
মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়ের লক্ষণ প্রতিকার - Symptom Remedies for Osteoporosis of the Spinal Cord
অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় বলতে শরীরের হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বোঝায়। এতে হাড় অনেকটা মৌচাকের মতো ঝাঁজরা বা ফুলকো হয়ে যায়। আর হাড় অতিদ্রুত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
বয়স ৫০ পেরোনোর পর থেকে শরীরের হাড় ক্ষয় বা এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। কারও কারও এর আগেই এ লক্ষণ দেখা দেয়। যাদের ক্ষেত্রে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি, তাদের দ্রুত হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। আবার নারীদের পিরিয়ডের পর হাড় ক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।
কারণ:
• দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে।
• দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে।
• মেয়েদের ইস্ট্রোজেন হরমোন এবং ছেলেদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া।
• নিয়মিত ব্যায়াম না করলে হাড়ের ঘনত্ব ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ফলে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
• ধূমপান করলে পুরুষের দেহে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমে এবং হাড় ক্ষয় ত্বরান্বিত করে।
• বয়স বেড়ে যাওয়া।
• অতিরিক্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন অস্টিপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
লক্ষণ:
১. কাঁধে, পিঠে কিংবা কোমরে ব্যথা।
২. দীর্ঘক্ষণ বসতে কিংবা দাঁড়াতে না পারা।
৩. ধীরে ধীরে ব্যথা সমগ্র পায়ে ছড়িয়ে যাওয়া। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ে যে কোন একটা পায়েই ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে।
৪. ব্যথার প্রকোপ বাড়লে পিঠে জ্বালা-পোড়া অনুভূতি হতে পারে।
মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়ের প্রতিকার:
১. নিয়মিত ব্যায়ামে হাড়ের শক্তি বাড়ে। এতে হাড়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে জয়েন্টগুলো সচল রাখে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাড় ক্ষয় কমায়।
২. নিয়মিত পরিমাণমতো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-জাতীয় খাবার খান:
হাড়ের প্রধান উপাদান হচ্ছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি। ক্যালসিয়ামের জন্য নিয়মিতভাবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার খান।
ভিটামিন ডি-এর ৯০ ভাগ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। তাই প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকুন, পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ খান। এতে হাড় ভালো থাকবে।
৩. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। কারণ, এতে হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি করে।
৪. ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৫. হাড় ভাঙা রোধে বাথরুমের পিচ্ছিল ভাব দূর করুন।
৬. রাতে ঘরে মৃদু আলো জ্বালিয়ে রাখুন। অন্ধকারে চলাফেরা করবেন না।
৭. অতিরিক্ত ওজন বহন করবেন না।
চিকিৎসা:
এই ব্যথার চিকিৎসা হিসেবে এখানে কিছু পদ্ধতির নাম উল্লেখ করা যায়। যেমন-
১. ব্যথানাশক এবং অন্যান্য ওষুধ দিয়ে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ।
২. ফিজিওথেরাপি এবং যোগব্যায়াম।
৩. সার্জারি।
চিকিৎসার পদ্ধতি হিসেবে এখনো আকুপাংচার কিংবা আয়ুর্বেদিক ঔষধসমূহের বিশেষ স্বীকৃতি না থাকলেও এগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।