
দাগি নাটাবটের
দূর থেকে দেখলে মনে হবে কোয়েল পাখি। আকৃতিও অবিকল কোয়েলের মতোই। কিন্তু কাছে গেলেই পাল্টে যায় ভুল, আসলে কোয়েল নয়, এরা আমাদের দেশের আবাসিক পাখি দাগি নাটাবটের।
বাংলা নামঃদাগি নাটাবটের,নাগরবাটই, কোয়েল-বটের বা পাতি লাওয়া ইত্যাদি।
বৈজ্ঞানিক নামঃ Turnix suscitator
ইংরেজি নামঃ Barred Buttonquail
বর্ণনাঃ
দাগি নাটাবটের ছোট ভূচর পাখি। মেয়ে পাখি ছেলে পাখির চেয়ে বেশি রঙিন, ছেলে পাখির পিঠ লালচে বাদামি ও কালো, ডানা পালক ঢাকনিতে খাড়া। থুঁতনি ও গলা সাদাটে, বুক ও ঘাড়ের পাশে পীতাভ ও কালো ডোরা থাকে। মেয়ে পাখির থুঁতনি, গলা ও বুকের ঠিক মাঝখানে কালচে, বুকের পাশ ও তলদেশে কালো ও পীতাভ ডোরা থাকে। উভয় পাখির চোখ সাদা বা হলদে। পা ও পায়ের পাতা সিসার মতো ধূসর।[
খাদ্যঃ
খাবারের তালিকায় আছে বুনোবীজ, উই পোকা, পিঁপড়া,পোকামাকড়, ঘাসফড়িং ও শস্যবীজ।।
আচরণঃ
এদের মা-পাখি স্বভাবে বহুগামী। জুটি বাঁধে। ঝোপ, জঙ্গল, তৃণভূমি ও বনে এরা খুব সকাল ও শেষ বিকেলে বিচরণ করে। দলে এরা জোড়ায় থাকে। এরা মাটিতে হেঁটে ঝরা পাতা উল্টে খাবার খুঁজে খায়। সাধারণত একই জায়গায় দিনের পর দিন খাবার খেতে আসে।
প্রজননঃ
জুন থেকে অক্টোবর এদের প্রজননের সময়। প্রজনন সময়ে ঘাস দিয়ে ছোট করে মাটিতে ঝোপের কাছে বাসা করে ডিম দেয়। ডিম পাড়ে চার-পাঁচটি। ডিমের রং ধূসর সাদা, তাতে লালচে বা কালচে বেগুনি আঁচ থাকে। ডিম থেকে ছানা ফুটতে ১২ দিন সময় লাগে। ছানারা এক ঘণ্টার ভেতরই বড় পাখির সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে বাসা থেকে।
বিস্তৃতিঃ
প্রজাতিটি ভারত, বাংলাদেশ থেকে শুরু করে পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, দক্ষিণ চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন পর্যন্ত বিস্তৃত।
অবস্থাঃ
সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৫৫ লাখ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।