Top 10 films of Bangladesh-বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচ্চিত্র
বাংলা সিনেমার রয়েছে প্রাচীন ও গৌরবময় ইতিহাস। ১৯২৭ সালে ঢাকার নবাব পরিবারের তরুণদের মাধ্যমে নির্বাক ছবির যাত্রা হলেও ১৯৫৭ সালে আবদুল জব্বার খানের পরিচালনায় ‘মুখ ও মুখোশ’ নামে প্রথম সবাক সিনেমা নতুন ইতিহাস রচনা করে। তারপর আর এ অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি। সময়ের আবর্তনে বাংলা সিনেমার মুকুটে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য সোনালি পালক।
১. ছুটির ঘণ্টা (১৯৮০), পরিচালক : আজিজুর রহমান
ছুটির ঘণ্টা ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী শিশুতোষ চলচ্চিত্র। ঈদের ছুটি ঘোষণার দিন স্কুলের বাথরুমে সকলের অজান্তে তালা বন্ধ হয়ে আটকে পড়ে একটি ১২ বছর বয়সের ছাত্র। আটক থেকে মুক্তি পাওয়ার আকুতি, অমানবিক কষ্টের স্বরূপ পরিচালক তাঁর দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
২. জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), পরিচালক : জহির রায়হান
জহির রায়হান এর নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭০ সালের এপ্রিলে মুক্তি পায়। সামাজিক এই চলচ্চিত্রে তৎকালীন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকে রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই ছবিতে আমার সোনার বাংলা গানটি চিত্রায়িত হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
৩. নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭), পরিচালক : খান আতাউর রহমান
বাংলার দুইশ বছরের পরাধীনতার শুরুর চিত্র এটি। পলাশীর প্রান্তরে মীরজাফরের কূটচালে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে পরাজিত হন । সেই সাথে বাঙালির সৌভাগ্যের সূর্য্যও অস্থমিত হয়। সেই ঘটনাই আনোয়ার হোসেন দক্ষ অভিনয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।
৪. সাত ভাই চম্পা (১৯৬৮), পরিচালক : দীলিপ সোম
সাত ভাই চম্পা বা সাত ভাই চাম্পা হলো বাংলা বা বঙ্গীয় অঞ্চলে জনপ্রিয় একটি রূপকথার গল্প। গল্পটি অনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম প্রকাশ হয়েছিল ১৯০৭ সালে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ঠাকুরমার ঝুলি নামক রূপকথার বইয়ে। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বইয়ের ভূমিকা লিখেছিলেন।সাত ভাই চম্পার গল্প অবলম্বনে বেশ কয়েকটি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মীত হয়েছিল। সাত ভাই চম্পা চলচ্চিত্রটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে সর্বকালের সেরা দশটি বাংলা চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি হিসেবে স্থান পেয়েছে।
৫. তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), পরিচালক : ঋত্বিক ঘটক
ছবিটি অদ্বৈত মল্লবর্মনের বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। তিতাস নদী ও নদী পাড়ের মানুষের জীবন চিত্র উঠে এসেছে এ ছবিতে। ছবিটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে দর্শক ও সমালোচক দুই শ্রেনীতেই প্রথম স্থান অধিকার করে ।
৬. সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), পরিচালক : আলমগীর কবির
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এক তরুণ আর ধনীর দুলালী তরুণী ভাসতে ভাসতে এসে পৌঁছায় জনমানবহীন এক দ্বীপে। সেখানে শুরু হয় তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। একপর্যায়ে দুজন-দুজনের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়, তারপর কাহিনি নেয় নতুন মোড়।
৭. বেদের মেয়ে জোসনা (১৯৮৯), পরিচালক : তোজাম্মেল হক বকুল
বাংলাদেশের চলচিত্র ইতিহাসের অন্যতম সফল ছবি এটি। ধনী গরীবের ভালবাসাই ছবিটির উপজীব্য। ছবিটির প্রতিটি গান আজো মানুষকে আলোড়িত করে। চলচ্চিত্রটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও পুননির্মাণ করে মুক্তি দেওয়া হয়।
৮. চিত্রা নদীর পাড়ে (১৯৯৯), পরিচালক : তানভীর মোকাম্মেল
চিত্রা নদীর পারে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ১৯৯৮ সালের বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুদের জীবনে যে প্রভাব ফেলেছিল, তা এই ছবিতে দেখানো হয়েছে। কাহিনীর শুরু ১৯৪৭ থেকে এবং শেষ হয় ৬০'-এর দশকে।
৯. ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), পরিচাক : আলমগীর কবির
ধীরে বহে মেঘনা ১৯৭৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি যুদ্ধ চলচ্চিত্র। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ধীরে বহে মেঘনা অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত।
১০. রুপালি সৈকতে (১৯৭৯), পরিচালক : আলমগীর কবির
রূপালী সৈকতে ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ পরিচালক অসীম সাহসীকতায় ফিতায় বন্দি করেছেন।