বড় ধলাকপাল রাজহাঁস-Greater white-fronted goose
বড় ধলাকপাল রাজহাঁস বা সাদাকপাল রাজহাঁস Anatidae (অ্যানাটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Anser (আন্সের) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির বড় আকারের রাজহাঁস। এরা দেখতে অনেকটা ছোট ধলাকপাল রাজহাঁসের মতো। বড় ধলাকপাল রাজহাঁসের ৫টি উপ প্রজাতি আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে আসে A. a. albifrons । অন্য উপ প্রজাতি গুলো হল A. a. frontalis , A. a. gambeli A. a. elgasi A. a. flavirostris
ইংরেজি নাম: Greater white-fronted goose
বৈজ্ঞানিক নাম: Anser albifrons
বর্ণনাঃ
বড় ধলাকপাল রাজহাঁস লম্বায় ২৫ থেকে ৩২ ইঞ্চি হয়ে থাকে। পরিযায়ী স্বভাব এর জন্য এদের লম্বা পাখা আছে যার দৈর্ঘ্য ৫১ থেকে ৬৫ ইঞ্চি। এদের ওজন সাধারনত ১.৯৩ থেকে ৩.৩১ কে জি হতে পারে। এদের চোখের সামনে সাদা পালকের দাগ থাকে। এদের উজ্জ্বল কমলা রঙের পা আছে। উপরের পাখনার রঙ ধূসর বর্ণের। এরা দৈর্ঘ্যে মেটে হাস থেকে ছোট কিন্তু ছোট ধলাকপাল রাজহাঁস থেকে বড়। পুরুষ সাধারণত আকারে বড় হয়, উভয় লিঙ্গই দেখতে একই রকম হয় - ধূসর বাদামী পাখির হালকা ধূসর স্তন গাঢ় বাদামী থেকে কালো দাগ। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই গোলাপি রঙের সদৃশ চোখ আছে।
স্বভাবঃ
বড় ধলাকপাল রাজহাঁস মিঠাপানির জলাশয়,নলবন,বাদাবন,আর্দ্র তৃণভূমি ও শস্যখেতে বিচরণ করে। সাধারণত দলবদ্ধ হয়ে থাকতে দেখা যায়। ধীরে ধীরে হাঁটে এবং সাঁতরে খাদ্য খুঁজে। বড় ধলাকপাল রাজহাঁস এক পায়ে দাড়িয়ে বিশ্রাম নেয়।
প্রজননঃ
বড় ধলাকপাল রাজহাঁস নরম উদ্ভিদ ও পালক দিয়ে বাসা বানায়। এরা বাসায় ৩-৬ টি ডিম দেয়। ডিমের রং ফ্যাকাসে। স্ত্রি রাজহাঁস একাই ডিমে তা দেয় এবং ২২-২৮ দিনে ডিম ফুঁটে বাচ্চা হয়।
খাদ্য তালিকাঃ
খাদ্য তালিকায় রয়েছে ঘাস,কচিনল,জলজ উদ্ভিদ,শ্যসদানা,পোকামাকড় ও শামুক।
বিস্তৃতিঃ
পাখিটি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার আবাসিক পাখি হলেও শীতকালে বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পরিযান করে।
অবস্থাঃ
সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ১৫ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে, আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।