চোখের পাতা কেঁপে ওঠা সেসব রোগের লক্ষণ
কাজের ফাঁকে মাঝেমাঝেই চোখের পাতা কেঁপে ওঠে অনেকেরই। কাজের মাঝে এই চোখের পাতার কাঁপুনির জেরে অপ্রস্তুত হতে হয়। এই সমস্যা কয়েক মুহূর্তের জন্য দেখা দিতে পারে। আবার দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে। শরীরের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর না হলেও জেনে রাখা প্রয়োজন কেন এমনটি হয়।
এই ধরনের সমস্যার মূল কারণ তিনটি। শারীরিক, মানসিক এবং স্নায়বিক। এই তিনটির যে কোনও একটি কারণে চোখের পাতা কাঁপতে পারে। তবে চিকিৎসকদের মতে, চোখের পাতা কাঁপার মূল কারণ হল ক্লান্তি। এ ছাড়াও, মানসিক উদ্বেগ, ঘুম কম হওয়া, ঘন ঘন ধূমপান, অতিরিক্ত কফি খাওয়া, অনেক ক্ষণ কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণেও চোখের পাতা কাঁপতে পারে।
চোখের পাতা লাফায় কেন?
চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, সাধারণত কঠিন মানসিক চাপের (Stress) মধ্য দিয়ে গেলে বা কম ঘুম হলে শরীরে বিভিন্ন উপায়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। চোখের পাতা লাফানো তারই লক্ষণ। আবার, চোখে কোনও অ্যালার্জি, ধূমপান-মদ্যপানে আসক্তির ফলেও এটা হতে পারে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে 'মায়োকেমিয়া' (Myokemia) বলা হয়। চিকিৎসকদের মতে, দিনে দু'বার চোখ নাচা স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্রারিক্ত হলে চিকিৎসা করানো দরকার।
কী কী কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠে?
>> ক্লান্তি
>> মানসিক চাপ
>> ক্যাফেইন
>> অ্যালকোহল গ্রহণ
>> ধূমপান
>> চোখের সংবেদনশীলতা ও
>> কিছু ওষুধ, যেগুলো সাইকোসিস ও মৃগী রোগের চিকিৎসা করে।
মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধির কারণেও চোখের পাতা লাফাতে পারে। যেমন-
>> পারকিনসন রোগ
>> মস্তিষ্কের ক্ষত
>> একাধিক স্ক্লেরোসিস
>> পক্ষাঘাত
>> ট্যুরেটের সিন্ড্রোম ও
>> ডাইস্টোনিয়া।
কারও কারও ক্ষেত্রে এ সমস্যা সারাদিন, সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। এমন ক্ষেত্রে তারা চোখের সংবেদনশীলতায় ভোগেন।
চোখের পাতা কাঁপার সমস্যা থেকে যেভাবে মুক্তি পাবেন—
১. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
২. মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে।
৩. অতিরিক্ত চা, কফি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. ঘন ঘন ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৫. শরীর এবং মনকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন।
চিকিৎসা
এটি যদি শরীরে কোনো সমস্যার কারণে হয়ে থাকে, সমস্যা চিহ্নিতকরণ করে তার ট্রিটমেন্ট করতে হবে। যেমন ড্রাই আই হলে চোখে কৃত্রিম অশ্রু জল দিয়ে চোখটাকে ভিজিয়ে রাখতে হবে। কোনো কারণ ছাড়াই বারবার ফিরে এলে এবং চোখে আশপাশে কোনো সমস্যা তৈরি করলে চিকিৎসকরা যে ট্রিটমেন্ট সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে তা হলো- Botox ইনজেকশন। যে অংশে এমন কাঁপুনি বারবার হয়, সেখানে বটুলিনাম টক্সিন নামের ইনজেকশন দিয়ে তা থামানো হয়।
এর বাইরে তাৎক্ষণিক স্বল্প সময়ের জন্য সমস্যা থেকে বের হয়ে আসছে চিকিৎসকরা ক্লোনাজিপাম জাতীয় এন্টি এপিলেপটিক মেডিসিন অথবা লোরাজিপাম জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন। ইনজেকশন, মেডিসিন কাজ না হলে, শেষ অপশন হিসেবে myectomy অপারেশন করে সমস্যাটি দূর করা যায়।