মেনশন করা হয়েছে সেগুলো আমাদের পছন্দের লিস্টে। তার মানে এটা নয় যে অন্যান্য ব্যাংক গুলো খারাপ বা আপনার জন্য সুবিধাজনক নয়। যে সমস্ত ব্যাংকের বাংলাদেশের সেবা দিয়ে আসছে, প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংক বিশ্বস্ততার সাথে সেবা দিয়ে আসছে। তবে কিছু কিছু কারণে এই সমস্ত ব্যাংক গুলো অনেকটা এগিয়ে।
১.ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড- Eastern Bank Limited
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত আর্থিক ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রকাশনা এশিয়ামানি ইস্টার্ন ব্যাংককে (ইবিএল) বাংলাদেশের সেরা দেশীয় ব্যাংক ২০২৩ স্বীকৃতি প্রদান করেছে। এই নিয়ে তৃতীয়বার ইবিএল এই সম্মাননা লাভ করল।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এটি বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন রকমের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। এই ব্যাংকের ব্যাংকিং কার্যক্রম অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে একটু আলাদা।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের কর্পোরেট ব্যাংকিং সেবায় বেশ জনপ্রিয় একটি বেসরকারি ব্যাংক। ব্যাংকটি ১৯৯২ সালের ৮ আগস্ট এটির যাত্রা শুরু করে। প্রথমে ব্যাংকটি বিসিসিআই নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তিতে এটির নামকরন করা হয় ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
মোট শাখাঃ ৮৫ টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৩,৩৬,৯৩৬ মিলিয়ন টাকা।
২. ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড- BRAC Bank Limited
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি (BRAC Bank PLC) বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি মূলত; বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক কর্তৃক পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এটি এসএমই এবং খুচরা গ্রাহকদের উপর একটি শক্তিশালী ফোকাস রয়েছে এবং এটি তার উদ্ভাবনী ডিজিটাল পণ্য এবং পরিষেবাগুলির জন্য পরিচিত।
মোট শাখাঃ শাখা ১৯৬ টি এবং উপ-শাখা-৩০ টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ১,২৪৫.০১ কোটি
৩.ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড- Islami Bank Bangladesh Limited
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি ব্যাংকে কথা মেনশন করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে ব্যাংকটি জায়গা দখল করে নেয়ার মত ক্ষমতা রাখে, সেটি হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
এই ব্যাংকটি সেরা হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য হলো ব্যাংকিং সিস্টেম এবং এই ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার সিস্টেম।
আপনি চাইলেই ব্যাংকের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করতে পারবেন এবং শরিয়াভিত্তিক ভাবে ব্যাংকিং সেবা উপভোগ করতে পারবেন।
এটি ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্টিত হয়। এই ব্যাংকের ৬৩.০৯% বিদেশি এবং ৩৬.৯১% দেশি শেয়ারহোল্ডার রয়েছে।
মোট শাখাঃ ৩৭৩ টি শাখা এবং ১৮১ টি উপশাখা
মোট সম্পত্তির পরিমানঃ ১৬,০৯৯.৯১ মিলিয়ন টাকা
এছাড়াও আপনি যদি নিরাপদ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে চান, তাহলে ইসলামী ব্যাংক আপনার জন্য অন্যতম চয়েজ।
৪.ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড- Dutch-Bangla Bank Limited
ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের প্রথম যৌথ ব্যাংক। এটি বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এটিএম বুথ রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের। বর্তমানে এর বুথ সংখ্যা প্রায় ৫০০ টি। সামাজিক দায়বদ্ধতার অবদানস্বরুপ ব্যাংকটি প্রতিবছর প্রায় ১০২ কোটি টাকার মেধাবৃত্তি প্রদান করে।
মোট শাখাঃ ২১০ টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৪,৭২,৩৫৫.৪ মিলিয়ন টাকা
৫.পূবালী ব্যাংক লিমিটেড-Pubali Bank Limited
পূবালী ব্যাংক বাংলাদেশের রিটেইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটির সারাদেশে প্রায় ৫০০ টি শাখা রয়েছে। এটি ১৯৫৯ সালে ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পরবর্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে ব্যাংকটি বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয়করন করা হয়।
১৯৮৩ সালে তৎকালীন অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যাংকটিকে আবার বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রুপান্তর করে এর নামকরন করা হয় ‘পূবালী ব্যাংক লিমিটেড’।
মোট শাখাঃ ৪৮২ টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৫,৬৫,০৩২ মিলিয়ন টাকা।
৬.দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড-The City Bank Limited
দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। দি সিটি ব্যাংক তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ১৯৮৩ সালের ২৭ মার্চ।
বাংলাদেশে যে কয়টি ব্যাংক শুরুর দিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে যাত্রা করে, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড তাদের মধ্যে অন্যতম। ১২ জন তরুন ব্যবসায়ী মিলে ১৯৮৩ সালে ঢাকায় প্রথম শাখা চালু করার মাধ্যমে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যাংকঅটি তার ধারাবাহিক ব্যাংকিং সেবায় ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করে।
মোট শাখাঃ ১৩২টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৩,৮২,৯২৬ মিলিয়ন টাকা।
৭.প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড-Prime Bank Limited
প্রাইম ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এটি ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করে। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশে কর্পোরেট ব্যাংকিং এবং শিল্প ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়।
মোট শাখাঃ ১৩৪টি।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৩,৪৭,৫০০ মিলিয়ন টাকা।
৮.প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড- Premier Bank Limited
দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি(Premier Bank PLC) বাংলাদেশ এর একটি বেসরকারি ব্যাংক হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৯৯ সালের ১০ জুন। প্রিমিয়ার ব্যাংকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং করা যায়। ব্যাংকের ইন্টারনেট পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকরা ভিসা, মাস্টারকার্ড ও নেক্সাস কার্ডের মাধ্যমে বিল দিতে পারেন।
মোট শাখঃ ১২৮টি শাখা রয়েছে।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৩,১৩,৩১৬,মিলিয়ন টাকা।
৯.ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড-Bank Asia Limited
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ব্যাংকটি ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের কয়েকজন সফল তরুণ উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাঙ্কিং সেবা পৌছে দিচ্ছে। ব্যাংকটির বর্তমানে ৩৫০০ এর অধিক এজেন্ট আউটলেট রয়েছে।
মোট শাখঃ ৫৪টি শাখা রয়েছে।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ৪,০৮,৭১৭ মিলিয়ন টাকা।
১০.যমুনা ব্যাংক লিমিটেড- Jamuna Bank Limited
যমুনা ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের একটি বেসরকারি ব্যাংক। ব্যাংকটি কোম্পানি আইন ১৯৯৪ দ্বারা নিবন্ধিত ব্যাংকিং কোম্পানি। এটি বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করে ৩ জুন, ২০০১ সালে।
মোট শাখঃ ১৬৭ টি শাখা রয়েছে।
মোট সম্পত্ত্বির পরিমানঃ ২,৪১,৫৩৪ মিলিয়ন টাকা।