
Hoolock gibbon
উল্লুক হলো গিবন পরিবারের দুইটি প্রজাতির প্রাণীর সাধারণ নাম।
ইংরেজি নাম: Hoolock gibbon
বৈজ্ঞানিক নাম: Hoolock hoolock
বর্ণনাঃ
এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ হতে ৯০ সেন্টিমিটার, এবং ওজন ৬ হতে ৯ কেজি। পুরুষ উল্লুক আর মেয়ে উল্লুক আকারে প্রায় একই সমান হলেও এদের গাত্রবর্ণের মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। পুরুষদের গায়ের রং কালো কিন্তু দর্শনীয় সাদা ভ্রু রয়েছে। অন্যদিকে মেয়ে উল্লুকের সারা গায়ে আছে ধূসর-বাদামী লোম। গলা ও ঘাড়ের কাছে লোমগুলো আরো বেশি কালো। এছাড়া মেয়ে উল্লুকের চোখ ও মুখের চারপাশে গোল হয়ে সাদা লোমে আবৃত থাকে যা অনেকটা মুখোশের মতো দেখায়।
স্বভাবঃ
উল্লুক সাধারণত সামাজিক হয়ে থাকে এবং পরিবারবদ্ধভাবে বসবাস করে। একটি পরিবারে মা ও বাবা উল্লুকসহ তিন-চারটি বা এর বেশিও উল্লুক থাকতে পারে। এরা উঁচু গাছের মাথায় থাকতে পছন্দ করে। লম্বা হাত ও পায়ের সাহায্যে এরা এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাওয়া-আসা করে। উচ্চস্বরে শব্দ করে এরা নিজেদের এলাকা থেকে অন্য উল্লুকদের সরিয়ে রাখে এবং পরিবারের সদস্যদের অবস্থান নির্ধারণ করে। উল্লুক পরিবারগুলো তাদের এলাকা ও এর সীমানা রক্ষা করে চলে এবং প্রায়ই উল্লুক পরিবারগুলোর মধ্যে সীমানা ও খাদ্যের উৎসের অধিকার নিয়ে বিরোধ ও ঝগড়া হয়।
প্রজননঃ
মে থেকে আগস্ট প্রজননকাল। স্ত্রী তিন বছর পর পর বাচ্চা দেয়। প্রায় ছয় মাস গর্ভধারণের পর একটিমাত্র বাচ্চা প্রসব করে। বাচ্চারা প্রায় ছয় মাস মায়ের দুধ পান করে এবং দুই বছর বয়সে দুধ ছাড়ে। সচরাচর পাঁচ থেকে ছয় বছরে পূর্ণবয়স্ক হয়। এরপর মা–বাবাকে ছেড়ে জুটি খুঁজে নিয়ে স্বাধীনভাবে জীবনধারণ করে। আয়ুষ্কাল প্রায় ২৫ বছর।
খাদ্য তালিকাঃ
উল্লুকরা মূলত বিভিন্ন ধরনের ফল ও ডুমুর খায়। তবে পোকামাকড়, ফুল, কচি পাতা ইত্যাদিও খায়।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার বন ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার এবং চীনেও (দক্ষিণাংশে) উল্লুক দেখা যায়।
অবস্থাঃ
সারা বিশ্বে এটি বিপন্ন এবং কোন কোন দেশে মহাবিপন্ন প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।