Top 10 Madrasas in Bangladesh
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসা
১.দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা
দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা (অফিশিয়ালি মাদরাসা-ই-দারুননাজাত) ঢাকা শহরের ডেমরা থানার সারুলিয়া বাজারের কাছে অবস্থিত একটি বিখ্যাত কামিল মাদ্রাসা। ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফুরফুরার আবু বকর সিদ্দীকি আল কুরাইশীর নাতী আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দীকির নামের সাথে মিলিয়ে নামকরণ করে দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই থেকে শুরু হয় এ মাদরাসার অবিরাম পথ চলা।
১৯৯০ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকার ডেমরার সারুলিয়ায় ইবতেদায়ী শাখা দিয়ে যাত্রা শুরু করে দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা। ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অধীনে চার বছর মেয়াদি ফাযিল অনার্স কোর্স চালু হয়। এবং ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে মাদ্রাসাটি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।
২.তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের একটি ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্ট পরিচালিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৩ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে এটিকে কামিল শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়। মাদ্রাসার দাখিল আলিম স্তরে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ এবং কামিল এম.এ শ্রেণীতে হাদীস, তাফসীর ও ফিকহ বিভাগ চালু রয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অধীনে ২০১০ সাল থেকে ৪ বছর মেয়াদী ফাযিল সম্মান (অনার্স) কোর্স চালু রয়েছে। । ১৯৯৭ সালে এর টঙ্গী ক্যাম্পাস চালু হয়।
৩.ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা
হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আযীযুর রহমান কায়েদ সাহেব.১৯৫০ সালে ফোরকানিয়া মাদরাসা নামে এর কার্যক্রম শুরু করেন। সেই সময় ঝালকাঠি পৌর এলাকার বাসন্ডা গ্রামে একটি ক্ষুদ্র মক্তব হিসাবে যাত্রা শুরু করে বর্তমান এনএস মাদ্রাসাটি। এই মাদ্রাসাটি ২০০৬ সালের ফাযিল ও কামিল ডিগ্রি প্রদানের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া অধিভুক্ত হয়। এবং ২০০৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার অধীনে স্থানান্তরিত হয়।
৪.চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া
বরিশাল জেলার চর মোনাই গ্রামে অবস্থিত একটি ইসলামি বিদ্যাপীঠ। ১৯২৪ সালে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক। প্রথমে এটি একটি আলিয়া মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮২ সালে সৈয়দ ফজলুল করিম মাদ্রাসার কওমি শাখা চালু করেন। বর্তমানে কওমি এবং আলিয়া উভয় শাখা চালু রয়েছে। কওমি শাখার মুহতামিম সৈয়দ রেজাউল করিম এবং আলিয়া শাখার অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি। ২০১৬ সালে আলিয়া শাখাটি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরস্কার লাভ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে মাদ্রাসাটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
১৯২৪ সালে এ মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক একাধারে শিক্ষকতা ও পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব পালন করেন। এটি ১৯৪৭, ১৯৫৩, ১৯৫৬ ও ১৯৭০ সালে যথাক্রমে দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল এর সরকারি মঞ্জুরী লাভ করে। ২০১৬প্রতিযোগিতায় এই মাদ্রাসার আলিয়া শাখা জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসার পক্ষে অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সনদ ও গোল্ড মেডেল গ্রহণ করেন।
৫.জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসা নরসিংদী
বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায় বিখ্যাত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। স্থানীয়ভাবে মাদ্রাসাটি গাবতলী মাদ্রাসা নামে পরিচিত। মাদ্রাসা শিক্ষার শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম কামালুদ্দীন জাফরী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিলসহ মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর কামিল পর্যন্ত চালু রয়েছে। মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক উভয় শাখাই চালু রয়েছে এবং আলিম শ্রেণিতেও বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা চালু রয়েছে। মাদ্রাসার ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ ও আল ফিকহ বিভাগ চালু রয়েছে।
৬.ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা
ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা তবে মাদ্রাসাটি সারা দেশে শর্ষিনা দারুসসুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা নামেও ব্যপক পরিচিত। মাদ্রাসাটি বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার ছারছীনা গ্রামে অবস্থিত একটি বিখ্যাত আলিয়া মাদরাসা। ১৯১৫ সালে বিখ্যাত পীর নেছারউদ্দীন আহমদ এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃত টাইটেল (কামিল) মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসা ফলাফলের দিক থেকে সর্বদাই দেশের শীর্ষ স্থান দখল করে থাকে। এই মাদ্রাসা নীতি-নৈতিকতা ও আকীদা বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার জন্য সারা দেশে বিখ্যাত। এই মাদ্রাসা হতে এ পর্যন্ত ৩০০ ছাত্র এর বেশি বোর্ডস্ট্যান্ড করেছে।
৭.ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদরাসা
ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদরাসা রংপুর বিভাগের রংপুর জেলার একটি আলিয়া মাদ্রাসা। মাদরাসাটি ১ জানুয়ারী, ১৯৮২ সালে খলিফাপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন টিনসেডে একটি ফোরকানিয়া মাদরাসা হিসাবে শুরু হয়েছিল। পরে ডাঃ সালামোতুল্লাহ চৌধুরীর উদ্দোগে দাখিল পর্যায়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। মাদরাসাটি অল্প কয়েক বছরের মধ্যে আলিম, ফাযিল, কামিলসহ দু’ বিষয়ে অনার্স শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়, যা মাদরাসা বোর্ড ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিরল। ২০০৩ সালে মাদরাসাটি লেখাপড়ার মান, অবকাঠামো, বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল এর ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ মাদরাসার গৌরব অর্জন করে।
৮.বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা
বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ও আলিয়া মাদ্রাসা। সংক্ষেপে বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা নামে পরিচিত। এই মাদ্রাসাটি ১৯৮২ সালে শাহ সুফি আব্দুল জব্বার রহ. প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসাটির অবস্থান চট্টগ্রাম শহররে ডাবলমুরিং থানার অন্তর্গত ধনিয়ালাপাড়া গ্রামে। এই মাদ্রাসা ২০১৯ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে।
৯.কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা
কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া মাদরাসা রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের জয়েন্ট কোয়ার্টার এলাকায় অবস্থিত। ১৯৬৮ সালে হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ অত্র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন প্রতিষ্ঠাতার সুযোগ্য দুই সন্তান সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ ও সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ এ ঢাকা মহানগর থানা পর্যায়ে কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া কামিল মাদরাসা শ্রেষ্ঠ মাদরাসা নির্বাচিত হয়।
১০.মিছবাহুল উলূম কামিল মাদরাসা
ঢাকা জেলার মতিঝিলে অবস্থিত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। তবে এটি টিএন্ডটি কলোনী মাদরাসা নামেও পরিচিত। ১৯৭৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি তার যাত্রা শুরু করে। মূলত তখন এটি তৎকালীন পিএন্ডটি কলোনি (যা বর্তমানে টিএন্ডটি নামে পরিচিত) এর নিবাসীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে ঢাকার মতিঝিলে মিছবাহুল উলূম কামিল মাদরাসা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মাদ্রাসার ইউনিফ্রম ছাত্রদের সাদা পাঞ্জাবী, ছাত্রীদের ধর্মীয় হিজাব।