White-throated Kingfisher
ধলাগলা মাছরাঙা
সাদাবুক মাছরাঙা, ধলাগলা মাছরাঙা নামেও পরিচিত Halcyonidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Halcyon গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির গেছো মাছরাঙা।
ইংরেজি নাম: White-throated Kingfisher
বৈজ্ঞানিক নাম: Halcyon smyrnensis
বর্ণনাঃ
এরা লম্বায় ২৮ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড় গাঢ় বাদামি রঙের। পিঠ থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত উজ্জ্বল নীল। সবুজ ডানার উপরের দিকটা গাঢ় বাদামি, মাঝখানে কালচে পালক। থুতনি, গলা ও বুকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ধবধবে সাদা। বুকের নিচ থেকে বস্তিপ্রদেশ পর্যন্ত কালচে বাদামি। শক্তপোক্ত ঠোঁট কমলা লাল। চোখের মণি বাদামি, বলয় লালচে। পা ও পায়ের পাতা প্রবাল-লাল। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে তেমন কোনো তফাৎ নেই।
খাদ্য তালিকাঃ
ঝিঁঝিপোকা, গুবরেপোকা, পঙ্গপাল, ডানাওয়ালা উইপোকাসহ নানা পোকাও খায়। এমনকি ব্যাঙ, টিকটিকি, ইঁদুরের বাচ্চাও শিকার করে।
প্রজননঃ
বসন্তের শেষ ভাগ এদের বাসা বাঁধার সময়। তখন স্ত্রী-পুরুষ জোড়া বাঁধে। তারপর বাসা বাঁধে। এদের বাসা অন্য পাখিদের চেয়ে একটু আলাদা হয়। এ পাখি শুকনো পাতা কিংবা খড়কুটো দিয়ে বাসা বানায় না। খাল, নদী, পুকুর কিংবা গর্তের খাড়া পাড়ে গর্ত করে। তার ভিতর ৪ থেকে ৭টি ডিম পাড়ে। ডিমের রং সাদা। ডিম ১ ইঞ্চির চেয়ে সামান্য লম্বা।
স্বভাবঃ
এদের বেশিরভাগ বিচরণ উপকূলীয় অঞ্চলের জলাশয়ের কাছাকাছিতে। এ ছাড়াও শুষ্ক পাতাঝরা বনের প্রান্তদেশে কিংবা আবাদি জমির আশপাশে উড়ে বেড়াতে দেখা যায়। দেখা যায় বৈদ্যুতিক তারে বসে থাকতেও। বিচরণকালীন সময়ে একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায়ও দেখা যায়। কণ্ঠস্বর কর্কশ। উড়তে উড়তে চেঁচিয়ে ওঠে ‘কে-কে-কে’ সুরে। মনটা ভালো থাকলে শিস মেরে ‘কিলিলিলি… ’ সুরে গান গায়।
বিস্তৃতিঃ
সাদাবুক মাছরাঙা বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। এছাড়া তুরস্ক ও বুলগেরিয়া পর্যন্তও এদের বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৭১ লক্ষ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
অবস্থাঃ
এই পাখি আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্থ বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।