এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম
Rules for eating MM kit
আমাদের মধ্যে অনেকে বিয়ের পর অল্প দিনের মধ্যেই কোন সন্তান নিতে আগ্রহী না। যারা অল্পদিনের মধ্যে বাচ্চা নিতে আগ্রহী না তারা বা সেসকল দম্পতি ফেমিকন পিল গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু অসাবধানতা বসত কেউ গর্ভবতী বা প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে মাসিক নিয়মিত করনের জন্য (সাধারণভাবে গর্ভপাতের জন্য) এম এম কিট গ্রহণ করা হয়।
এম এম কিট কি? (What is MM Kit?)
অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ নষ্ট করে মেয়েদের বা মহিলাদের মাসিক নিয়মিত করার জন্য গর্ভধারণের ৬৩ দিন বা ৯ সপ্তাহের মধ্যে এম এম কিট গ্রহণ করা হয়।
এম এম কিট ঔষধ এর কাজ (The work of MM Kit medicine)
এমএন কিট ওষুধটি গর্ভধারণের ৬৩ অর্থাৎ ৯ সপ্তাহের মধ্যে মাসিক নিয়মিতকরণের জন্য ব্যবহার করা হয়। কোন রকম অস্ত্র প্রচার ছাড়াই এই ওষুধের মাধ্যমে মাসিক নিয়মিতকরণ করা যায়। ৬৩ দিনের বেশি গর্ভধারণ হলে এমএম কিট ব্যবহার করার নির্দেশনা নেই। যদি কোন কারণে ৯ সপ্তাহের বেশি পার হয়ে যায় তাহলে ডাক্তারে পরামর্শ নিতে হবে।
এম এম কিট এর দাম (mm kit price)
এমএম কিটে রয়েছে ১টি মিফেপ্রিস্টোন ২০০ মি.গ্রা. টেবলেট এবং ৪টি মিসােপ্রােস্টল ২০০ মাইক্রো গ্রাম টেবলেট।মোট ৫ টেবলেট কিট টি বর্তমান মূল্য ৩০০ টাকা।
এম এম কিট টেবলেট উপাদান (MM Kit Tablet Component)
এম.এম কিট ওষুধটিতে ২ধরনের উপাদানে তৈরি করা হয়েছে, প্রথম একটি টেবলেটে রয়েছে মিফেপ্রিস্টোন ২০০ মি.গ্রা. এবং দ্বিতীয় ৪টি টেবলেটে রয়েছে এর মিসােপ্রােস্টল ২০০ মাইক্রো গ্রাম। ওষুধটি এমএম কিট (mm kit) নামে বাজারজাত করেছে জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।এছাড়া এই ঔষধ বিভিন্ন নামে বাজারজাত করেছে দেশিও আরো অনেক গুলো কোম্পানি।
এম এম কিট খাওয়ার নিয়ম (Rules for eating MM kit)
mm kit টেবলেট দুই ধাপে খাওয়াতে হয়। প্রথমে ধাপে মিফেপ্রিস্টোন ২০০মি.গ্রাম অর্থাৎ বড় যে টেবলেটটি ডাক্তারের সামনে মুখে খেতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে মিসােপ্রােস্টল ২০০ মাইক্রো গ্রাম অর্থাৎ ছোট চারটি টেবলেট জিহবা নিচে অন্তত আধা ঘণ্টা রাখতে হবে।কোন রকম থুথু ফেলা যাবে না। আধা ঘণ্টার মধ্যে টেবলেট চারটি শেষ না হলে বাকি অংশ পানি দিয়ে খেয়ে নিতে হবে।
এম এম কিট খাওয়ার কত দিন পর সহবাস করা যায়?
এমএম কিট-(MM Kit) খাওয়ার পর মাসিক নিয়মিত হলে। সুস্থ হওয়ার ২দিন পর থেকে সহবাস করা যায়। কোন অবস্থাতে ব্লেডিং অবস্থায় সহবাস করা যাবে না।তবে সহবাস করার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
এমএম কিট টেবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই কিটের ভয়াবহ পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।এই কিট খেলে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে।এছাড়া ডায়রিয়া,পেটে ব্যাথা,বমি বমি ভাব এবং মাথাব্যাথা ইত্যাদি হতে পারে।এই কিট অনেকসময় কাজ নাও করতে পারে এবং অসম্পূর্ণ গর্ভপাত হতে পারে।এই জন্য অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ করে তার অধীনে এই কিট খেতে হবে। এছাড়া আল্ট্রাসনোফি করে ভ্রুণের সঠিক অবস্থা জানা প্রয়োজন। না হলে এই কিট ঠিকমত কাজ নাও করতে পারে। বাড়িতে একা একা এই কিট না খাওয়ার পরামর্শ থাকবে।
মিফেপ্রিস্টোন গ্রহণের ১০ থেকে ১৪ দিন পর ডাক্তার যেতে হবে। আন্ট্রাসনােগ্রাফী করে দেখতে হবে গর্ভাবস্থার টিস্য রয়ে গিয়েছে কিনা। যদি কোন কারণে গর্ভবতী রয়ে যান তাদের ক্ষেত্রে ভ্রন বিকলাঙ্গ হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাই আন্ট্রাসনােগ্রাফী করার অন্তত জরুরি।
কিছু কথা
আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, ভ্রুণের বয়স যখন হয় তেতাল্লিশ দিনের কম, তখন ভ্রুণ একটি রক্তপিন্ড হিসেবে মায়ের গর্ভে অবস্থান করে। এ সময় পর্যন্ত তার কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রকাশ পায় না। এ অবস্থায় ভ্রুনটিকে মানুষের শরীরের একটা অঙ্গ হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। আর মানুষের প্রতিটি অংশের মালিক স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। অতএব শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো এই অঙ্গটিও নষ্ট করা নাজায়েজ।
ভ্রুনের বয়স যখন ১২০ বা চার মাস হয়ে যায়, তখন আল্লাহ তায়ালা তার মধ্যে রুহ দান করেন। আর রুহ আসার পর বাচ্চা নষ্ট করা কোনো মানুষকে হত্যা করার শামিল। তাই এ সময় ভ্রুণহত্যা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। (ফতহুল আলিয়্যিল মালিক খ. ১/৩৯৯)।
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের সন্তানকে দরিদ্রের ভয়ে হত্যা করো না। আমরা তোমাকে এবং তোমার সন্তানকে দেখেশুনে রাখি। তাই তাদের হত্যা করা সত্যিকার অর্থেই একটি মহাপাপ। (সূরা ইসরা : ৩২)।
গর্ভপাত যদি ইচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে, কোনো ধরনের কারণ যদি এর মধ্যে না আসে তাহলে এটি হারাম। এটি যে অবস্থা বা যত দিনেই হোক না কেন। কারণ যেহেতু একটি বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরে সেটাকে ধ্বংস করা আর সেটা যদি মানবভ্রূণ হয়ে থাকে তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটি হালাল নয়, যেহেতু রাসুল (স.) বলেছেন, ‘জা-লিকাল ওয়াদুল খাফি’ অর্থাৎ এটি গোপন হত্যা। এটি গোপনীয়ভাবেই ভ্রূণ হত্যা যেটি সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (স.) এ বিষয়ে তাহদিদ করেছেন, কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন এবং সতর্কবাণী দিয়েছেন। তাই এটি হারাম তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কোরআনে কারিমের মধ্যে আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা বলেছেন, কেয়ামতের দিন তাদের এই প্রশ্ন করা হবে যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যা করেছে, ইয়া আয়্যিদামবিন কুতিলাত। ওয়া ইজাল মায়ুদু তুছইলাত? (অর্থাৎ কোন অপরাধে এদেরকে হত্যা করা হয়েছে? ) এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে হবে।