
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়
এলার্জির সমস্যা অনেকের কাছে মারাত্মক ও বিরক্তিকর হতে পারে।বিশেষ করে যাদের রক্তে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরো গুরুতর।রক্তে এলার্জি দূর করার জন্য দারুন কিছু টিপস রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করলে খুব সহজেই এই সমস্যাটা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
রক্তে এলার্জি কেন হয় /রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হয়
রক্তে এলার্জির সমস্যাটা জন্মগত ভাবে হতে পারে। বিশেষ বস্তুতে এলার্জির ক্ষেত্রে ওই বস্তুর সংস্পর্শে এলে শরীরে হিস্টামিন, সেরোটোনিন ও ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়ে থাকে। এর কারণে অনেকের ত্বকে চাকা চুলকুনি ও চোখ লালের মত সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। অনেকের এই ক্ষেত্রে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা হতে পারে।
রক্তে এলার্জি বেশি হলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে সকল সমস্যা গুলো আমাদের শরীরের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরবর্তী সময়ে আমাদের এই সমস্যা কারণে মৃত্যু হতে পারে। রক্ত এ এলার্জি বেশি হলে যে সকল সমস্যাগুলো হতে পারে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো। রক্তে এলার্জি বেশি এনাফ্লেক্সিস হতে পারে। এই রোগ টি হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
যেমন:
* শ্বাসকষ্ট
* জিহ্বা বা ঠোঁট ফোলা ফোলা ভাব হাওয়া
* মুখ ফুলে যাওয়া
* চুলকানির সৃষ্টি হওয়া
* ত্বকে লালচে দাগ দেখা দেওয়া
* বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
* নিম্ন রক্তচাপ
রক্তে এলার্জির লক্ষণ
আমাদের শরীরে অনেক রকম কারণে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়ে থাকে। রক্তে আমাদের এলার্জি সৃষ্টি হতে পারে। এটা অবশ্যই মারাত্মক একটি ব্যাধি। রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হয় এবং যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে তা অবশ্যই আমাদের জানা উচিত। কেননা আমাদের অনেকেরই এনার্জি রয়েছে আমরা অনেক সময় ভেবে থাকি আমাদের রক্তে এলার্জি রয়েছে।
কিন্তু আমরা শিওর হতে পারি না রক্তে এলার্জি আছে কি নাই। রক্তে এলার্জি বেশি হলে কি হয় এবং যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে সেগুলো যদি আমাদের সকলের জানা থাকে তবে অবশ্যই আমরা এ বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারব।
তো চলুন জেনে নেওয়া যাক রক্তে এলার্জির লক্ষণ গুলো সম্পর্কে :
* রক্তে এলার্জি হলে আমাদের নাক দিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি বের হবে।
* গলাতে চাপা চাপা ভাব অনুভূত হবে।
* তলপেটে ব্যথা অনুভূত হবে।
* শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানির সৃষ্টি হবে।
* চোখ লাল হবে।
* শরীরে চাকা চাকা দাগ দেখা দিবে।
* আমাদের ঘ্রান শক্তি কমে যাবে।
* পেট কামড়ানো অর্থাৎ পেটে সমস্যা হবে।
* বমি হওয়া অথবা বমি বমি ভাব অনুভূত হবে।
রক্তের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়
রক্তে এলার্জি দূর করার উপায় একটু কঠিন। তাছাড়া রক্তের এনার্জি হলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। কউকে রক্ত দেয়া যায় না, শরীরে অনেক রোগ হয়, কিডনি ও লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া উঠে , শরীর লাল লাল হয়ে যায় এবং মাথা ব্যথা করতে পারে। রক্তে এলার্জি দূর করতে ৫টি প্রাকৃতিক ওষুধ সেবন করতে পারেন।
হলুদ, এটির প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত একটি মশলা। তবে একটি শক্তিশালী মিশ্রণ তৈরি করতে মধুর সাথে মিশ্রিত করা যেতে পারে।
হলুদের কারকিউমিন প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন হিসেবে কাজ করে, যখন মধু প্রশান্তিদায়ক প্রভাব দেয়। ১ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে মেশান এবং এর সম্ভাব্য উপকারের জন্য প্রতিদিন এই মিশ্রণটি খান।
নিমের পাতার রস খেতে পারলে আরো বেশি এবং দ্রুত উপকার পাবেন। তাছাড়া নিমের পাতার রস এলার্জি থেকে শুধু করে অনেক রোগ সারাতে কার্যকরী ভূমিতে রাখে। তাই নিয়মিত নিমের পাতার রস সেবন করার চেষ্টা করুন।
আদার মধ্যে প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিহিস্টামিন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এটিকে এলার্জির প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি মূল্যবান প্রতিকার করে তোলে।
প্রায় ১০ মিনিটের জন্য জলে তাজা আদার টুকরো সিদ্ধ করে আদা চা তৈরি করুন। অতিরিক্ত স্বাদ এবং প্রশান্তিদায়ক প্রভাবের জন্য মধু যোগ করুন।
নিয়মিত আদা চা পান করা রক্তের এলার্জির লক্ষণগুলি পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে।
টিতে জিনিস সর্ব রোগের ওষুধ। তাই যত বেশি তিতে খেতে পারবেন। তত সুস্থ থাকতে পারবেন। আপনি সাপ্তাহে দুইদিন একটি করলা বেলেন্ড করে রস বের করে সেবন করুন। বেশি তিতে হলে সাথে একটু চিনি দিয়ে খেতে পারেন। এই তিনটির যেকোনো একটি খেতে পারলে নিচ্চিত থাকতে পারেন আপনার আর এলার্জি হবে না।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ইমিউন সিস্টেমকে মোকাবেলা করতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন সাইট্রাস ফল, বেল, মরিচ, স্ট্রবেরি এবং ব্রকলি আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন যাতে এলার্জির লক্ষণগুলি সম্ভাব্যভাবে কম হয়।
রক্তে এলার্জি কমানোর ঔষধ
রক্তে এলার্জি কমানোর জন্য বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। আপনাদের যদি রক্তে এলার্জি থেকে থাকে তাহলে আপনারা এই সকল ঔষধ গুলো ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এই সকল ওষুধগুলো আপনারা সেবন করলে আপনাদের রক্তে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে অবশ্যই ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে আপনারা ডক্টরের পরামর্শ নেবেন।
তাছাড়া সমস্যা বৃদ্ধিও পেতে পারে। কারণ অনেক ওষুধে সাইড ইফেক্ট থাকে সব ওষুধ সবার শরীরে অ্যাডজাস্ট হয় না। সুতরাং ওষুধ সেবন করার পূর্বে ডক্টরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
রক্তে এলার্জি কমানোর ঔষধের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
Acitrin
Cetmax
Atrizin
Citin
Alargol
Cetizin
Alatrol
Rizin
Dyzin
Nosemin
এছাড়াও আরো অন্যান্য ওষুধ রয়েছে। এই সকল ওষুধগুলো আপনারা সেবন করলে এই এলার্জিগুলো তৎক্ষণিক সময়ের জন্য কমবে। তবে অবশ্যই আপনারা ডক্টরের পরামর্শ নিবেন এবং ডক্টর যেভাবে বলে সেভাবে নিয়ম মেনে চলবেন। তাহলে আপনারা এই রোগ থেকে পরিত্রান পাবেন।
রক্তে এলার্জির হোমিও ঔষধ
মানুষের শরীরে এলার্জি হওয়ার পর সেটা প্রতিকারের জন্য নানান ধরনের উপায় অবলম্বন করে , বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করালেও কিছু মানুষ হোমিওপ্যাথির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। কারণ হোমিওপ্যাথি ঔষধ দ্বারা সমস্যার সমাধান হতে কিছুটা দেরি হলেও তা সফলভাবে প্রতিকার পাওয়া যায়। যদিও অনেকেই মনে করেন হোমিওপ্যাথি ঔষধের অনেক ধরনের সাইট ইফেক্ট থাকে।
আমরা আপনাদের সঙ্গে এমন কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিয়ে আলোচনা করব যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা রক্ত এলার্জি প্রতিকার করতে পারেন ।
ওয়াইথিয়া ( Wyethia )
যখন আমাদের তালুতে তীব্র চুলকানি হয় এবং আমরা জিভ দিয়ে সেগুলো কামড়াতে থাকি , এ ধরনের চুলকানি উপশম করতে ওপরের ঔষধটি ভীষণভাবে কার্যকরী। এছাড়াও রোগীর শরীরের মুখ গলা নাক ইত্যাদি জায়গায় শুকনো শুকনো ভাব এবং চোখ কান গলা সহ হাত পায়ের তালুতে চুলকানি হলে ঔষধটি ব্যবহার করা যেতে পারে ।
সাবাধিলা ( Sabadila )
মুখের মধ্যে যখন তৃষ্ণা হীন অবস্থা হয়ে যায় , তালুতে চুলকানির পর একটি গন্ধের সৃষ্টি হয় এবং নাকের ভিতরে জলযুক্ত স্রাব তৈরি হয় ঠিক সেই সময় ওষুধটি ব্যবহার করা যায় ।
পুলসেটিলা ( pulsatilla )
আমরা অনেক সময় লক্ষ্য করে আমাদের অতিরিক্ত হাঁচি হয়ে থাকে , আমরা হাসিটাকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও এটি আসলে রক্তে এলার্জির প্রভাবে হতে পারে । যাদের ঘন ঘন হাঁচি এবং নাক এবং কানের কিছু অংশ পেকে যায় তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
কালী বিক্রমিকাম ( kali Bichromicum )
রক্তের এলার্জি দূর করার জন্য এটিও একটি কার্যকর ঔষধ । সাধারণভাবে যখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে হলুদ সবুজ এক ধরনের দাগ লক্ষ করা যায় সেগুলোকে দূর করার জন্য ওষুধটি অনেক ভালো কাজ করে ।
ইউ্ফ্রেসিয়া ( Euphrasia )
অনেক সময় বাতাসে গেলে আমাদের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে । চোখের পানিগুলো ধীরে ধীরে ঘন হতে থাকে। রক্তে এলার্জি থাকার কারণে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। উক্ত সমস্যার ক্ষেত্রে এই ওষুধটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া ওর চোখের আশেপাশের চুলকানি এবং চোখ জ্বলজ্বল ভাব থাকা অবস্থায়ও সত্যি ব্যবহার করা যায়।
নাটরাম মিউরিটিকাম ( Natrum Muriaticum )
স্বাভাবিকভাবে রক্তে এলার্জি সংক্রমণ যখন অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন শরীর ঘেমে যায় , শরীরের মধ্যে একটা ক্লান্তি ক্লান্তি ভাব চলে আসে । খাবারে অরুচি আসে। চোখের পাতার উপরে ফোলা ফোলা ভাব হয় এবং হালকা ঘেমে যায়। পাশাপাশি মুখমণ্ডলে চুলকানি সৃষ্টি হয়। এ ধরনের অবস্থায় উপরের ঔষধটি ব্যবহার করতে হবে। উক্ত ওষুধ ব্যবহারের ফলে খুবই দ্রুত রক্ত এলার্জি থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।