কোকিল
কোকিল কুকুলিডি গোত্রের অন্তর্গত একদল পাখি। কোকিল বাংলার একটি সুপরিচিত পাখি। এদের চমৎকার গান বসন্তকালকে মুখরিত করে রাখে। পরের বাসায় ডিম পেড়ে চলে যায়, তাই এদের আরেক নাম পরভৃত।
ইংরেজি নাম Asian/Western Koelev Asian Cuckoo
বৈজ্ঞানিক নাম Eudynamys scolopacea.
বর্ণনাঃ
ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত কোকিলের দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৪৩ সেন্টিমিটার। ওজন ১৭০ গ্রাম। পুরুষের দেহের পালক কুচকুচে কালো ও তাতে সবুজ আভা রয়েছে। অন্যদিকে, স্ত্রীর বাদামি দেহে অসংখ্য সাদা ছিট ও রেখা আঁকা। পুরুষের ঠোঁট চকচকে সবুজ হলেও স্ত্রীর হালকা ধূসর। চোখ টকটকে লাল। পা, পায়ের পাতা ও নখ কালো।
বিস্তৃতঃ
অধিকাংশ কোকিল বৃক্ষচর, তবে বেশ কয়েক প্রজাতির ভূচর কোকিলের খোঁজ পাওয়া গেছে। এরা মরু ও মেরু অঞ্চল বাদে প্রায় সমগ্র পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত। বিষুবীয় অঞ্চলে এদের উপস্থিতি প্রকট। বেশ কিছু প্রজাতি আবার স্বভাবে পরিযায়ী।
খাদ্য তালিকাঃ
পোকামাকড়, শুককীট, ফলমূল এদের মূল খাদ্য।
প্রজননঃ
মার্চ-আগস্ট কোকিলের প্রজনন মৌসুম। কোকিল সরাসরি অন্য যেসব পাখির বাসায় ডিম পাড়ে সেসব বাসা ছোট ও আবদ্ধ । ডিম পাড়ার সময় লুকিয়ে কাক, হাঁড়িচাঁচা বা শালিকের বাসায় ডিম পাড়ে। বিভিন্ন বাসায় ডিমের সংখ্যা ৪ থেকে ৬টি। না বুঝে কাক ও অন্য পাখি এদের ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ১২ থেকে ১৩ দিনে। ছানা ১৮ থেকে ২০ দিনে বড় হয়ে উড়তে শেখে। আয়ুষ্কাল চার বছরের বেশি।
স্বভাবঃ
বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই দেখা যায়। মূলত একাকী থাকতে পছন্দ করে। প্রজননকাল ছাড়া সচরাচর জোড়ায় দেখা যায় না । গাছের ছায়ার পাতার আড়ালে থাকতেই ভালোবাসে। পুরুষ কোকিল গলায় মধুর সুর তুললেও স্ত্রী কোকিল নীরব থাকে। গাছপালাযুক্ত অঞ্চলে, বাগানে, পার্কে উঁচু গাছে বসে থাকে। শীতকালে চুপচাপ থাকে দেখে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়না কিন্তু গরমের আবির্ভাবেই এরা সুরেলা কণ্ঠে এদের উপস্থিতির কথা জানিয়ে দেয়।
আরো পড়ুনঃ বন কোকিল