সরকারি বিএম কলেজ-Government BM College, Barishal
Government BM College

Government BM College

সরকারি বিএম কলেজ

প্রতিষ্ঠানের নাম: ব্রজমোহন কলেজ, সংক্ষেপে বলা হয় বি.এম কলেজ।

স্থাপিত: এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে বরিশাল শহরে অবস্থিত। ১৮৮৯ সালে স্থাপিত হয়।

প্রতিষ্ঠাতা: ১৮৮৪ সালের ২৭ জুন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রমেশচন্দ্র দত্তের অনুরোধে মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত তাঁর পিতা কলকাতার জজ ব্রজমোহন দত্তের নামে ব্রজমোহন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৬৫ সালে কলেজটির জাতীয়করণ করা হয় ও বর্তমানে কলেজটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত।

কলেজটিতে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ২২টি বিষয়ে ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ২১টি বিষয়ে পাঠদান করে থাকে,সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১০ই জানুয়ারি প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য এর নেতৃত্বে প্রফেসর নাসিম হায়দার এর সহযোগীতায় পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা বিভাগীয় প্রধান।

কলেজে ছাত্রদের জন্য ৩টি (মুসলিম হোস্টেল, মহাত্মা অশ্বিনীকুমার হোস্টেল, কবি জীবনানন্দ দাশ হিন্দু হোস্টেল) এবং মেয়েদের জন্য চারতলা ভবনের ১টি হোস্টেল (বনমালী গাঙ্গুলী মহিলা হোস্টেল) রয়েছে। কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে মোট বইয়ের সংখ্যা ৪০,০০০। এখানে ১টি বাণিজ্য ভবন, ২টি কলা ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, ৪টি বিজ্ঞান ভবন ও ৩টি খেলার মাঠ রয়েছে। এছাড়া দুই প্রান্তে দুটি দিঘি কলেজের সৌন্দর্যকে করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর

বি এম কলেজের প্রাথমিক অগ্রযাত্রা

১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে সরকার কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য এক লক্ষ টাকা ও মাসিক ১২০০০ টাকা অনুদান মঞ্জুর করে। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের জুন হতে বিএম কলেজ সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজে পরিণত হয়। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ হতে কলেজ উন্নতির পথে চলতে থাকে। ১৯১৭ সালে ৫০ বিঘা জমির উপরে কলেজটি তার বর্তমান ক্যাম্পসে স্থানান্তরিত হয়। ১৯১৮ সালে সরকারি অর্থে ব্রজমোহন কলেজ ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়। উদ্বোধন করেন জে আর বøাকউড এলএলবি আইসিএফ। ডিজাইন করেন এইচ অব্রিএন সি এন্ড এমএমই। ঠিকাদার ছিল বিএন বসু, কলকাতা। উল্লেখ্য, পরে এই ভবনের পুনঃনির্মাণ হয় ১৯৯১ সালে।

কলেজের সভাপতি ফাদার স্ট্রং ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ হতে ইস্তফা দেন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে কলেজে ইংরেজী ও দর্শনে, ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত ও গণিতে, ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে রসায়ন শাস্ত্র ও পরে অর্থনীতিতে অনার্স খোল হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বিএম কলেজ রেকর্ড সৃষ্টি করে বাংলার অক্সফোর্ড বলে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের কৃতী ছাত্র দেবপ্রসাদ ঘোষের ভগ্নি শীমতী শান্তিসুধা ঘোষ গণিত শাস্ত্রে অনার্স পরীক্ষয় প্রথম স্থান অধিকার করেন ও ইশান স্কলারশীপ লাভ করেন । কলেজের ছাত্র সংখ্যা দ্রæত বৃদ্ধি পায়। ফরিদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খুলনা জেলার অধিকাংশ ছাত্র বিএম কলেজে পড়াশোনা করত। ১৯২১-২২ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের ছাত্র সংখ্যা ছিল ৬৪৫ জন, ১৯২৫-২৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৩৪২ এবং ১৯৩০-৩১ খ্রিষ্টাব্দে ছিল ১০৩৬ জন। চল্লিশের দশকে কলেজের ছাত্র সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই হাজার। ১৯২২ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ছিল বি এম কলেজের স্বর্ণযুগ। অধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্র নাথ চট্টোপাধ্যায়, রজনীকান্ত গুহ, বাবু সতীশচন্দ্রসহ সে সময়ের এ কলেজের শিক্ষকগণের পাÐিত্য এবং পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ঈর্ষণীয় ফলাফল এ শিক্ষকগণের জন্য প্রচুর সুনাম বয়ে আনে। এই অধ্যাপকদের প্রজ্ঞা ও শিক্ষা পদ্ধতির উন্নত মান লক্ষ্য করে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯২২ সালে ইংরেজি ও দর্শনে; ১৯২৫ সালে সংস্কৃত ও গণিতে; ১৯২৮ সালে রসায়নে; ১৯৪০ সালে অর্থনীতিতে; এবং ১৯৪৫ সালে ইতিহাসে অনার্স কোর্স চালু করে। তখন এ কলেজে শিক্ষার মান এতটা উন্নত ছিল যে, অনেকে একে বাংলার অক্সফোর্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলার ছোট লাট স্যার উডবর্ন সরকারি শিক্ষা বিবরণীতে লিখেছিলেন, 'This mofussil College promises some day to challenge the supremacy of the Metropolitan (Presidency) College'. বিংশ শতকের প্রথম বা দ্বিতীয় দশকে কোনো এক সময় বি এম কলেজের সাফল্যের দিকে তাকিয়ে বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিটসন বেল লিখেছিলেন, " Barisal may be said to be the Oxford of East Bengal."

পুনরায় জেগে ওঠা

১৯৬৪ সালে ব্রজমোহন কলেজে পুনরায় অর্থনীতিতে অনার্স কোর্স খোলা হয়। ১৯৬৫ সালের ১ জুলাই কলেজটি প্রাদেশিকীকরণ অর্থাৎ সরকারিকরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১৮ আগস্ট বিএম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে (১৯৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষে) সরকারি ব্রজমোহন কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা এই সাতটি বিষয়ে অনার্স এবং বাংলা, অর্থনীতি, ইতিহাস ও রসায়ন এই চারটি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স খোলা হয়। ১৯৭৫ সালে ইতিহাসে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। ১৯৮৯ সালে ইংরেজি ও মৃত্তিকাবিজ্ঞানে মাস্ট্রার্স ১ম পর্ব এবং ১৯০০ সালে ইংরেজি, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গণিত, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান-এই সাতটি বিষয়ে অনার্স আর গণিতের মাস্টার্স ১ম পর্ব এবং ১৯৯০ সালে ইংরেজি, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গণিত, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান-এই সাতটি বিষয়ে অনার্স আর গণিতের মাস্টার্স ১ম পর্ব পাঠ্যক্রম চালু করা হয। ১৯৮৯ সালের ১৪ জুন ব্রজমোহন কলেজের শতবর্ষ পূর্ণ হয় এবং ১৯৯২ সালের ২৫, ২৬ ও ২৭ অক্টোবর কলেজের শতবর্ষপূর্তি উৎসব উদযাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে সমাজকল্যাণে এবং ১৯৯৪ সালে ইসলামি শিক্ষা, সংস্কৃতি, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান প্রাণিবিজ্ঞান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাঠ্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৯৫ সালে সমাজকল্যাণে এবং দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষে ইসলামি শিক্ষায় মাস্টার্স কোর্সে খোলা হয়।

শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব

অনার্স কোর্স চালু করার পর প্রায় প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী কোলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষয় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করতে থাকে। ১৯২৮ সালে ব্রজমোহন কলেজের অন্যতম কৃতী ছাত্র দেবপ্রসাদ ঘোষের ভগ্নি শ্রীমতী শান্তি সুধা ঘোষ (১৯০৭-১৯৯১) গণিত অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণেিত প্রথম স্থান অধিকার করে ‘ঈশান বৃত্তি’ লাভ করেন এবং ১৯৭৫ সালে রসায়ন অনার্স পরীক্ষায় দিলীপ কুমার চক্রবর্তী প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে ‘কালীনারায়ণ বৃত্তি’ লাভ করেন। সরকারি ব্রজমোহন কলেজে বর্তমানে ২০টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। তার মধ্যে ১৮টিতে অনার্স এবং ১৯টিতে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। ১৯৯৯ সালে ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী বিলুপ্ত করা হয়। ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন বিভাগে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণীতে ৭২৫টি আসন বৃদ্ধি করে ৪০২৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলন, খেলাফত ও অহিংস অসহযোগ আন্দোলন, বাংলাদেশের মুকিক্তযুদ্ধসহ এ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অগণিত ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং আইনজ্ঞ এ কলেজের ছাত্র ছিলেন। বিএম কলেজ শুধু বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠই নয়, কলেজটি এ অঞ্চলের মানুষের অহংকার।

বাংলাদেশের সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৪-SUST Admission Circular 2023-24
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ফাজিল পরীক্ষার সময়সূচী ২০২৪
কামিল পরীক্ষার রুটিন ২০২৪-Kamil Exam Routine 2024
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাজিল অনার্স ভর্তি বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কোর্স
বিশ্ব বিখ্যাত ২০ জন-বিজ্ঞানী
স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসা ও ব্যাংক ছুটির তালিকা ২০২৪ - school, college, madrasa and bank Holiday List 2024
কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি