ইরাবতী ডলফিন-Irrawaddy Dolphin
Irrawaddy dolphin

Irrawaddy dolphin

ইরাবতী ডলফিন

ইরাবতী ডলফিন হচ্ছে মহাসাগরীয় ডলফিনের একটি উরিহ্যালাইন অর্থাৎ লবণ সহ্য করতে পারে এমন প্রজাতি। সমুদ্র তীর এবং বঙ্গোপসাগরের সাথে বিভিন্ন নদীর সংযোগস্থলে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এদের বিচ্ছিন্ন ভাবে থাকতে দেখা যায়।

ইংরেজি নাম Irrawaddy dolphin

বৈজ্ঞানিক নাম  Orcaella brevirostris

বর্ণনাঃ

ইরাবতী ডলফিন দেখতে কিছুটা কিলার হোয়েলের মতন। তবে বাহ্যিক দিক থেকে বিলুগা প্রজাতির ডলফিনের এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এর একটি বৃহৎ এক ধরনের টিস্যু আছে যা জলজ স্তন্যপায়ীরা যোগাযোগে ব্যবহার করে, গোলাকার মাথা এবং অস্পষ্ট ঠোঁট বা চঞ্চু রয়েছে।  পৃষ্ঠ পাখনা পিঠের পিছনের দিকের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে অবস্থিত, ছোট, অস্পষ্ট এবং ত্রিকোণাকার। লেজ বড় এবং প্রশস্ত। সমগ্র দেহই হালকা রঙের কিন্তু দেহের নিচের অংশ পিঠের তুলনায় বেশি সাদা। এই প্রজাতির ডলফিনের ব্লো-হোল দেহের মধ্যরেখার বামে অবস্থিত এবং ডলফিনের সামনের দিকে উন্মুক্ত হয়। এর ছোট চঞ্চু অন্য যেকোনো ডলফিন থেকে ভিন্ন। তাদের চোয়ালের উভয়পাশে ১২-১৯ টি দাঁত আছে বলে জানা গেছে। ইরাবতী ডলফিনের ভর ৯০ কেজি থেকে ২০০ কেজি  পর্যন্ত হয়। পরিণত বয়সে এর দৈর্ঘ্য ২.৩ মিটার হয়। থাইল্যান্ডে প্রাপ্ত একটি পুরুষ ডলফিন মেপে প্রজাতিটির রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য পাওয়া গেছে ২.৭৫ মিটার ।

আচরণঃ

এরা সাধারণত শান্ত স্বভাবের ধীরগতিসম্পন্ন, তবে মাঝেমধ্যে লেজ ঝাঁপটাতে দেখা যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশে তারা মাছের ঝাঁক কে বিভ্রান্ত করার জন্য তাদের মুখ থেকে পানি নিক্ষেপ করে। গভীর ডুবের সময় ৩০-১৫০ সেকেন্ড থেকে ১২ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। ডলফিল দলগতভাবে থাকতে পছন্দ করে। এই প্রজাতির ডলফিনদের দলে সাধারণত ২-৩ সদস্য থাকে। তবে গভীর জলাশয়ে ২৫ টি সদস্য পর্যন্ত একত্রে থাকতে দেখা যায়।

প্রজননঃ

ইরাবতী ডলফিন ৯ বছর বয়সেই প্রজননের ক্ষমতা লাভ করে। এরা উত্তর গোলার্ধে ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত মিলিত হয় বলে জানা যায়। এদের গর্ভধারণকাল হচ্ছে ১৪ মাস। জন্মের সময় এদের দৈর্ঘ্য থাকে ১ মিটার বা ৩.৩ ফুট এবং ওজন থাকে ১০ কেজি বা ২২ পাউন্ড। ২ বছর বয়স পর্যন্ত এরা স্তন্য পান করে। জীবনকাল ৩০ বছরের হয়ে থাকে।

খাদ্য তালিকাঃ

ইরাবতী ডলফিন বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছ, ক্রাস্টাসিয়ান এবং ছেফালোপডস।

আবাসস্থলঃ

বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে উপকুলে এবং সাগর নদীর সংযোগ স্থলে ইরাবতী ডলফিন দেখা যায়। যদিও একে কখনো কখনো ইরাবতী নদীর ডলফিন বলা হয়, তবে এটি নদীর ডলফিন নয়, ইরাবতী ডলফিন মহাসাগরের ডলফিন। সমুদ্র উপকূলের কাছাঁকাছি, নদীর সাথে সংযোগস্থলে স্বাদু ও নোনা পানির মিশ্রণ আছে এমন এলাকায় এরা বসবাস করে।

এছাড়াও স্বাদু পানির নদীতে এদের ছোট ছোট জনসংখ্যায় দেখা যায় যেমন, ক্যাম্বোডিয়ার ক্রাতি প্রদেশের মেকং নদীতে,গঙ্গা নদী আর ইরাবতী নদী যা থেকে এর নামকরন করা হয়েছে ইরাবতী ডলফিন। এদের বিস্তৃতি বঙ্গোপসাগর থেকে নিউ গিনি এমনকি ফিলিপাইন পর্যন্ত, যদিও এরা তীর থেকে বেশি দূরে যায় না।

অবস্থাঃ

আইইউসিএন এই প্রজাতির সাতটি অঞ্চলের জনসংখ্যার পাঁচটিকে মহাবিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যার প্রাথমিক কারণ মাছের জালে আটকে মারা যাওয়া। উদাহরণস্বরূপ, মালাম্পায়ায় ১৯৮৬ সালে যখন প্রথম এদের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায় তখন এদের সংখ্যা ছিল ৭৭, কিন্তু মানব সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে এদের ২০০৭ সালে এদের সংখ্যা দাড়ায় ৪৭ এ। বর্নিওর মাহাকাম নদীতে ৭৩% ডলফিনের মৃত্যুর কারণ গিলনেটে ফেঁসে মারা যাওয়া। এলাকাটিতে ব্যাপকভাবে মাছ ধরা ও নৌকা চলাচলের কারণে এমনটি হয়েছে। এই বিপদ দূর করতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদার জীবনী
প্যারা হরিণ-Hog Deer
ঢাকার কোথায় কম দামে ভালো শপিং করা যাবে? - Where in Dhaka can you do good shopping at low prices?
মেঠো ইঁদুর-Bengal Bandicot Rat
মুন্ডা উপজাতির পরিচিতি - Introduction to Munda Tribe
ঝিনাইদহ উত্তরনারায়নপুর গ্রামের ১৮ বছরের রাজু এখনো শিশু !
বাংলাদেশের সাপের তালিকা - List of snakes of Bangladesh
হিমালয়ান ডোরাকাটা কাঠবিড়ালি-Himalayan striped squirrel
বঙ্গবন্ধু-প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
হলুদগলা মার্টিন-Yellow-throated Marten