বাংলাদেশের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থান
Top 10 places of interest in Bangladesh

Top 10 places of interest in Bangladesh

বাংলাদেশের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থান

সুন্দরবন

বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে সুন্দরবন অবস্থিত। সুন্দরবন খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা জুড়ে বিস্তৃত।

সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় অখণ্ড বনভূমি! সুন্দরবন এর আয়তন প্রায় ১,৩৯,৫০০ হেক্টর (৩,৪৫,০০০ একর)। সুন্দরবনে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন।

সুন্দরবন এ দেখার মত আরও রয়েছেঃ জামতলা সৈকত, মান্দার বাড়িয়া সৈকত, হিরন পয়েন্ট, দুবলার চর।প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের লীলাভূমি এই বিশ্বের ঐতিহ্য (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) সুন্দরবন। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি খুলনা শহরে এসে হোটেলে অবস্থান করে পছন্দের ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুন্দরবন যাত্রা করা যায় সুন্দরবনে সুন্দরী গাছ ছাড়াও রয়েছে গরান, বাইন গেওয়া ইত্যাদি। আর প্রাণীর ভিতর রয়েছে বাঘ, সিংহ, হরিণ, হাতি, কুমির ইত্যাদি।

সেন্টমার্টিন

সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা দেশের মূলভূখণ্ডের সর্ব দক্ষিণে এবং কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ১৭ বর্গ কিলোমিটারের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ। স্থানীয় ভাষায় সেন্টমার্টিনকে নারিকেল জিঞ্জিরা বলেও ডাকা হয়। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত এ দ্বীপটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে।বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত টেকনাফ উপজেলা একটি ইউনিয়ন এই সেন্টমার্টিন। 

সেন্টমার্টিন এর আয়তন ১৯৭৭ একর (৮ বর্গ কিলোমিটার)। ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন এর দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার আর কক্সবাজার শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার।

এখানে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক আসেন। সারি সারি নারিকেল গাছ এ দ্বীপকে করেছে অনন্য, যা ভ্রমণ পিয়াসী মানুষকে দুর্নিবার আকর্ষনে কাছে টেনে নেয়।

কক্সবাজার

নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের নাম কক্সবাজার। অপরূপ সুন্দর বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত এই কক্সবাজার। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসে।

কক্সবাজার চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এর অবস্থান। কক্সবাজার ১৫৫ কিলোমিটার (৯৬ মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত।

কক্সবাজারের পাশাপাশি এখানে ভ্রমণের জন্য আরও রয়েছেঃ লাবণী পয়েন্ট, হিমছড়ি, ইনানী বিচ। সারি সারি ঝাউবন, বালুর নরম বিছানা, সামনে বিশাল সমুদ্র। ছুটিতে বেড়িয়ে আসার জন্য পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের তুলনাই হয় না।মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া, শাহপরী, সেন্টমার্টিন কক্সবাজারকে করেছে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয়। 

সাজেকভ্যালি

সাজেক ভ্যালিতে দেখার মত আরও রয়েছেঃ রুইলুই পাড়া, কমলক ঝর্ণা, কংলাক পাড়া, হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার।সাজেক ভ্যালি বা সাজেক উপত্যকা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাই উপজেলার সাজেক ।বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হিসেবে খ্যাত এই সাজেক। রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত এই সাজেক ভ্যালি।

রাঙামাটির একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই সাজেক ভ্যালিতে রয়েছে দুটি পাড়া- রুইলুই এবং কংলাক। ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রুইলুই পাড়া ১,৭২০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। সাজেক ভ্যালি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতা অবস্থিত। ঢাকা থেকে সাজেক ভ্যালি দূরত্ব প্রায় ৩৫১ কিলোমিটার।

সাজেকে একটা ব্যতিক্রমী ব্যাপার হচ্ছেঃ এখানে ২৪ ঘণ্টায় প্রকৃতির তিনটা রূপই দেখা পাবেন আপনি। কখনো খুবই গরম, পরেই হটাৎ বৃষ্টি এবং তার কিছু পরেই হয়তো চারদিকে ঢেকে যায় মেঘের চাদরে! মনে হয় যেন একটা মেঘের উপত্যকা।

রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ

রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ এর একটি বিশেষ নাম রয়েছে সেটি হলঃ সিম্বল অফ রাঙ্গামাটি। রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ টি বানানোর কারন হচ্ছেঃ এই ব্রিজটি কাপ্তাই লেকের বিচ্ছিন্ন দুই পাড়ের পাহাড়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে দিয়েছে। এই ব্রিজ দিয়ে একপাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে অনায়াসেই যাতায়েত করা যায়।

ঢাকা থেকে ৩০৮ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গামাটি জেলা অবস্থিত। রাঙ্গামাটি জেলায় ভ্রমণের প্রধান আকর্ষণ হল রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ! ঝুলন্ত ব্রিজ টি কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত। এটি প্রায় ৩৩৫ ফুট লম্বা ।

রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে এসে আপনি আরও যা দেখতে পাবেন তা হলঃ শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্ক, শুভলং ঝর্ণা, কাপ্তাই লেক, উপজাতীয় জাদুঘর, ঝুম রেস্তোরা, টুকটুক ইকো ভিলেজ, চিৎমরম গ্রাম ও টাওয়ার, যমচুক ।

রাতারগুল

বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল অবস্থিত। এখানে হিজলে ফল ধরে আছে শয়ে শয়ে। বটও চোখে পড়বে মাঝেমধ্যে, মুর্তা গাছ কম। বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। কোনো গাছের হাঁটু পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে। একটু ছোট যেগুলো, সেগুলো আবার শরীরের অর্ধেকই ডুবিয়ে আছে জলে। কোথাও চোখে পড়বে মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরা।

ঢাকা থেকে রাতারগুল এর দূরত্ব প্রায় ২৫৩ কিলোমিটার এবং সিলেট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার।

রাতারগুল বনটি প্রায় ৩০,৩২৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। রাতারগুল কে ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামেও ডাকা হয়।

নিঝুম দ্বীপ

নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৪০ এর দশকে এই দ্বীপটি বঙ্গোপসাগর হতে জেগে উঠা শুরু করে। চর গঠনের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে ৪০ এর দশকের শেষদিকে নিঝুমদ্বীপ তৃণচর বা গোচারণের উপযুক্ত হয়ে উঠে। মাছ ধরতে গিয়ে হাতিয়ার জেলেরা নিঝুমদ্বীপ আবিস্কার করে। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি নিঝুমদ্বীপে জনবসতি শুরু হয়। মূলত হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়ন হতে কিছু জেলে পরিবার প্রথম নিঝুমদ্বীপে আসে। নিঝুমদ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ি মাছ) ধরা পড়তো বিধায় জেলেরা এই দ্বীপের নাম দেয় ‘‘ইছামতির দ্বীপ’’। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালির ঢিবি বা টিলার মত ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বলেও ডাকতো। কালক্রমে ইছামতি দ্বীপ নামটি হারিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বলেই সম্বোধন করে। নিঝুম দ্বীপ বা বাইল্যার ডেইল যে নামই হোক না কেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের দিয়ারা জরিপ বিভাগ এই দ্বীপের জমি চর ওসমান মৌজা হিসেবে জরিপ করে। কথিত আছে সর্দার ওসমান নামের এক সাহসী বাথানিয়া ১০০ মহিষ নিয়ে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি দিয়ে প্রথম এই দ্বীপে অসে এবং দিয়ারা জরিপ কর্মচারীদেরকে জরিপ কাজে প্রভূত সহায়তা করে বিধায় তার নামে অনুসারে নিঝুম দ্বীপে মৌজার সরকারি নাম হয় ‘চর ওসমান’। সমগ্র নিঝুম দ্বীপের প্রায় ৩০০০.০০ একরে মানুষের বসতি রয়েছে এবং অবশিষ্ট অংশে ম্যানগ্রোভ বনায়ন রয়েছে। ইছামতির দ্বীপ, বাইল্যার চর বা চর ওসমান যে নামেই স্থানীয়ভাবে প্রচলিত হোক না কেন ৮০ এর দশকের শুরু হতে এই দ্বীপটি বাংলাদেশের জনগণের নিকট নিঝুম দ্বীপ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

জাফলং

জাফলং ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এটা পর্যটকদের জন্য বিখ্যাত জায়গা। বাংলাদেশের সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এই জাফলং অবস্থিত। ঢাকা থেকে জাফলং এর দূরত্ব প্রায় ২৯৭ কিলোমিটার আর সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার।

জাফলং এ রয়েছে ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতু। সাথে পাহাড়ি ঝর্না, পাথর ও ঝর্ণার সচ্চ পানি।

জাফলং এ দেখার মত আরও রয়েছেঃ লালাখাল, তামাবিল, জৈন্তাপুর, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক বা সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন মাওনা ইউনিয়নের বড় রাথুরা মৌজা ও সদর উপজেলার পীরুজালী ইউনিয়নের পীরুজালী মৌজার খণ্ড খণ্ড শাল বনের ৪৯০৯.০ একর বন ভূমি ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে পরিচিত। ঢাকা থেকে এই সাফারি পার্ক এর দূরত্ব প্রায় ৪৪ কিলোমিটার।

পুরো বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, সাফারি কিংডম, কোর সাফারি পার্ক, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক নামক ৫ টি অংশে বিভক্ত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ৩৬৯০ একর জমির বিস্তৃত। এখানে রয়েছে চিত্রা হরিণ, জলহস্তী, হনুমান, ভল্লুক, গয়াল, বাঘ, সিংহ, হাতি, সাম্বার, মায়া হরিণ, বানর, কুমির ও বিচিত্র পাখী।

কুয়াকাটা

কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা ‘সাগর কন্যা’ হিসেবে পরিচিত। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার লতাচাপলি ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে আরও যে দর্শনীয় স্থান রয়েছেঃ শুঁটকি পল্লী, ক্রাব আইল্যান্ড, গঙ্গামতির জঙ্গল, ফাতরার বন, কুয়াকাটা কুয়া, সীমা বৌদ্ধ মন্দি, কেরানিপাড়া।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর বিশেষত্ব হচ্ছেঃ আপনি একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সড়কপথে দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার। আর বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার।

রোজ গার্ডেন-Rose Garden Palace
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত-Guliakhali Sea Beach
বরিশালের দর্শনীয় স্থানসমূহ-Places of interest in Barisal
নেপাল ভ্রমণের সেরা স্থান - Best places to visit Nepal
মারায়ং তং ভ্রমণ গাইড ও ক্যাম্পিং - Marayang Tong Travel Guide & Camping