বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সামরিক শক্তি ২০২২ - Military power of Bangladesh and Myanmar 2022
বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে কখনো সরাসরি যুদ্ধ না বাঁধলেও পুশব্যাক-পুশইন, জেলে আটক, রোহিঙ্গা নির্যাতন ইত্যাদি ইস্যুতে সীমান্তে বিরোধ রয়েছে দুই দেশের। দেশ দুটোর সামরিক শক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র আগে পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি বিশ্বের ১৩৩টি দেশের সামরিক শক্তির যে তালিকা প্রকাশ করেছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার, তাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শক্তির একটি ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে সামরিক শক্তির প্রধান পার্থক্যগুলো কোথায়?
ব়্যাংকিং
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী সামরিক শক্তির এই ব়্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে মিয়ানমার। সামরিক শক্তিতে বিশ্বের ১৪২টি রাষ্ট্রের মধ্যে মিয়ানমার রয়েছে ৩৯ নম্বরে। আর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অবস্থান ১৮ তম। মিয়ানমার রয়েছে ৩৯ ও বাংলাদেশের অবস্থান ৪৬। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। শীর্ষ ১০দেশের মধ্যে আরো রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান, তুরস্ক, জার্মানি আর মিশর।
সক্রিয় সেনাসদস্য
মিয়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় তিন গুণ হলেও সেনাসদস্যের সংখ্যায় মিয়ানমার অনেক এগিয়ে। মিয়ানমারের সক্রিয় সেনাসদস্যের সংখ্যা মোট চার লাখ ছয় হাজার, বাংলাদেশের রয়েছে মোট এক লাখ ৬০ হাজার সক্রিয় সেনাসদস্য। দুই দেশের কোনোটিরই রিজার্ভ সেনাসদস্য নেই।
প্রতিরক্ষা বাজেট
প্রতিরক্ষা বাজেটের দিক থেকে অবশ্য মিয়ানমারের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার সূচক বলছে, ২০২২ সালে প্রতিরক্ষা খাতে মিয়ানমারের বরাদ্দ ২২৮ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট ৩৮০ কোটি ডলারের।
এয়ারক্রাফট
এখানেও এগিয়ে মিয়ানমার। বাংলাদেশের ১৭৭টির বিপরীতে মিয়ানমারের রয়েছে ২৭৬টি এয়ারক্রাফট।
নৌবহর
নৌশক্তিতেও মিয়ানমার বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। মিয়ানমারের রয়েছে ১৮৭টি জাহাজ, বাংলাদেশের রয়েছে ১১২টি।
যুদ্ধবিমান
বাংলাদেশের কমব্যাট এয়ারক্রাফট বা যুদ্ধবিমান রয়েছে ৪৪টি, মিয়ানমারের রয়েছে ৫৯টি।
হেলিকপ্টার
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৭টি হেলিকপ্টারের বিপরীতে মিয়ানমারের রয়েছে ৮৬টি হেলিকপ্টার।
ট্যাঙ্ক
বাংলাদেশের কমব্যাট ট্যাঙ্ক রয়েছে ২৭৬টি, মিয়ানমারের রয়েছে ৪৩৪টি।
সাঁজোয়া যান
বাংলাদেশের সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ১,২৩০টি, মিয়ানমারের ১,৩০০টি।
স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি
স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারিতে অনেক এগিয়ে মিয়ানমার। দেশটির স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারির সংখ্যা ১০৮টি, বাংলাদেশের মাত্র ১৮টি৷
ফিল্ড আর্টিলারি
ফিল্ড আর্টিলারিতেও মিয়ানমার কয়েকগুণ এগিয়ে আছে। মিয়ানমারের ১৬১২টি ফিল্ড আর্টিলারির বিপরীতে বাংলাদেশের রয়েছে কেবল ৪১৯টি ফিল্ড আর্টিলারি।
রকেট প্রজেক্টর
বাংলাদেশের ৭২টি রকেট প্রজেক্টরের বিপরীতে মিয়ানমারের রয়েছে ৮৪টি রকেট প্রজেক্টর।
সাবমেরিন
সাবমেরিনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের একটি সাবমেরিনের বদলে বাংলাদেশের রয়েছে দুটি।
বিমানবাহী জাহাজ
বাংলাদেশ বা মিয়ানমার কোনো দেশেরই বিমানবাহী জাহাজ নেই।
ডেস্ট্রয়ার
দেশ দুটির কোনোটিরই ডেস্ট্রয়ার নেই।
ফ্রিগেট
এক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রয়েছে আটটি ফ্রিগেট, অন্যদিকে মিয়ানমারের রয়েছে পাঁচটি।
করভেট
বাংলাদেশের করভেটের সংখ্যা মিয়ানমারের দ্বিগুণ। মিয়ানমারের তিনটির বদলে বাংলাদেশের আছে ছয়টি।
উপকূলে পেট্রোল
উপকূলে টহল দেয়ার জন্য মিয়ানমারের রয়েছে ১১৭টি নৌযান। বাংলাদেশের রয়েছে ৩০টি।
বিমানবন্দর
মিয়ানমারে ৬৪টি বিমানবন্দর রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে ১৮টি।
নৌবন্দর ও টার্মিনাল
এক্ষেত্রে দুদেশেরই সমান সমান। দুই দেশেরই তিনটি নৌবন্দর ও টার্মিনাল রয়েছে।