পাতি সোনাচোখ-Common goldeneye
পাতি সোনাচোখ Anatidae পরিবারের Bucephala গণের একটি পাখি। এরা সোনালি চোখ হাঁস নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Common goldeneye
বৈজ্ঞানিক নাম: Bucephala clangula
বর্ণনাঃ
পাতি সোনাচোখ মাঝারি আকারের হাঁস । এরা আকারে ১৫.৭ থেকে ২০.১ ইঞ্চি হয়ে থাকে । পাখার বিস্তৃতি ৩০.৩ থেকে ৩২.৭ ইঞ্চি । এদের ওজন সাধারনত ৫০০ থেকে১৩০০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুরুষ হাঁসটির মাথা সবুজাভ কালো । এর মুখের পাশে ঠোঁটের মধ্যে ডিম্বাকৃতির সাদা দাগ দেখতে পাওয়া যায় । দেহের উভয় পাশ , বুক ও পেট দেখতে উজ্জ্বল সাদা । দেহের পিছনের অংশ , লেজ ও পাখা কালো রঙের । এদের ঠোঁট ছোট ও ত্রিকোণাকার । চোখ সোনালি হলুদ । স্ত্রী পাখিটির মাথা চকলেট বাদামী রঙের । বুক , পাঁজর ও পেট সাদা রঙের । দেহের পিছনের অংশ , পাখা ও লেজ নীলাভ ধূসর বর্ণের । এদের কালো রঙের ছোট ও ত্রিকোণাকার ঠোঁট আছে । ঠোঁটের মাঝে হলুদ দাগ দেখতে পাওয়া যায় । চোখ ফ্যাকাশে হলুদ থেকে সাদা । পা ও পায়ের পাতা কমলা হলুদ । অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিটি দেখতে স্ত্রী পাখির মতো । এদের মাথা ,বুক ও দেহের দুই পাশ ধূসর বর্ণের ।
স্বভাবঃ
এদের বিচরণ ক্ষেত্র নদী, হ্রদ এবং হাওর-বাঁওড় বা বড় ধরনের জলাশয়ে। বিচরণ করে ছোট দলে, একাকী কম দেখা যায়। বিশেষ করে অগভীর জলে সাঁতার কেটে শিকার সংগ্রহ করে। খুব ধীরগতিতে শিকারের পিছু ধাওয়া করে। আবার ওড়েও ধীরগতিতে, ডানা ঝাঁপটিয়ে ওড়ে। তাই বলে অলস নয়, স্বভাবটাই অমন। ওড়ার সময় শিস কাটে। প্রজনন মৌসুমে কর্কশ কণ্ঠে ‘স্পির..স্পির..’ সুরে ডাকে।
প্রজননঃ
প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। সাইবেরিয়াঞ্চলের গাছের প্রাকৃতিক গর্তে নরম পালক বিছিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৮-১৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৮-৩০ দিন। মাপ ৪.২´৫.৫ সেমি। শাবক শাবলম্বী হতে সময় লাগে ৫৫-৬৫ দিন।
খাদ্য তালিকাঃ
খাদ্যতালিকায় রয়েছে শামুক, চিংড়ি জাতীয় প্রাণী ও জলজ পোকামাকড়।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল পর্যন্ত। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানে দেখা যায়।
অবস্থাঃ
পাতি সোনাচোখ বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।