
বিশ্বকবি রোদ্দুর রায়-Roddur Roy
অনির্বাণ দে, রোদ্দুর রায় নামে পরিচিত, একজন বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন মনোবিশ্লেষক এবং নিজেকে উত্তর-আধুনিক আধ্যাত্মবাদী-গুরু হিসেবে বর্ণনা করেন। এই মূহুর্তে বাংলা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় সাড়া জাগানো ইউটিউবারদের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন । তাঁর বর্তমান ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা 1 লক্ষ 60 হাজার। তার একেকটা গান ইন্টারনেটে ঝড় তুলেছে, সুনামি এনেছে... রোদ্দুর রায়ের বিখ্যাত সব সৃষ্টির মধ্যে ‘আমি কোকোনাট ম্যান’, ‘আমারও পরাণ যাহা চায়’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘একটি মশা ও মাছি’ ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। গান, কবিতা, আলাপচারিতা— সব মিলেমিশে এক অনবদ্য মশলাদার উপাদান। শেষ পর্যন্ত গান,কবিতা কিছুই থাকলো না। কলকাতার ইন্টারনেট জগতে দারুণ এক পরিচিত নাম রোদ্দুর।
পরিচিতি:
দে কলকাতার দমদমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রামনগর কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং দিল্লিতে একটি আইটি কোম্পানিতে কাজ করেন কিন্তু পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এটি ছেড়ে দেন। দে-এর প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।
ইউটিউব
তিনি তার ইউটিউব কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ২০১০ সালে। প্রথম দিকে, তিনি বেশিরভাগই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান গেয়েছিলেন কারণ এটি অস্বাভাবিক যন্ত্রের সাথে ছিল।
রবীন্দ্রনাথের গান আর কবিতা বিকৃত নিয়ে রোদ্দুর রায় বলেন, ‘হোয়াট ইজ রবীন্দ্রনাথ? আমরা যে রবীন্দ্রনাথ-রবীন্দ্রনাথ করছি, তার ফিলোজফি, তার ব্রহ্মসঙ্গীত, তার গানে আমি-তুমিটা ঠিক কোথায়। তার গানের ব্রহ্মভাব উনি কালেক্ট করেছিলেন চারপাশের দৃশ্যগ্রাহ্য জগৎ থেকে। সেখান থেকে বিষয়টাকে মননগ্রাহ্য জগতে নিয়ে গিয়েছিলেন। যে মানবতা, যে প্রেম, সেটা তো আমরা ছুঁতে পারিনি। আমাদের কাছে রবীন্দ্রনাথ শুধুই বিজনেস অবজেক্ট। কখনো শান্তিনিকেতন কখনো কিছু মুষ্টিমেয় লোকের সম্পদ। কখনো ফিল্মের লঘুসঙ্গীত। আমরা রবীন্দ্রনাথকে টেনে নামিয়েছি। তার ফিলোজফি আমরা ছুঁতে পারলে আমাদের সমাজ এমন হতো না। ’
রোদ্দুর রায় নিজেকে বিশ্বকবি বলে দাবী করেন। ইনি অশ্লীল ভাষায় গান গেয়ে এবং পাগলের মত আচরণ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছেন। রোদ্দুর রায় হাসির পাত্র। খোরাকেরও। তাঁর গানের ভঙ্গিতে, কথায়, উচ্চারণে মানুষ বিরক্ত হয়, মজা পায়। বেশিরভাগ লোকই বলেন, ‘ট্রেন্ডিং’ হতে চেয়ে তাঁর এমন হাবভাব। স্রেফ ‘ফুটেজ’ খাওয়ার জন্য। এক অর্থে দেখলে খুব ভুলও নয়। একজন মানুষ নিজের মতো বেসুরো গাইছেন, অঙ্গভঙ্গি করছেন, নাচছেন, গালাগাল দিচ্ছেন। আমাদের অভ্যস্ততায় তা মেনে না নেওয়াই স্বাভাবিক।
স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে সেসব ভিডিও দেখেন, শেয়ার করেন। আর ভাইরাল হওয়া ঠ্যাকায় কে!
বিশেষ করে তার ‘যেতে যেতে পথে, পূর্ণিমা রাতে, চাঁদ উঠেছিল’ গানের প্যারোডি ভার্সনটা এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে বলার বাইরে!
তিনি হলেন রোদ্দুর রায়। বাংলাদেশ কিংবা ভারতের পশ্চিম বঙ্গ – মোদ্দাকথা হল বাংলা ভাষায় যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তাদের কাছে এটা খুব পরিচিত একটা নাম। এক কথায় তিনি ইন্টারনেটের সেনসেশন।