হার্নিয়া কি, কারণ, লক্ষণ, প্রকার এবং চিকিৎসা - Hernia - Causes, Symptoms, Types and Treatment
মানুষের শরীরের পিঠের দিকটা যতটা সুরক্ষিত, পেটের দিকটা ততটা নয়। এখানে প্রাকৃতিক কিছু ছিদ্র বা দুর্বলতা আছে। কোনো কারণে পেটে বেশি চাপ পড়লে সেগুলো দিয়ে ভেতরের অনেক কিছু বের হয়ে আসতে পারে। এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্বল কেন্দ্র হলো নাভি কিংবা ছেলেদের কুঁচকি। জন্মের আগে নাভির মাধ্যমে মায়ের শরীরের সঙ্গে গর্ভস্থ শিশুর যোগাযোগ থাকে। কিন্তু জন্মের পরও ছিদ্রটি রয়ে যায়। আর ছেলেদের অণ্ডকোষ জন্মের আগে পেটের ভেতর থাকে পরে কুঁচকি দিয়ে অণ্ডথলিতে নেমে আসে। এখানেও তাই একটা পথ রয়ে যায়। এ দুটা ছিদ্রযুক্ত জায়গায় সে জন্য হার্নিয়া বেশি হয়।
হার্নিয়া রোগ কি? What is Hernia
পেটের পিছনের দিকে থাকে হাড়, সামনে রয়েছে পেশি। তার ভিতরে থাকে অন্ত্র, নালি, চর্বি ইত্যাদি। কিন্তু পেটের মধ্যে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে এই ভিতরের পদার্থগুলি বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইবে। একেই হার্নিয়া বলে।
হার্নিয়া লাতিন শব্দ, যার অর্থ ছিদ্র। ছিদ্র নাভিতে হলে তাকে বলে আমবিলিক্যাল হার্নিয়া। আর কুঁচকিতে হলে বলা হয় ইংগুইনাল হার্নিয়া।
কেন হয়?
মহিলাদের থেকে পুরুষদের হার্নিয়া বেশি হয়, এই ধারণা ঠিক নয়। তবে পুরুষদের কুঁচকিতে হার্নিয়া বেশি হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন অণ্ডকোষ বাচ্চার কিডনির সঙ্গে পিঠে একই জায়গায় বৃদ্ধি পায়। প্রসবের পরে নাভি থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসে। ওই পথ বেশিরভাগ সন্তানের বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অনেক বাচ্চার তা হয় না। যাদের প্রথম থেকে পথ খোলা থাকে তাদের জন্ম থেকেই হার্নিয়া থাকে। একে ‘কনজেনিটাল’ বা জন্মগত হার্নিয়া বলে। অনেকের আবার অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু বয়স বাড়তে বাড়তে ওই পথ খুলে যায়। তখন হার্নিয়া ধরা পড়ে। মহিলাদের পেটে ‘ইনসিশনাল’ হার্নিয়া বেশি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের সময় মহিলাদের অপারেশনের পরে পেটের মাংসপেশি শিথিল হয়ে যায়। ফলে পেটে হার্নিয়া দেখা যায়।
হার্নিয়ার কারণ-Hernia Causes
আমাদের পেটের কিছু অংশ আছে যেগুলো আশেপাশের অংশ থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল থাকে৷ অনেকের জন্মগতভাবে এ অংশগুলো দুর্বল থাকে।
* পেটের ভিতরের চাপ যদি বেশি হয়, যেমন-অনেক দিনের পুরানো হাঁচি, কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের হতে পারে।
* উদর এবং উরুর সংযোগ স্থলে হার্নিয়া হতে পারে৷এটা সাধারণত পুরুষদের হয়।
* ভারী জিনিস তুলতে গিয়ে হতে পারে৷
* পুরুষদের প্রস্টেটের অসুখ, মুত্রাশয়ের অসুখের কারণে হতে পারে৷
* চাপ দিয়ে প্রস্রাব করলে হতে পারে৷
* প্রসবের পর ভারি কাজ বা অনবরত সিঁড়ি ভাঙলে হার্নিয়া হতে পারে৷
হার্নিয়ার লক্ষণ-Hernia Symptoms
নীচের লক্ষণ গুলো হার্নিয়া সিমটম (Hernia Symptoms) বলা হয়।
পেট ফুলে যাওয়া: হার্নিয়ার সবচেয়ে দৃশ্যমান লক্ষণ হচ্ছে পেটের কোনো না কোনো অংশে ফুলে যাওয়া। সেই ফোলা থেকে ভয়াবহ পেট ব্যথা হয়ে থাকে।
শরীর নিচু করলে ব্যথা অনুভব: শরীরটা নিচু করলে অথবা ভারী কোনো জিনিস বহন করলে পেট ব্যথা হলে ধরে নেবেন যে আপনার হার্নিয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি যদি কাশি হয় তাতেও পেট ব্যথা করতে পারবে। সেইসঙ্গে যদি পেটের মধ্যে চাপ চাপ অনুভব করেন তাহলেও হার্নিয়ার লক্ষণ হতে পারে।
পেট ভরা ভরা লাগা: পেট ফাপা নয় বরং পেট ভরা ভরা লাগলে হতে পারে হার্নিয়া। হার্নিয়ায় আক্রান্ত হলে পেটে থাকে তীব্র ব্যথা, এই ব্যথা চলে গেলে আপনার মনে হবে আপনি সবেমাত্র কোনো দাওয়াতে ভরপেট খেয়ে ফিরছেন।
পেশি দুর্বলতা: পেশি দুর্বলতা যেমন আপনার হার্নিয়ার কারণ হতে পারে তেমনি পেশি দুর্বল অনুভব হলেও হতে পারে হার্নিয়ার লক্ষণ। আপনি হার্নিয়ায় আক্রান্ত হলে আক্রান্ত জায়গার আশেপাশের এলাকার পেশি ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে।
বমি বমি ভাব হওয়া: পেটে যদি ঘন ঘন সমস্যা দেখা দেয় অথবা বমি বমি ভাব হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার হার্নিয়া মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে। কোনোরকম দ্বিধা দ্বন্দ্ব না করে ডাক্তার দেখান।
জ্বর: জ্বর হলেই সচেতন হওয়া দরকার সবারই। সব ধরনের জ্বরই কোনো না কোনো রোগের পূর্বলক্ষণ। তবে হার্নিয়ার উপরোক্ত লক্ষণগুলোর সাথে যদি জ্বর থাকে তাহলে সেটা আপনার ঘাতকের ভূমিকা পালন করতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য: হার্নিয়া হলে আপনার খাবার হজম হতে বাধা দেয়, তাই এসময় আপনার দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্য এতই ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দিতে পারে যে, আপনাকে অপারেশন করতেও হতে পারে।
বুক জ্বালাপোড়া করা: বুক জ্বালাপোড়া করা অথবা বুকে ব্যথা হওয়া- এইসব লক্ষণগুলো দেখা দিলেও হতে পারে হার্নিয়া।
কুঁচকি বা অন্ডথলি ফুলে যাওয়া: কুঁচকি বা অন্ডথলি ফুলে গেলে হার্নিয়া হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকে।
নাভির আশপাশ ফুলে যাওয়া: নাভির আশপাশ অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গেলে হার্নিয়ার সম্ভবনা থাকে।
উরুর গোড়ার ভেতর দিক ফুলে যাওয়া: উরুর গোড়া বা ভিতর দিকে ভূলে গেলে হার্নিয়ার সম্ভবনা থাকে।
পেটে পূর্বে অপারেশন করা হয়েছে এমন স্থান ফুলে যাওয়া: পেটে অপারেশন হয়েছে এরকম স্থান ফুলে গেলে হার্নিয়ার সম্ভনা থাকে।
হার্নিয়া কত প্রকার ?
মিশিগান বিশ্বিবদ্যালয়ের তত্বাবধানে কাজ করা স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণামূলক ওয়েবসাইট University of Michigan Health এর তথ্য অনুযায়ী হার্নিয়া ৬ প্রকারের হয়ে থাকে। চলুন এবার ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে হার্নিয়ার ধরণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।যেমন-
১. ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া-Inguinal Hernia
পুরুষের ক্ষেত্রে যে পথ দিয়ে অণ্ডকোষ থলিতে নেমে আসে, বা নারীদের ক্ষেত্রে যেখানে জরায়ুর লিগামেন্ট থাকে, সেই পথ গুলোকে বলা হয় ইঙ্গুইনাল ক্যানাল। কোনো কারণে ইঙ্গুইনাল ক্যানালের পেশী দুর্বল হয়ে গিয়ে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই জায়গা ভেদ করে তলপেট থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসলে তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া বলা হয়। এই হার্নিয়া সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে।
২. আম্বিলিকাল হার্নিয়া-Umbilical hernia
মানব দেহের নাভির কাছের মাংশপেশী দুর্বল হয়ে থাকলে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই দুর্বল পেশী ভেদ করে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করে বা বের হয়ে যায়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় আম্বিলিকাল হার্নিয়া বলে। আম্বিলিকাল হার্নিয়ায় আক্রান্ত অংশ ফুলে থাকার কারনে এই ধরণের হার্নিয়া বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায় এবং সাধারণত বেশ স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। নারী – পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রেই এই হার্নিয়া হতে পারে।
৩. ফিমোরাল হার্নিয়া-Femoral Hernia
মানব দেহের ঊরুর উপর দিকে ধমনী বহনকারী ক্যানেলের (Femoral canal) ভিতর দিয়ে যখন অন্ত্রের কিছু অংশ দুর্বল আবরণ ভেদ করে প্রবেশ করে, তখন একে ফিমোরাল হার্নিয়া বলা হয়। সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই হার্নিয়ার উপস্থিতি বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে অতিরিক্ত ওজন (Overweight) এবং গর্ভবতী নারী।
৪. হায়াটাল হার্নিয়া-Hiatal hernia
মানুষের শরীরের যে বড় পেশীটি বুক ও পেটের মাঝামাঝি থাকে, তাকে ডায়াফ্রাম বলে। ডায়াফ্রাম পেশীর একটি খোলা অংশ রয়েছে যেখানে খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর সাথে সংযোগ হয়েছে। এই অংশকে হায়াটাস (hiatus) বলে। পাকস্থলীর কোন অংশ যদি ডায়াফ্রামের ওই সংযোগস্থল ভেদ করে বুকের দিকে উঠে আসে, তাহলে এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় হায়াটাল হার্নিয়া বলা হয়।
৫. ইনসিশনাল হার্নিয়া-Incisional Hernia
কোন মানুষের পেটে যদি কখনো কোন অস্ত্রোপচার বা সার্জারি হয়ে থাকে এবং পেটের সেই পুরোনো অস্ত্রোপচারের জায়গা দিয়ে যদি অন্ত্রের কোনো অংশ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে বা বের হয়ে যায়, তখন তাকে ইন্সিশনাল হার্নিয়া বলে। সাধারণত সেই অস্ত্রোপচারের কারণে যদি পেটের পেশী দুর্বল হয়ে যায় অথবা যদি উন্নতমানের সুতো ব্যবহার না করা হয়ে থাকে, তাহলে নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এই ধরনের হার্নিয়া হতে পারে।
৬. এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া-Epigastric Hernia
এপিগ্যাস্ট্রিক (Epigastric) মেডিকেল টার্মটি দ্বারা পেটের উপরের দিকের অংশকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ বুকের ঠিক নিচে এবং নাভীর উপরের দিকের অংশের পেরিটোনিয়াম ভেদ করে যে হার্নিয়া হয় তাকে এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া বলে। সাধারণত হাঁচি, কাশি অথবা হাসাহাসির সময় এই হার্নিয়া লক্ষ্য করে দেখা যায়।
পুরুষের হার্নিয়া রোগ কেন হয়
পেটের উপরিভাগের আবরণ বা প্রাচীর হচ্ছে পেরিটোনিয়াম যার কাজ হলো পেটের ভিতরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে যথাস্থানে রাখা। কোনো কারণ বশত এই প্রাচীর দুর্বল হয়ে পড়লে তখন পেটের মধ্যকার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অথবা টিস্যু পেরিটোনিয়াম ভেদ করে বেরিয়ে ফোলাভাব বা লাম্প (Lump) তৈরী করে যাকে মেডিকেলের ভাষায় হার্নিয়া (Hernia) বলে।
হার্নিয়া রোগনির্ণয় করা হয় কীভাবে?
শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। কুঁচকির আশপাশের ফোলা ভাব দেখে হার্নিয়া নির্ণয় করা হয় প্রাথমিক ভাবে। আর কাশলে যেহেতু হার্নিয়া স্পষ্ট রূপ নেয়, তাই রুগিকে জোরে কাশতে বলেও রোগনির্ণয় করা হয়। তাছাড়া, বেশি হাঁটাচলা করলে রুগি যদি যন্ত্রণাবিদ্ধ হন, তাহলেও হার্নিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় অনেকটাই।
হার্নিয়া চিকিৎসা-Hernia treatment
হার্নিয়া ছোট থাকে এবং কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করে তাহলে চিকিৎসকরা অনেক সময পর্যবেক্ষণ করার কথা ও অপেক্ষা করা কথা বলেন। তবে এই অসুখ যদি বড় হতে থাকলে এবং ব্যথা হলে সাধারণত অপারেশন করতে হয়।
হার্নিয়ার দু’ধরনের সাধারণ অপারেশন করা হয়ঃ যথা হার্নিয়োর্যাফি ও হার্নিয়োপ্লার্স্টি।
হার্নিয়োর্যাফি: এ পদ্ধতিতে সার্জন কুঁচকিতে একটা ইনসিশন দিয়ে বেরিয়ে আসা অন্ত্রকে ঠেলে পেটের মধ্যে ফেরত পাঠান। তারপর দুর্বল বা ছেঁড়া মাংসপেশি সেলাই করে ঠিক করে দেন। অপারেশনের পর স্বাভাবিক কাজ কর্মে ফিরে যেতে চার থেকে ছ’সপ্তাহ সময় লাগে।
হার্নিয়োপ্লার্স্টি: এ পদ্ধতিতে সার্জন কুঁচকি এলাকায় এক টুকরো সিনথেটিক মেশ লাগিয়ে দেন। সেলাই, ক্লিপ অথবা স্টাপল করে এটাকে সাধারণত দীর্ঘজীবী রাখা হয়। হার্নিয়ার ওপরে একটা একক লম্বা ইনসিশন দিয়েও র্নিয়াপ্লাস্টি করা যেতে পারে। বর্তমানে ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে, ছোট ছোট কয়েকটি ইনসিশন দিয়ে হার্নিয়োপ্লাস্টি করা হয়। তবে হার্নিয়া বড় হলে ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে করা যায় না।
প্রতিরোধ
জন্মগত ত্রুটির কারণে হার্নিয়া হলে তা প্রতিরোধ করা যায় না, চিকিৎসা করতে হয়। কিছু পরামর্শগুলো মেনে চললে পেটের মাংসপেশি ও টিস্যু বা কালার টান কমাতে পারা যায়:
* স্বাস্থ্যকর ওজন রাখা যদি স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বেশি থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যায়াম ও খাদ্যগ্রহণ করা।
* উচ্চ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য ও টানটান অবস্থা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
* ভারী বস্তু উত্তোলনে সতর্ক হতে হবে। পারত পক্ষে ভারী বস্তু উত্তোলন করা যাবে না, যদি একান্তই উত্তোলন করতে হয় তাহলে সর্বদা হাঁটু ভাঁজ করে শুরু করতে হবে, কখনো কোমর বাঁকানো যাবে না।
* ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ধূমপান মারাত্মক রোগ যেমন ক্যান্সার, এমফাইসেমা ও হ্নদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এ ছাড়া ধূমপান সচরাচর দীর্ঘস্থায়ী কাশির সৃষ্টি করে, যা ইনগুইনাল হার্নিয়া সৃষ্টিতে উৎসাহ জোগায়।
অস্ত্রোপচারে দেরি করলে কী কী স্বাস্থ্যঝুঁকি
হার্নিয়া অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক না করলে, একটি মারাত্মক ঝুঁকি হলো— এটি পেটের দেয়ালের বাইরে আটকে গিয়ে ঘায়ের সৃষ্টি করতে পারে, যাকে ইনকার্সেরেটেড হার্নিয়া বলা হয়। ফলে হার্নিয়াতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে ও অন্ত্রের মধ্যে খাদ্য চলাচলে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। যাকে প্যাঁচালো বা স্ট্র্যাংগুলেটেড হার্নিয়া বলা হয়। এ ক্ষেত্রে অপারেশন জরুরি হয়ে পড়ে। সব হার্নিয়াই যে এই ঝুঁকিতে পড়বে তা নয়, তবে এটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ ধরনের একটি অতিজরুরি অবস্থা, যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সেই অবস্থায় যেন আপনি না পড়েন সে জন্য হলেও হার্নিয়া অপারেশনে বিলম্ব করা উচিত নয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হার্নিয়া বড় হতে থাকে এবং পারিপার্শ্বিক কোষ কলাগুলোকে দুর্বল করতে থাকে। ফলে উপসর্গের তীব্রতার ঝুঁকি বাড়তে থাকে, যেমন ব্যথা বাড়তে থাকে ও ফলে আপনার জীবনযাত্রায় সমস্যা বাড়তে পারে।