
Professor Abdul Khaleq
প্রফেসর আবদুল খালেক এর জীবনী
জন্মঃ
আবদুল খালেক বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, কলামনিস্ট ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯ আগস্ট ১৯৩৭ সালে সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্ম গ্রহন করেন। পিতা- ডা. মোহাম্মদ আলী, মাতা- সালেহা খাতুন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন প্রখ্যাত হোমিও চিকিৎসক।
শিক্ষাঃ
মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন স্থানীয় তালগাছী স্কুলে। ১৯৫৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ, ১৯৬০ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে অনার্স এবং ১৯৬২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চীনা ভাষায় ডিপ্লোমা এবং ১৯৭৯ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবনঃ
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে করতোয়া কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তিনি প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য। বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁর কর্মজীবন গৌরবোজ্জ্বল। ১৯৬২ সালে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে প্রভাষক পদে যোগদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে এবং ১৯৮৯ সালে তিনি প্রফেসর পদে উন্নীত হন। অধ্যাপনার পাশাপাশি প্রফেসর আবদুল খালেক-কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। হাউস টিউটর, সহকারী প্রক্টর, প্রক্টর, বিভাগীয় সভাপতি, কলা অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্য পদের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অতঃপর ২০০০ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরী থেকে অবসরে যান। বর্তমানে তিনি নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি নানা সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। যেমন- সভাপতি, ফোকলোর গবেষণা সংসদ, রাজশাহী, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফোকলোর সোসাইটি, সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ইত্যাদি। প্রফেসর আবদুল খালেক আন্তর্জাতিক মানের একজন ফোকলোরবিদ। তবে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তাঁর রয়েছে অবাধ বিচরণ।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ
তিনি বহু গ্রন্থের রচয়িতা। অধিকাংশ গ্রন্থই গবেষণাধর্মী। তবে ভ্রমণ সাহিত্যেও তাঁর অভিজ্ঞতা কম গৌরবের নয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- পদ্মা থেকে ইয়াংসি (ভ্রমণকথা), কাজী ইমদাদুল হক (জীবনী), মধ্যযুগের বাংলাকাব্যে লোক-উপাদান, মৈমনসিংহ গীতিকা : জীবন ও শিল্প, অন্ধকার যুগ ও মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চা, প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে লোকজীবনের স্বরূপ, বাংলাদেশে ফোকলোর চর্চা, মযহারুল ইসলাম : জীবন ও সাহিত্য, বঙ্গবন্ধুর উদারতা এবং উত্তরাধিকার, শহীদ ড. জোহা এবং আমি, শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বধ্যভূমি, বিব্রত সংলাপ। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গবেষণামূলক পত্র-পত্রিকা এবং দৈনিক পত্রিকায় ভাষা, সাহিত্য, সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং রাজনীতি বিষয়ে তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক।
শিক্ষাবিদঃ
খালেক একজন যশস্বী শিক্ষাবিদ। তিনি চতুর্ভাষিক; তিনি বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত ও চীনা ভাষায় পারদর্শী; এই সুবাদে তিনি চারটি সাহিত্যে ব্যুৎপত্তি অর্জনকারী। তিনি প্রথমে পাবনা এ্যাডওয়ার্ড কলেজের বাংলার প্রভাষক দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পরপর সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও প্রফেসর ছিলেন।
পুরস্কারঃ
গুণীজন সংবর্ধনা-১৯৯৯, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমী।
Who's who in the world 1997-এ নাম প্রকাশিত।
মীর মোশাররফ হোসেন স্বর্ণপদক-২০০৫, মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদ, কুষ্টিয়া।
স্মৃতি স্মারক-২০১০, ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
রবীন্দ্র মেলা সম্মাননা স্মারক-২০১৫, জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, সিরাজগঞ্জ শাখা।
আজীবন সম্মাননা, বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭।
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ‘সম্মাননা স্মারক-২০১৭’, বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ০৮-০৯ এপ্রিল ২০১৭।
ফোকলোর গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘ড. আসাদুজ্জামান সাহিত্য পদক’, ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও সাহিত্য সম্মেলন-২০১৭, দৃষ্টি সাহিত্য সংসদ, রাজশাহী।
জোহরা-শামসুন্নাহার সাহিত্য গবেষণা পুরস্কার, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ২০১৭।
ড. আসাদুজ্জামান সাহিত্য পদক (ফোকলোর গবেষণায়), দৃষ্টি সাহিত্য সংসদ এর ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও সাহিত্য সম্মেলন-২০১৭।