আনোয়ার সাদাত এর জীবনী - Biography of Anwar Sadat
মুহাম্মদ আনোয়ার আল-সাদাত (আরবি: محمد أنور السادات Muḥammad Anwar as-Sādāt মিশরীয় আরবি: mæˈħæmmæd ˈʔɑnwɑɾ essæˈdæːt;) ছিলেন মিশরের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি।
প্রারম্ভিক জীবন
মুহাম্মদ আনোয়ার আল-সাদাত ১৯১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর মিট আবু এল কোমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি দরিদ্র পরিবারের। তারা ১৩ ভাই ও বোন। তার এক ভাই, আতেফ সাদাত, পরে একজন পাইলট হয়েছিলেন এবং ১৯৭৩ সালের অক্টোবর যুদ্ধের সময় নিহত হন। তার পিতা আনোয়ার মোহাম্মদ এল সাদাত ছিলেন একজন উচ্চ মিশরীয় এবং তার মা সিট আল-বেরাইন একজন মিশরীয় মা এবং একজন সুদানী পিতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৩৮ সালে মিশর রাজ্যের রাজধানী কায়রোর রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক পাস করেন এবং সিগন্যাল কর্পসে নিযুক্ত হন। তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করেন এবং তাকে অ্যাংলো-মিশরীয় সুদানে (সুদান সেই সময়ে যৌথ ব্রিটিশ ও মিশরীয় শাসনের অধীনে একটি কনডোমিনিয়াম ছিল) পোস্ট করা হয়।
বিপ্লবী কার্যক্রম
১৯৭০ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বপালন করেছেন। সাদাত ছিলেন ১৯৫২ সালের বিপ্লবে বাদশাহ ফারুককে ক্ষমতাচ্যুতকারী স্বাধীন অফিসারদের মধ্যে অন্যতম সিনিয়র অফিসার এবং জামাল আবদেল নাসেরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নাসেরের অধীনে সাদাত দুই দফায় ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন করেছেন এবং ১৯৭০ সালে নাসেরের উত্তরসুরি হিসেবে রাষ্ট্রপতি হন।
১১ বছরের রাষ্ট্রপতিত্বকালে আনোয়ার সাদাত মিশরে অনেক পরিবর্তন আনেন। নাসেরবাদের অনেক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ধারাকে বিদায় দেয়া হয়, বহুদলীয় প্রথার প্রবর্তন করা হয় এবং ইনফিতাহ নামক অর্থনৈতিক নীতি চালু করা হয়। ১৯৭৩ সালে মিশরের সিনাই উপদ্বীপ উদ্ধারের জন্য ইয়ম কিপুর যুদ্ধে তিনি মিশরের নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৭ সালে ছয়দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল তা দখল করে নিয়েছিল
এ কারণে মিশর ও আরব বিশ্বে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এরপর তিনি ইসরায়েলের সাথে আলোচনায় বসেন এবং মিশর-ইসরায়েল শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির কারণে আনোয়ার সাদাত ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাখেম বেগিম শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। চুক্তির ফলে মিশর সিনাই উপদ্বীপ ফিরে পায়। সাধারণ ভাবে মিশরীয়দের কাছে তা জনপ্রিয় হলেও মুসলিম ব্রাদারহুড ও বামপন্থিরা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ব্যাপারে কোনো প্রচেষ্টা না থাকায় তা প্রত্যাখ্যান করে।
বাকি আরব বিশ্বের সাথে আলোচনা না করে ইসরায়েলের সাথে শান্তিচুক্তিকে সুদান ছাড়া বাকি আরব দেশগুলো ও প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন প্রতিবাদ করে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের সাথে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করায় ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত আরব লীগে মিশরের সদস্যপদ স্থগিত ছিল। তার হত্যাকান্ডে পেছনে এই শান্তিচুক্তি ভূমিকা পালন করেছে।
হত্যাকান্ড
শান্তি চুক্তি তার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর খালিদ ইসলামবৌলির নেতৃত্বে জঙ্গিরা কায়রোতে প্যারেড চলাকালীন স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে সাদাতের উপর গুলি চালায় এবং তাকে হত্যা করে।