শরীরের ব্যাথা কমানোর উপায় - Ways to reduce body pain
যে কোনো কারণেই শরীরে ব্যথা হতে পারে। বসা বা শোয়া ভঙ্গিমার কারণে অনেক সময় শরীর ব্যথা হতে পারে। আবার বেশি হাঁটলে পায়ে ব্যথা এমনকি হাতেও ব্যথা হতে পারে বিভিন্ন কাজ করার কারণে। কমবেশি সবাই কোনো না কোনো সময় এ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যায়। শরীরে ব্যথা হওয়ার মুখ্য কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্লান্তি। শরীর অত্যাধিক ক্লান্ত হলে আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগ ও প্রদাহ বাড়তে পারে। এছাড়াও শরীরে পানির ঘাটতি থাকলেও গায়ে, হাত-পায়ে যন্ত্রণা হতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না খেলে তার প্রভাব আমাদের শরীরেই পড়ে।
তবে শরীরে এরকম ব্যথা হলে কীভাবে মুক্তি পাবেন? এজন্য বেশি কিছু করার দরকার নেই। মাত্র ১০ উপায়েই শরীরের যে কোনো ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। জেনে নিন উপায়গুলো-
১. চেরি : অ্যাসপিরিন শরীরের ব্যথা কমানোর জন্য একটি জনপ্রিয় ওষুধ। কিন্তু নতুন গবেষণা মতে, চেরি অ্যাসপিরিনের চেয়েও আরো বেশী কার্যকরী ওষুধ। এই ফলের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে, যা শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
২. আদা : আদা পাকস্থলীর জন্য ভালো। এটি হজমেও সহযোগিতা করে। এছাড়া আদা শরীরের ব্যথা কমানোর জন্যও উপকারী ওষুধ। স্পোর্টসম্যানদের জন্যও আদা অনেক উপকারী। তাই প্রত্যেকটি মানুষেরই দৈনিক ৫০০ মিলিগ্রাম আদা খাওয়া উচিত।
৩. হলুদ : দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভুগলে হলুদের ব্যবহার বাড়াতে পারেন। ডা. বোনাকদারের মতে, ‘হলুদে একটি প্রদাহ প্রশমনকারী উপাদান (কারকুমিন নামক রঞ্জক, যা হলুদকে হলুদ রঙের করেছে) রয়েছে। এটা প্রদাহ ও ব্যথা উপশম করতে পারে। এর স্বপক্ষে প্রমাণও রয়েছে।’ ২০১৬ সালে জার্নাল অব মেডিসিনাল ফুডে প্রকাশিত মেটা-অ্যানালাইসিসে বলা হয়েছে, বাতরোগের চিকিৎসায় হলুদের কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্মুদির মতো খাবারে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টারমেরিক সাপ্লিমেন্টও সেবন করতে পারেন।
৪. স্যামন : রুই জাতীয় মাছ, যা অনেকেরই প্রিয়। স্যামন মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ রয়েছে, যা স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া ওমেগা-৩ শরীরের ব্যথা কমায়। বেশী করে স্যামন মাছ খেলে শরীরের ফোলা অংশগুলোও কমে যায়।
৫. রেড ওয়াইন: লাল আঙুর থেকে তৈরি হয় রেড ওয়াইন। পিঠের ব্যথার জন্য উপকারী আঙুর। ফলে আঙুর থেকে তৈরি হওয়া রেড ওয়াইনও ব্যথার ওষুধ। এছাড়া স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও সাহায্য করে রেড ওয়াইন।
৬. অলিভ অয়েল : কোন কিছু রান্নার সময় তেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বাজারে যেসব তেল কিনতে পাওয়া যায় তার মধ্যে অলিভ অয়েলই সবচেয়ে ভালো। এটি শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল শুধু খাওয়ার কাজেই ব্যবহার হয় না, তা গায়েও মাখা হয়।
৭. গোলমরিচ : গোলমরিচ এক ধরনের ঝাল মসলা বিশেষ। এটি অন্য মরিচের চেয়ে কিছুটা ঝাল। এর মধ্যে সাধারণত উচ্চমাত্রায় ক্যাপ্সাসিন থাকে, যা সাধারণত পেইন কিলার তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। যদি পেশিতে ব্যথা করে তাহ’লে কোন একটি ক্রিমের সঙ্গে গোলমরিচের গুঁড়া ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যাবে।
৮. রোজমেরি তেল: কিছু গবেষকের মতে, রোজমেরি তেল মাথাব্যথা, পেশী ও হাড়ের ব্যথা এবং খিঁচুনি নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি এটি প্রদাহ কমাতে পারে। মসৃণ পেশী শিথিল করতে পারে। এমনকি স্মৃতিশক্তিও বাড়াতে পারে। সরাসরি ব্যবহার না করে অলিভ অয়েলের মতো অন্য কোনো তেলে মিশিয়ে পাতলা করে ব্যবহার করতে হয় এটি। এক আউন্স সাধারণ তেলে তিন থেকে পাঁচ ফোঁটা রোজমেরি তেল যোগ করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মস্তিষ্কের অপিওয়েড রিসেপ্টর নামক রিসেপ্টরগুলোতে কাজ করে, যা ব্যথার সংবেদনের সঙ্গে জড়িত।
৯. রসুন : রসুনের মধ্যে রয়েছে ব্যথানাশক উপাদান সালফার। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং পেশী ও গাঁটের ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে উপকারী। এজন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়া ভালো। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে রসুন-তেল গরম করে নিয়মিত মালিশ করতে পারেন।
১০.কুমড়োর বীজ: এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এটি মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও একাধিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয় কুমড়োর বীজ।