প্রস্রাব-পায়খানার আদব ও শিষ্টাচার - Toilet etiquette and manners

পায়খানা-প্রস্রাবের নিয়ম-কানুন

ইসলামের বিধি-বিধান মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে পরিব্যাপ্ত। এর থেকে বাদ যায়নি প্রস্রাব-পায়খানার মতো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে কেবলাকে সামনে বা পেছনে দিয়ে বসবে না। ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করবে না।’ তিনি তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা করা থেকে বারণ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭)

উল্লিখিত হাদিসে বর্ণিত নির্দেশনা ছাড়াও প্রস্রাব-পায়খানার নির্দিষ্ট আদব ও শিষ্টাচার রয়েছে, প্রত্যেকের উচিত এগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া।

১. এমন স্থানে পায়খানা- প্রস্রাব করা, যেখানে বসলে মানুষ দেখে না, আওয়াজ শোনে না এবং দুর্গন্ধ আসে না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে দূরে চলে যেতেন, যেন তাঁকে কেউ দেখতে না পায়। (তিরমিজি ২০; আবু দাউদ ২)

২. নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রস্রাব করার ইচ্ছা করলেন। অতঃপর তিনি একটি দেয়ালের গোড়ার নরম মাটিতে গিয়ে প্রস্রাব করলেন। এরপর তিনি বললেন, ’তোমাদের কেউ প্রস্রাব করতে চাইলে যেন নীচু নরম জায়গা অনুসন্ধান করে নেয়। (আবু দাউদ ৩)

৩. পায়খানা প্রস্রাবের সময় ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস’ পাঠ করা। (বুখারি, হাদিস : ১৩৯)

৪. নিজের বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ। (বায়হাকি ৪৬৬; মজমাউজ জাওয়ায়েদ  ১০২০)

৫. পায়খানা-প্রস্রাব করতে যাওয়ার সময়  বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসাঈ ১১১; মুসনাদে আহমাদ ২৬৩২৬)

৬. পায়খানা-প্রস্রাবের সময় মাথা ঢেকে রাখা। (বায়হাকি ৪৬৪)

৭. কোনো গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে পোকামাকড়-সাপ থাকলে ক্ষতি করার আশঙ্কা প্রবল। (আবু দাউদ ২৭)

 ৮. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তিনটি অভিশপ্ত কাজ থেকে বিরত থাকবে। সেগুলো হচ্ছে- মানুষের অবতরণ স্থল, চলাচলের পথ ও জলাশয়ে চলাচলের পথে ছায়াবিশিষ্ট জায়গায় পায়খানা করা।’ (আবু দাউদ ২৬)

১০.  নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা দু’টি অভিশপ্ত কাজ থেকে দূরে থাকবে। সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করলেন, অভিশপ্ত কাজ দু’টি কি হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বলেন-

‘মানুষের যাতায়াতের পথে অথবা (বিশ্রাম নেয়ার) ছায়া বিশিষ্ট জায়গায় প্রস্রাব পায়খানা করা। এমন ছায়ায় বসে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না, যেখানে বসে মানুষ কথা বলে। (আবু দাউদ ২৫)

১১. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন প্রস্রাব-পায়খানার ইচ্ছা করতেন, তিনি জমিনের নিকটবর্তী না হওয়া পর্যন্ত কাপড় উঠাতেন না।’ (আবু দাউদ ১৪)

১২. গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি ২১)

১৩. কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে ইস্তিঞ্জা করা মাকরুহ। (মুসনাদে আহমাদ ২৬৩২৬)

১৪. অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার প্রবল আশঙ্কা থাকে। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে দেখেন। তিনি বলেনম হে ওমর! দাঁড়িয়ে প্রস্রাব কর না। (উমার বলেন,) তারপর আমি আর কখনও দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করিনি। (তিরমিজি ১২)

১৫. প্রস্রাব-পায়খানা শেষে ডান পা দিয়ে বের হওয়া এবং এই দোয়া পড়া - ‘আলহামদু লিল্লা হিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি।’

তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ

গাদীর খুম কি এবং এ সম্পর্কীত হাদীস - What is Ghadir Khumm and hadiths related to it
তারাবি নামাজের নিয়ত দোয়া ও মোনাজাত - The purpose of Tarawi prayer is to pray and pray
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন আইরিশ গায়িকা
বিবাহের দোয়া
সালামের উপকারিতা
রমজানের সময় সূচি ২০২৪-Ramadan time schedule 2024
বাথরুমে অযু করা যাবে কি?
কিভাবে গড়ে তুলবেন কুরআনী প্রজন্ম
বিতর নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম - Correct rules for praying witr prayer
ইসলামিক ভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা-islamic birthday wishes