ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক – খুররম মুরাদ

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক – খুররম মুরাদ DOWNLOAD NOW


একঃ পারস্পারিক সম্পর্কের ভিত্তিঃ তার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

১. সম্পর্কের ভিত্তি ও মর্যাদা

ইসলামী আন্দোলন এক সামগ্রিক ও সর্বাত্মক বিপ্লবের আহবান। এ জন্যই এ বিপ্লবী আন্দোলনের কর্মীদের সাধারণভাবে সমস্ত মানুষের সঙ্গে এবং বিশেষভাবে পরস্পরের সাথে এর সঠিক ভিত্তির ওপর সম্পৃক্ত করে দেয়া এর প্রধানতম বুনিয়াদী কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। এ কর্তব্য সম্পাদনের জন্যে ইসলাম এই সম্পর্কের প্রতিটি দিকের ওপরই আলোকপাত করেছে এবং ভিত্তি থেকে খুঁটিনাটি বিষয় পর্যন্ত প্রতিটি জিনিসকেই নির্ধারিত করে দিয়েছে।


পারস্পারিক সম্পর্ককে বিবৃত করার জন্যে আল-কুরআনে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ মনোজ্ঞ বর্ণনাভংগী ব্যবহার করা হয়েছে, বলা হয়েছেঃ


انما المؤمنون اخواة –


“মু’মিনেরাতো পরস্পরের ভাই”–হুজরাতঃ ১০


দৃশ্যতঃ এটি তিনটি শব্দ বিশিষ্ট একটি ছোট্ট বাক্যাংশ মাত্র। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পারস্পারিক সম্পর্কের ভিত্তি, তার আদর্শিক মর্যাদা এবং ইসলামী আন্দোলনের জন্যে তার গুরুত্ব ও গভীরতা প্রকাশ করার নিমিত্তে এ বাক্যাংশটুকু যথেষ্ট। এ ব্যাপারে একে ইসলামী আন্দোলনের সনদের (ঈযধৎঃবৎ) মর্যাদা দেয়া যেত পারে।


এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইসলামী আন্দোলনে লোকদের সম্পর্ক হচ্ছে একটি আদর্শিক সম্পর্ক। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের একত্ব এর গোড়া পত্তন করে এবং একই আদর্শের প্রতি ঈমানের ঐক্য এতে রঙ বিন্যাস করে। দ্বিতীয়তঃ আদর্শিক সম্পর্ক হবার কারণে এটা নিছক কোন নিরস বা ঠুনকো সম্পর্ক নয়। বরং এতে যে স্থিতি, গভীরতা ও প্রগাঢ় ভালোবাসার সমন্বয় ঘটে, তাকে শুধু দুই ভাইয়ের পারস্পারিক সম্পর্কের দৃষ্টান্ত দ্বারাই প্রকাশ করা চলে। এমনি সম্পর্ককেই বলা হয় উখুয়্যাত বা ভ্রাতৃত্ব। বস্তুতঃ একটি আদর্শিক সম্পর্কের ভেতর ইসলাম যে স্থিতিশীলতা, প্রশস্ততা ও আবেগের সঞ্চার করে,তার প্রতিধ্বনি করার জন্যে ভ্রাতৃত্বের (উখুয়্যাত) চেয়ে উত্তম শব্দ আর কি হতে পারে?


২. ভ্রাতৃত্ব ঈমানের অনিবার্য দাবী

ইসলামী সভ্যতায় ঈমানের ধারণা শুধু এটুকু নয় যে, কতিপয় অতি প্রাকৃতিক সত্যকে স্বীকার করে নিলেই ব্যস হয়ে গেল। বরং এ একটি ব্যপকতর ধারণা বিশিষ্ট প্রত্যয়-যা মানুষের হৃদয়-মনকে আচ্ছন্ন করে, যা তার শিরা-উপশিরায় রক্তের ন্যায় সঞ্চালিত হয়। এ এমন একটি অনুভূতি, যা তার বক্ষশেকে উদ্বেলিত করে ও আলোড়িত করে রাখে। এ হচ্ছে তার মন-মগজ ও দিল-দিমাগের কাঠামো পরিবর্তনকারী এক চিন্তাশক্তি। সর্বোপরি, এ হচ্ছে এক বাস্তবানুগ ব্যবস্থাপনার কার্যনির্বাহী শক্তি, যা তার সমস্ত অংগ-প্রত্যংগকে নিজের নিয়ন্ত্রণাধীনে নিয়ে গোটা ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক জীবনেই বিপ্লবের সূচনা করে। যে ঈমান এতোটা ব্যাপক প্রভাবশালী, তার অক্টোপাস থেকে মানুষের পারস্পারিক সম্পর্ক কিভাবে মুক্ত থাকতে পারে! বিশেষতঃ এটা যখন এক অনস্বীকার্য সত্য যে, মানুষের পারস্পারিক সম্পর্কের সাথে তার গোটা জীবন–একটি নগণ্য অংশ ছাড়া- ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। বস্তুতঃ এ কারণেই ঈমান তার অনুসারীদেরকে সমস্ত মানুষের সাথে সাধারণভাবে এবং পরস্পরের সাথে বিশেষভাবে সম্পর্ক স্থাপন করার নির্দেশ দেয়। উপরন্তু ঐ সম্পর্ককে সুবিচার (আদ্ল) ও সদাচরণের (ইহ্সান) ওপর প্রতিষ্ঠা করার জন্যে সে একটি সামগ্রিক জীবনপদ্ধতি এবং সভ্যতারও রূপদান করে। অন্যদিকে অধিকার ও মর্যাদার ভিত্তিকে সে একটি পূর্ণাঙ্গ বিধি-ব্যবস্থায় পরিণত করে দেয়, যাতে করে নিজ নিজ স্থান থেকে প্রত্যেকেই তাকে মেনে চলতে পারে। এভাবে এক হাতের আঙ্গুলের ভেতর অন্য হাতের আঙ্গুল কিংবা এক ভাইয়ের সঙ্গে অন্য ভাই যেমন যুক্ত ও মিলিত হয়, ঈমানের সম্পর্কে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরাও যেনো পরস্পরে তেমনি যুক্ত হতে পারে। আর এ হচ্ছে ঈমানের আদর্শিক মর্যাদার অনিবার্য দাবী। এমন ঈমানই মানব প্রকৃতি দাবী করে এবং এ সম্পর্কেই তার বিবেক সাক্ষ্যদান করে। যারা সব রঙ বর্জন করে শুধু আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হয়, তামাম আনুগত্য পরিহার করে কেবল আল্লাহর আনুগত্য কবুল করে, সমস্ত বাতিল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধু সত্যের সাথে যুক্ত হয় এবং আল্লাহরই জন্যে একনিষ্ঠ ও একমুখী হয়, তারাও যদি পরস্পরে সম্পৃক্ত ও সংশ্লিষ্ট না হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন না করে, তবে আর কে করবে? উদ্দেশ্যের একমুখিনতার চাইতে আর কি বড় শক্তি রয়েছে, যা মানুষকে মানুষের সাথে যুক্ত করতে পারে! এ একমুখিনতার এবং সত্য পথের প্রতিটি মঞ্জিলই এ সম্পর্ককে এক জীবন্ত সত্যে পরিবর্তিত করতে থাকে। যে ব্যক্তি সত্যের খাতিরে নিজেকে উৎসর্গ করে দেয়, সে স্বভাবতই এ পথের প্রতিটি পথিকের ভালোবাসা, সহানুভূতি, সান্তনা ও পোষকতার মুখাপেক্ষী এবং প্রয়োজনশীল হয়ে থাকে। সুতরাং এ পথে এসে এ নিয়ামতটুকুও যদি সে লাভ না করে তো বড় অভাবকে আর কিছুতেই পূর্ণ করা সম্ভব নয়।


৩. বিশ্বব্যাপী ইসলামী বিপ্লবের জন্যে ভ্রাতৃত্ব অপরিহার্য

এ দুনিয়ায় ঈমানের মূল লক্ষ্যে (অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী ইসলামী বিপ্লব সৃষ্টি এবং ইসলামী সভ্যতার প্রতিষ্ঠা) স্বতঃই এক সূদৃঢ়, স্থিতিশীল ও ভ্রাতৃত্বসুলভ সম্পর্কের দাবী করে। এ লক্ষ্য অর্জনটা কোন সহজ কাজ নয়। এ হচ্ছে ‘প্রেমের সমীপে পদার্পণ করার সমতুল্য’। এখানে প্রতি পদক্ষেপে বিপদের ঝড়-ঝান্ডা ওঠে,পরীক্ষার সয়লাব আসে। স্পষ্টত এমনি গুরুদায়িত্ব পালন করার জন্যে প্রতিটি ব্যক্তির বন্ধুত্ব অতীব মূল্যবান। এর অভাব অন্য কোন উপায়েই পূর্ণ করা চলে না। বিশেষত এ পথে সমর্থক-সহায়কের অভাব এক স্বাভাবিক সত্য বিধায় এমনি ধরণের শূণ্যতাকে এক মুহূর্তের জন্যেও বরদাশত করা যায় না।


উপরন্তু একটি সংঘবদ্ধ ও শক্শিালী জামায়াত ছাড়া কোন সামগ্রিক বিপ্লবই সংঘটিত হতে পারে না। আর সংহত ও শক্তিশালী জামায়াত ঠিক তখনই জন্ম লাভ করে, যখন তার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিগণ পরস্পরে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। এই উদ্দেশ্যে এমনি সংঘবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত, যাতে স্বভাবতই এক ‘সীসার প্রাচীরে’ পরিণত হবে (بنيان مرصوص); তার ভেতরে কোন বিভেদ বা অনৈক পথ খুঁজে পাবে না। বস্তুত এমনি সুসংহত প্রচেষ্টাই সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারে।


আল্লাহ তায়ালা সূরায়ে আলে ইমরানে একটি নবগঠিত ইসলামী রাষ্ট্রের পরিচালকদের এমন সম্পর্ক গড়ে তোলবারই নির্দেশ দিয়েছেন:


يايها الذين امنوا اصبروا وصابروا ورابطوا واتقوا الله لعلكم تفلحون –


“হে ঈমানদারগণ! ধৈর্যধারণ কর এবং মুকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পারো।” (আলে ইমরানঃ২০০)


সূরায়ে আনফালের শেষ দিকে ইসলামী বিপ্লবের পূর্ণতার জন্যে মুসলমানদের পারস্পারিক সম্পর্ককে একটি আবশ্যিক শর্ত হিসাবে সামনে রাখা হয়েছে। এবং বলা হয়েছেঃ যারা এই দ্বীনের প্রতি ঈমান আনবে, এর জন্যে সবকিছু ত্যাগ করবে এবং এই আন্দোলনে নিজের ধন-প্রাণ উৎসর্গ করবে, তাদের পারস্পারিক সম্পর্ক হবে নিশ্চিতরূপে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার সম্পর্ক। এ সম্পর্কের জন্যে এখানে ‘বন্ধুত্ব’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।


ان الذين امنوا وهاجروا وجاهدوا باموالهم وانفسهم فى سبيل الله والذين اواو ونصروا اولـــئك بعضهم اولــياء بعضٍ –


“যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে, স্বীয় জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় ও সাহায্য-সহযোগিতা দিয়েছে, তারা একে অপরের বন্ধু।” (আনফালঃ৭২)


এখান থেকে আরো কিছুটা সামনে এগিয়ে কাফেরদের সাংগঠনিক ঐক্য এবং তাদের দলীয় শক্তির প্রতি ইশারা দিয়ে বলা হয়েছে যে, মুসলমানরা যদি এমনি বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে না তোলে তবে আদল, ইহসান ও খোদাপরস্তির ভিত্তিতে একটি বিশ্বব্যাপী ইসলামী বিপ্লবের আকাঙ্খা কখনো বাস্তব দুনিয়ায় দৃঢ় মূল হতে পারবে না। ফলে আল্লাহর এই দুনিয়া ফেতনা-ফাসাদে পূর্ণ হয়ে যাবে। কেননা এ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া বিপ্লবের বিরুদ্ধ শক্তিগুলোর মুকাবেলা করা মুসলমানদের পে সম্ভবপর নয়।


والذين كفروا بعضهم اولـــياء بعضٍ – الا تفعلوه تكن فتنة فى الارض وفساد كبير –


“আর যারা কাফের তারা পরস্পরের বন্ধু, সহযোগী। তোমরা (ঈমানদার লোকেরা) যদি পরস্পরের সাহায্যে এগিয়ে না আস তাহলে জমীনে বড়ই ফেতনা ও কঠিন বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।” (আনফালঃ৭৩)


আর এ কথা সুস্পষ্ট যে, ইসলামী সভ্যতার প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামী বিপ্লব সৃষ্টির জন্যে এমন প্রয়াস-প্রচেষ্টাই হচ্ছে ঈমানের সত্যাসত্য নির্ণয়ের প্রকৃত মানদন্ড।


والذين امنوا وهاجروا وجاهدوا فى سبيل الله والذين اَوَاوْ ونصروا اولـــئك هم المؤمنون حقاً –


“যারা ঈমান এনেছে নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জিহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে, সাহায্য-সহায়তা করেছে, তারাই প্রকৃত মু’মিন। (আনফালঃ৭৪)


এরই কিছুটা আগে আল্লাহ তায়ালা বিরুদ্ধবাদীদের মুকাবেলায় আপন সাহায্যের প্রতিশ্র“তির সাথে মু’মিনদের জামায়াত সম্পর্কে নবী করিম (সঃ)কে এই বলে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, তাদের দিলকে তিনি নিবিড়ভাবে জুড়ে দিয়েছেন এবং তারাই হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের সাফল্যের চাবিকাঠি।


هو الذى ايدك بنصره وبالمؤمنين – والّف بين قلوبهم-


“তিনিই তো নিজের সাহায্য দ্বারা ও মু’মিনদের দ্বারা তোমার সহায়তা করেছেন এবং মু’মিনদের দিলকে পরস্পরের সাথে জুড়ে দিয়েছেন।” (আনফাল: ৬২-৬৩)

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের বৈশিষ্ট্য,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাঙ্খিত মান,ইসলামী আন্দোলনের তিন পথিকৃৎ,ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি,ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি,ইসলামী আন্দোলনের তিন পথিকৃৎ pdf,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের বৈশিষ্ট্য,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাঙ্খিত মান,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ত্যাগ ও কুরবানী,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের প্রাথমিক পুঁজি pdf,ইসলামী আন্দোলনের তিন পথিকৃৎ,ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি,ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি,ইসলামী আন্দোলনের তিন পথিকৃৎ pdf,ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের বৈশিষ্ট্য,ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি,ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী

ইসলামী জাগরণের তিন পথিকৃৎ – অধ্যাপক এ.কে.এম নাজির আহমদ - Three Pioneers of Islamic Awakening – Professor AKM Nazir Ahmad
কারাগারে রাতদিন -জয়নাব আল গাজালী - Karagare Raatdin - Zaynab Al-Ghazali
রিয়াদুস সালেহীন, ১ম ও ২য় খন্ড -বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত
তাফহীমুল কুরআন ১৯শ খন্ড – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী। - Tafhimul Qur'an 19th Khondo - Syed Abul A'la Mawdudi.
জিহাদের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী - Jihad er hakikat - Syed Abul A'la Maududi.
হজ্জের হাকীকত – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী - Haqiqat of Hajj - Syed Abul A'la Maududi
আসান ফেকাহ-মাওলানা ইউসুফ ইসলাহী - Asan Fekah - Maulana Yusuf Islahi
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের প্রাথমিক পুঁজি – অধ্যাপক গোলাম আযম
হাদীস শরীফ ১ম খন্ড – মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম - Hadith Sharif Volume 1 – Maulana Muhammad Abdur Rahim
মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন – আব্দুল খালেক - Daily life of Muslims – Abdul Khalek