ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় - Ways to get rid of dark spots on the lips
সুন্দর হাসির জন্য সুন্দর ও মসৃণ ঠোঁটের তুলনা হয় না। যদিও আধুনিক জীবনযাপন পদ্ধতি, খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত রোদ, ও ধূমপানসহ নানা কারণে ঠোঁট কালচে হয়ে যায়। অনেকে মনে করেন একবার ঠোঁট কালচে হয়ে গেলে আবার আগের রঙ ফিরিয়ে আনা বেশ কঠিন ও খরচসাপেক্ষ। কিন্তু ঘরে যত্ন নিয়ে কালচে ঠোঁটে আনতে পারেন গোলাপী আভা।
ঠোঁট কেন কালো হয়?
অনেক কারণেই ঠোঁট কালো হতে পারে বা ঠোঁটে কালো কালো দাগ পড়তে পারে। যেমন- ব্যস্ত কর্মজীবন, স্ট্রেস, আবহাওয়ার পরিবর্তন, বাতাসের আর্দ্রতা, শারীরিক অসুস্থতা, তামাক সেবন, ধূমপান করা, কেমোথেরাপি, অতিরিক্ত ফ্লুরাইডের ব্যবহার, নিম্নমানের কসমেটিকসের ব্যবহার, রাতে ঘুমানোর আগে লিপস্টিক না তোলা, সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে, স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীনতা।
ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
১.গোলাপজলও ঠোঁটের কালচে দাগ তুলতে ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য তুলোয় খানিকটা গোলাপজল নিয়ে ঠোঁটে আলতো করে মেখে নিন। আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।
২.টমেটোর রস বা টমেটোর টুকরো ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত দু’বার করে টমেটোর রস ঠোঁটে মাখুন। এতে আপনার ঠোঁট উজ্জ্বল হবে।
৩.রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁট জলপাইয়ের তেল দিয়ে মালিশ করা উপকারী। এটা ঠোঁটের রং হালকা করে পাশাপাশি ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং মসৃণ করে তোলে।
৪.লেবুর রস খুব ভালো ব্লিচিং। প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাজা লেবুর রস দিয়ে ঠোঁটে ভালো করে ম্যাসাজ করলে কালচে ভাব দূর হবে। লেবুর সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিলেও মিলবে উপকার। এজন্য এক চা চামচ মধুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে ঠোঁটে ব্যবহার করনু। ঘণ্টাখানেক রেখে ঠোঁট ধুয়ে ফেলুন।
৫.দুধ বা টক দই মাখুন। ঠোঁটকে উজ্জ্বল করতে ল্যাক্টিক অ্যাসিড খুবই উপকারী। দুধ বা টক দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ল্যাক্টিক অ্যাসিড। দুধ বা টক দই তুলোয় নিয়ে প্রতিদিন অন্তত দু’বার করে ঠোঁটে মালিশ করুন।
৬.ত্বক উজ্জ্বল করার গুণের জন্য সুপরিচিত হলুদ। আধা চা-চামচ হলুদের সঙ্গে আধ চা-চামচ দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত ঠোঁটে মালিশ করলে কালচেভাব দূর হয়।
৭.ঠোঁটের কালচেভাব দূর করার সবচেয়ে সস্তা ও সহজ উপায় হল নারিকেল তেল ব্যবহার। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আঙ্গুলের সাহায্যে নারিকেল তেল ঠোঁটে ব্যবহার করুন, কালচেভাব কমে যাবে।
৮.প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আপনি যখন দাঁত ব্রাশ করেন, তখন টুথপেস্টের কিছুটা আপনার ঠোঁটের উপর লাগিয়ে প্রলেপ দিন। কিছুক্ষণ পর ব্রাশ করা শেষ হলে হাতের ব্রাশটি দিয়ে ঠোঁট ব্রাশ করুন। এজন্য ব্রাশটিকে অবশ্যই নরম হতে হবে এবং অনেক হালকাভাবে ব্রাশ করতে হবে। এর ফলে ঠোঁটের এবং ঠোঁটের চারপাশের মৃত কোষগুলো উঠে আসবে, সতেজ হবে ঠোঁট এবং এর চারপাশ।
৯.পুদিনা পাতা বেটে রস আলাদা করে নিয়মিত ঠোঁটে লাগান। বরফের কিউব নিয়ে ঠোঁটে ম্যাসাজ করুন, পরে বাদাম তেল এবং অলিভ অয়েল মিক্স করে ম্যাসাজ করুন। ঠোঁটের ন্যাচারাল কালার ফিরে আসবে।
১০.অল্প পরিমাণ চিনি এবং কোল্ড ক্রিম একসাথে মিক্স করে ঠোঁটের স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন। কোল্ড ক্রিমের বদলে অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে ঠোঁটের কালচেভাব কমে যাবে।
১১.অ্যালোভেরা ত্বকের ‘মেলানিন’ কমায়। তাজা অ্যালো ভেরা ঠোঁটে মালিশ করুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন, উপকার পাবেন।
১২. আমাদের ত্বকের অন্যান্য অংশের মত ঠোঁট থেকেও কিছুটা তেল উৎপন্ন হয়, একে বলে সেবাম। এটা খুব প্রয়োজনীয়। ঠোঁটকে তাই সবসময়ই আর্দ্র রাখতে হবে। বাইরে যাওয়ার সময় লিপবাম লাগিয়ে যেতে হবে। ঘরে থাকলে কোকো বাটার লাগিয়ে নিন। শুনে অবাক লাগতে পারে কিন্তু শুধু শীতকাল নয়, আপনার ঠোঁটকে গোলাপী রঙের করতে হলে সারা বছরই পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে হবে। ঠোঁটের আর্দ্রতা রক্ষায় এটা জরুরী।
১৩.বিটরুট ঠোঁটে মালিশ করে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন, এতে ত্বক তা শুষে নেবে। কিছুক্ষণ পরে ঠোঁট পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
১৪.শসার রস ঠোঁটকে গোলাপী করতে অনেক কার্যকরী। শুধুমাত্র ৫ মিনিট প্রতিদিন শশার রস ঠোঁটে ম্যাসাজ করুন এবং ফলাফল নিজেই দেখে নিন।
১৫.গোলাপের মত ঠোঁট পেতে চাইলে গোলাপ ব্যবহার করব না, তাই কি হয়? কিছু গোলাপের পাপড়ি নিন এবং দুধে ভিজিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পাপড়িগুলো বেটে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এতে কয়েক ফোঁটা মধু আর গ্লিসারিন দিন। এবার পেস্টটা আপনার ঠোঁটের উপর ১৫ মিনিট রেখে দিন। এক টুকরো তুলা দুধে ভিজিয়ে পেস্টটি তুলে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে অসাধারণ রেজাল্ট পাওয়া যায়।