ডায়াবেটিসের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ-Homeopathic treatment and medicine for diabetes
ডায়াবিটিস একটি জটিল অসুখ। এই রোগে আক্রান্ত হলে সারাজীবন কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। আমাদের শরীরে ইনস্যুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারণে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে। এই রোগে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায়।সুস্থ লোকের রক্তে প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৫.৬ মিলি মোলের কম এবং খাবার দুই ঘণ্টা পরে ৭.৮ মিলি মোলের কম থাকে। অভুক্ত অবস্থায় রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ৭.১ মিলি মোলের বেশি হলে অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১.১ মিলি মোলের বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে গণ্য করা হয়।
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়।কিন্তু যা সঠিকভাবে কাজ করে না অর্থাৎ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে কমাতে পারে না।কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিস দেখা দেয়, সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিস।
ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তন্ত্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে। মস্তিষ্কস্থূলতা দেখা দেয়, ওজন বাড়ে।শরীরে চর্বি জমে, রক্তচাপ বাড়ে, ক্ষুধা ও তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়।
আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে হোমিও ওষুধ
হোমিওপ্যাথিতে (Homeopathy) রোগীকে পরীক্ষা করে এবং রোগীর লক্ষণ বুঝে কিছু ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। হোমিওপ্যাথিতে ডায়াবিটিসের সফল চিকিৎসা সম্ভব। খুব ভালো কিছু ওষুধ রয়েছে। তবে সব ওষুধ সবার জন্য নয়। সকলের জন্য আলাদা আলাদা করে নির্বাচন করা হয়। এক্ষেত্রে অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে একজন চিকিৎসক ওষুধ (Homeopathic Medicine) বেছে নেন।
এই ওষুধ ব্যবহার হয়-
ইনসুলিন (Insulin) 3x-30x:
ডায়াবেটিস রোগে এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় বেশি ব্যবহৃত হয়। তেমনি হোমিওপ্যাথিতে ও ডায়াবেটিসের শ্রেষ্ঠ ঔষধ। ইহা ডায়াবেটিস, কার্ব্বাংকল, দুষ্টব্রণ, বৃদ্ধদের গ্যাংগ্রিন ক্ষত, স্নায়ুবিক দৌর্বল্য প্রভৃতি ক্ষেত্রেও সাফল্যের সাথে ব্যবহার করা হয়। তবে সাবধান! অধিক মাত্রায় ঘন ঘন ইনসুলিন প্রয়োগে রোগীর দুর্বলতা, অবসাদ, কম্পন, প্রচুর ঘাম ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। ডাঃ উইলিয়াম বোরিক তাহার প্রচুর প্রশংসা করেছেন।
সেবন বিধি:
3x শক্তি একমাত্রা করে দিনে ৩বার কয়েকদিন সেবনের পর, 30x শক্তি একমাত্রা করে দিনে ২বার ব্যবহারে রোগী সুস্থ হয়। এই ঔষধ নিয়মিত প্রয়োগ করে অনেক ডায়াবেটিস রোগীকে প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে।
ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম (Uranium Nitricum) 2x-6x:
ডায়াবেটিস রোগীর স্বভাব বড়ই খিটখিটে। অধিক পিপাসা, ক্ষুধা অত্যন্ত বেশি। রোগী বেশ খায় দায় অথচ দিন দিন স্বাস্থ্য শুকিয়ে যায়। মূত্রদ্বারে জ্বালানুভব করে, প্রস্রাবের বেগ ধারণ করতে পারে না (এসিড ল্যাকটিক, সিজিয়াম)। দিন অপেক্ষা রাত্রে অনেক বার অধিক পরিমাণে প্রস্রাব করে। অজীর্ণতার জন্য ডায়াবেটিস রোগ হলে ইহা ভাল কাজ করে।
সেবনবিধি:
ডাঃ লোভার বলেন,“এই ঔষধ 2x শক্তি চূর্ণ ২/৩ গ্রেণ মাত্রায় দিনে ৩বার সেবনে রোগীর প্রস্রাবে চিনির ভাগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, পিপাসা, বারংবার ক্ষুধা, নিদ্রাহীনতা প্রভৃতি উপসর্গ দূর হয়।”
এসেটিক এসিড (Acitic Acid) 30x:
ডায়াবেটিস ও শোথ রোগীর অত্যন্ত পিপাসা, অত্যন্ত দুর্বলতা এবং জল পানের পর অনেক বার প্রস্রাব হলে ইহাই একমাত্র ঔষধ। তাছাড়া, রোগীর মুখমন্ডল শুষ্ক, শীর্ণ, চোপসানো ও ফ্যাকাসে, গাত্র চর্ম খসখসে কখনও ঘর্মাক্ত, চোখের ভাব পাগলের ন্যায়, ঠান্ডায় রোগের উপশম, পুনঃ পুনঃ মূর্চ্ছা, শ্বাসকষ্ট, বমি বা বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণের ইহা উপযোগী।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে কী করবেন
সেবনবিধি:
একমাত্রা করে দিনে ২/৩ বার কয়েক দিন সেবনীয়। প্রয়োজনে আরো উচ্চশক্তি ব্যবহার্য।
রাস এ্যারোমেটিকা ((Rhus Arometica) ø:
ইহা ডায়াবেটিস রোগের একটি উত্তম ঔষধ। রোগীর ভীষণ পিপাসা, প্রস্রাবের বেগ ধারণে অক্ষম, সর্বদাই অসাড়ে প্রস্রাব নির্গমন, প্রস্রাবের আপেক্ষিক গুরুত্ব কমে যায়, মূত্রধারায় মূত্রপিন্ড হতে বা জরায়ু হতে রক্তস্রাব, রোগী ক্রমশঃ শুকিয়ে যেতে থাকে। পরিবর্তনশীল রুচি ও ক্ষুধা ইত্যাদিতে উপযোগী।
সেবনবিধি:
১০-১৫ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ দিনে ৩বার কয়েকমাত্রা সেবনের পর, একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
সিজিয়াম জ্যাম্বোলিনাম (Syzygium Jambolium) ø:
ইহা ডায়াবেটিস রোগীর অত্যন্ত পিপাসাসহ পুনঃ পুনঃ প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাবের পরিমাণ অধিক হওয়া লক্ষণই ইহার বিশেষত্ব। ইহা ব্যতীত প্রস্রাবের আপেক্ষিক গুরুত্ব বেশী। শীর্ণতা, দুর্বলতা, অম্ল অর্জীণতা, শরীরের উর্দ্ধাংশে ক্ষত এবং চুলকানিসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাল লাল উদ্ভেদ ইত্যাদি ইত্যাদি লক্ষণে ইহা বিশেষ উপযোগী। ডাঃ বোরিক বলেছেন,“ডায়াবেটিস রোগে ইহা একটি শক্তিশালী ঔষধ। অন্য কোন ঔষধে এমন সুষ্পষ্ট ভাবে প্রস্রাব হইতে শর্করা কমাইতে এবং প্রস্রাব শর্করা শূণ্য করিতে পারে না।”
সেবনবিধি:
১০-১৫ ফোঁটা মাত্রায় ঠান্ডা জলসহ দিনে ২/৩ বার, তৎসহ ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম ২xশক্তি ফোঁটা মাত্রায় পর্যায়ক্রমে কিছুদিন সেবনে দ্রুত উপকার পাবেন।
হেলোনিয়াস (Helonius) 3x- 6x:
ইহা বিলাসী ও শীর্ণকায় রমনীদের ঔষধ। ডায়াবেটিস রোগিনীদের প্রচুর পরিমাণে প্রস্রাব, প্রস্রাব জলের মত স্বচ্ছ, প্রস্রাবে শর্করা ও ফসফেট বেশী থাকে। ঠোঁট দু’টো শুকিয়ে আঠাল হয়, মূত্র গ্রন্থিতে জ্বালা অনুভব, ঘনঘন ঋতুস্রাব, পরিমাণে অধিক শ্বেতপ্রদর, অত্যন্ত অবসন্নতা, রোগী কাজে ব্যস্ত থাকলে উপশম বোধ করে ইত্যাদি লক্ষণ সহ তরুণ ও পুরাতন ডায়াবেটিস রোগে ইহা উপযোগী।
সেবনবিধি:
একমাত্রা করে দিনে ৩/৪ বার কিছু দিন সেবনীয়। পুরাতন রোগে ক্রমশঃ আরো উচ্চশক্তি ব্যবহার্য।
আর্সেনিক (Arsenicum Alb/Bro) ৬ বা ৩০:
অসাড়ে জ্বালাকর প্রস্রাব। শরীরে শীর্ণতা, শারীরিক দুর্বলতা, অত্যন্ত পিপাসা এবং বারে বারে অল্প অল্প জল পান। অতিসার, অস্থিরতা এবং মৃত্যুভয়, গাত্রদাহ ইত্যাদি। অনেকে আর্সেনিক ব্রোম ৩য় শক্তি ব্যবহারে ফল পাইয়াছেন।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
ফসফরিক এসিড (Phosphoric Acid) ১ বা ৩:
ডায়াবেটিস রোগের ইহা একটি প্রধান ঔষধ। পুনঃ পুনঃ প্রচুর পরিমাণে প্রস্রাব। প্রস্রাবের অত্যন্ত বেগ, মুখমন্ডল ফেকাসে, অত্যন্ত পিপাসা। কোমরে এবং মূত্রগ্রন্থি প্রদেশে বেদনা। শরীরের শীর্ণতা এবং দুর্বলতা, রোগীর সকল বিষয়ই তাচ্ছিল্যভাব। ইহা রোগের প্রথম অবস্থায় ব্যবহারে মূত্র কমিয়ে রোগ উপশম হয়। স্নায়ুবিক দুর্বলতা জনিত রোগে উৎকৃষ্ট ঔষধ।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ল্যাকটিক এসিড (Lacticum Acid) ৬ বা ১২:
পাকাশয় ও যকৃতের দোষ জনিত ডায়াবেটিসের প্রধান ঔষধ। সহজে প্রচুর পরিমাণে মূত্র, পিপাসা, গা বমি বমি, দুর্বলতা, অতিশয় ক্ষুধা এবং কোষ্ঠবদ্ধতা, গাত্রচর্ম শুস্ক।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
কডিনাম (Codeinum) ৩:
ইহা ডায়াবেটিসের অন্যতম একটি ঔষধ। প্রচুর মূত্রত্যাগ সহ মানসিক বিকৃতি, দুর্বলতা ও অবসন্নতা, অস্থিরতা, সর্বাঙ্গে চুলকানি, হাত পা কাপাঁ ইত্যাদি। সালফিউরিক এসিডেও এইরুপ লক্ষণ পাওয়া যায়।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
আর্জেন্ট মেটালিকাম (Argentum Metalicum) ৩ বা ৬:
মহাত্মা হ্যানিম্যান এই ঔষধের প্রশংসা করেন। শর্করা বিহীন ডায়াবেটিসে ইহা উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ঘোলাটে এবং মিষ্ট গন্ধযুক্ত মূত্র। প্রস্রাব বারংবার ও প্রচুর পরিমাণে হয়। পায়ের পাতা ফুলা, শরীর জীর্ণশীর্ণ অবস্থা।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
প্লাম্বাম মেট (Plumbum Metalicum) ৩০:
ডায়াবেটিস রোগের ইহাও একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। মূত্রথলীর পক্ষাঘাত, মূত্রথলীর প্রস্রাব সম্পূর্ণ বাহির করিয়া দিতে পারে না। প্রস্রাব অল্প, কখনও প্রস্রাব ফোঁটা ফোঁটা নির্গত হয়, প্রস্রাবে এলবুমিন থাকে, আপেক্ষিক গুরুত্ব কম। কিডনীর প্রদাহ, কিডনীর হইতে রক্তস্রাব, তৎসহ তলপেটে ভীষণ বেদনা, জরায়ুতে তীব্র বেদনা। পুরাতন এলবুমিনুরিয়া।
সেবনবিধি:
৮-১০ ফোঁটা ঠান্ডা জলসহ একই মাত্রায় দিনে ২বার কিছু দিন সেবনীয়।
আরো পড়ুন: ডায়াবেটিসের কারণে চোখে যেসব সমস্যা হয়
ডায়াবেটিসের বায়োকেমিক চিকিৎসা
নেট্রাম সালফ/ফস (Netrrum Sulp/Phos) ১২-২০০:
ইহা ডায়াবেটিস রোগের প্রধান ঔষধ। রোগীর প্রস্রাবে অধিক পিত্ত নিঃসৃত হয়, প্রস্রাবের তলানীতে প্রচুর পরিমাণে লিথিক এসিড, তলানি ইটের গুড়ার মত লাল বর্ণ (লাইকো), পাত্রের চার পাশে ইহার দাগ পড়ে। রোগীর অম্ল অজীর্ণের লক্ষণ থাকলে একই শক্তির নেট্রাম ফস একত্রে বা পর্যাক্রমে ব্যবহারে খুবই উপকারী।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে। ক্রমশঃ উভয় প্রকার ঔষধের উচ্চশক্তি ব্যবহারে অব্যর্থ ফলপ্রদ।
নেট্রাম মিউর (Netrum Muriaticum) ৬ বা ১২:
শর্করাবিহীন ডায়াবেটিস রোগের প্রধান ঔষধ। বারবার প্রচুর মূত্রত্যাগ, রক্তহীনতা, শীর্ণতা, শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা, হাঁচিতে, কাশিতে অসাড়ে মূত্র বাহির হয়, গায়ে এক প্রকার উদ্ভেদ বাহির হয় ও উহাতে চুলকায়, বুক ধড়ফড় করে।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে। ক্রমশঃ উভয় প্রকার ঔষধের উচ্চশক্তি ব্যবহারে অব্যর্থ ফলপ্রদ।
কেলি মিউর (Kali Muriaticum) ৬-৩০:
কেলি মিউর ডায়াবেটিসের অন্যতম ঔষধ। ইহা পাকাশয়ের ও যকৃতের পীড়ায়র সহিত প্রচুর পরিমাণে মূত্রত্যাগ, মূত্রথলীতে বেদনা, চুলকানি ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপযোগী। কিডনীর প্রদাহ যুক্ত পীড়ায়, প্রস্রাব ঘোলাটে হয় এবং ইউরিক এসিডের তলানি পড়ে।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে। ক্রমশঃ উভয় প্রকার ঔষধের উচ্চশক্তি ব্যবহারে অব্যর্থ ফলপ্রদ।
ক্যালকেরিয়া ফস (Calcarea Phos) ৬-৩০:
ক্যালকেরিয়া ফস ডায়াবেটিসের অন্যতম একটি ঔষধ। ইহা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবশতা, খিঁচে ধরা ভাব, হাত পা খিঁচে ধরে। মূত্রের পরিমাণ বেশি এবং ঘন ঘন প্রস্রাব ও দুর্বলতা। অস্থি ও সন্ধিতে বেদনা তৎসহ ঠান্ডা ও অবশভাব। হাত পায়ে শীতলতার লক্ষণ এবং অবশতা লক্ষণে ইহা উপযোগী।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে। ক্রমশঃ উভয় প্রকার ঔষধের উচ্চশক্তি ব্যবহারে অব্যর্থ ফলপ্রদ।
ফেরাম ফস (Ferrum Phos) ৬-৩০:
ফেরাম ফস ডায়াবেটিসে একটি মূল্যবান ঔষধ। হিমোগ্লোবিনের বৈকল্য লক্ষণে ইহা উপযোগী। দেহ হতে যে কোন প্রকার অধিক রক্তস্রাবের লক্ষণেও ইহার উপযোগীতা রয়েছে। এছাড়াও বার বার প্রস্রাব এবং অধিক পরিমাণে মূত্রত্যাগ, মূত্রথলির গ্রীবায় বেদনা, দুর্বলতা, যে কোন বৈকল্য ইহা উপযোগী।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে। ক্রমশঃ উভয় প্রকার ঔষধের উচ্চশক্তি ব্যবহারে অব্যর্থ ফলপ্রদ।
বায়ো প্লাজিন (B.P-7):
পুরুষ ও মহিলাদের ডায়াবেটিস রোগের যে কোন অবস্থায় ইহা মহা উপকারী।
সেবনবিধি:
২/৪টি ট্যাবলেট (বয়স অনুসারে) মাত্রায় গরম জল সহ দৈনিক ২/৩ বার কয়েক দিন সেবন করিতে হইবে।
এগুলি প্রয়োজন মতো লক্ষণ সদৃশ্য মতে চিকিৎসক রোগীর জন্য নির্ধারণ করে দেন। তবে কোনও ওষুধই ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে খাওয়া উচিত নয়। কারণ ডায়াবেটিক রোগীদের সকলকেই একই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এমনটা নয়। ডাক্তাররা রোগীর লক্ষণ বুঝে যে ওষুধ দেবেন সেই নির্দিষ্ট ওষুধটি নিয়মিত খেতে হবে।
আরো পড়ুন: গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার নিয়ম
লাইফস্টাইল পরির্বতন করুন
* অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ডায়াবেটিস হওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ।
* ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
* খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে হবে।
* খাবার চিবিয়ে খান ও একবারে পেট ভরে না খেয়ে বারে বারে খান।
* সঙ্গে ডায়াবেটিসের ওষুধ সময়মতো খেতেই হবে। মানসিক চাপ দূরে রাখুন।
* এছাড়া ব্যায়াম (Exercise) হল মাস্ট। দিনে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ঘাম ঝরিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। তবেই আপনি ভালো থাকতে পারবেন। এটা মাথায় রাখা হল জরুরি।
* কখনো বেশী আবার কখনো কম এমন না করে প্রতিবেলায় নিয়ম করে খেতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ে বেশী দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে বরং নিয়ম মেনে চললে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করা সম্ভব।