
Crab-eating Mongoose
কাঁকড়াভূক বেজী হারপেসটেস উর্ভা পরিবারভূক্ত বেজী প্রজাতির প্রাণীবিশেষ।
ইংরেজি নাম: Crab-eating mongoose
বৈজ্ঞানিক নাম: Herpestes urva
বর্ণনাঃ
কাঁকড়াভূক বেজীর লোমগুলো ধূসর কিংবা কালচে রঙের। ঘাড়ে বিস্তৃত সাদা ডোরাকাটা রঙের বিস্তৃতি ঘটিয়ে ঘাড়, গাল থেকে বুক পর্যন্ত চলে গেছে। এর লেজ ছোট ধরনের যা সাদা অথবা হলদেটে ভাব পরিলক্ষিত হয়। দেহের দৈর্ঘ্য ৪৫-৫২ সেন্টিমিটার, লেজের দৈর্ঘ্য ২৫-৩০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১.৮ থেকে ২.৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। পুরুষজাতীয় কাঁকড়াভূক বেজী স্ত্রীজাতীয় বেজীর তুলনায় বড় এবং ভারী হয়ে থাকে। এদের শক্তিশালী থাবা রয়েছে।
স্বভাবঃ
নদীর সাথে বসবাস, স্বাভাবিকভাবেই দক্ষতার সাথে সাঁতার কাটতে ও ডুব দিতে পারে। দিনের অনেকখানি সময় তারা জলে কাটায় কিংবা নদীর তীরের কাছাকাছি বা ভেজা ভূমিতে অবস্থান করতে ভালবাসে। চীরসবুজ বনভূমি, গাছপালায় পরিপূর্ণ এলাকা, ধান খেতসহ মানববসতিপূর্ণ এলাকায় এদেরকে দেখা যায়। উঁচু পাহাড়ী এলাকায় এদের দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে। চার সদস্যের দলভূক্ত হয়ে একত্রে থাকতেই এরা পছন্দ করে।
প্রজননঃ
মাটি খুড়ে গর্তে কিংবা পাথরের ভাঁজে এরা আবাস গড়ে। মার্চের শেষ দিকে এবং এপ্রিলের শুরুতে শাবক প্রসবের সময়কাল। স্ত্রীকাঁকড়াভূক বেজী ৫০-৬৩ দিন সময় পর্যন্ত গর্ভধারণ করে। এ সময়ান্তে ২ থেকে ৪টি শাবক প্রসব করে। এদের স্বাভাবিক জীবনকাল ১২-১২ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।
খাদ্য তালিকাঃ
মাছ, শামুক, ব্যাঙ, ইঁদুর, পাখি, পোকামাকড় ইত্যাদিও এরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
বিস্তৃতিঃ
এ প্রাণীটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহে দেখা যায়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, চীনের দক্ষিণাঞ্চলে এদের প্রধান আবাসস্থল। এছাড়াও, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, লাওস এবং থাইল্যান্ডেও প্রাণীটিকে দেখা যায়।
অবস্থাঃ
তাইওয়ানের অধিবাসীরা এ স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার করে। এর মাংস বিক্রয় করে জীবনধারণ করে। এর চামড়া চীনের বাজারগুলোতে বিক্রয় করা হয়। কম্বোডিয়ায় থাইল্যান্ড সীমান্তে পোষা প্রাণী হিসেবে লেনদেন করা হয়। আইইউসিএন বেজীটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে। চীন, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে রক্ষার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।