ঘুরে আসুন বিউটি বোডিং
Beauty Boarding

বিউটি বোডিং

শামসুর রাহমান লিখেছেন- মনে পড়ে একদা যেতাম প্রত্যহ দুবেলা বাংলা বাজারের শীর্ণ গলির ভেতরে সেই বিউটি বোর্ডিং-এ পরষ্পর মুখ দেখার আশায় আমরা কজন।

বিউটি বোর্ডিংকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতির ইতিহাস জড়িত। বিউটি বোর্ডিং ও এর আড্ডার ইতিহাস চল্লিশের দশক থেকেই সুখ্যাতি লাভ করে। এই বাড়িটি ছিল জমিদার সুধীর চন্দ্র দাসের। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় জমিদার সুধীর চন্দ্রের পরিবার ভারতে চলে যায়। সেসময় এখানে ছিল একটি ছাপাখানা। এই ছাপাখানা থেকেই প্রকাশিত হত সোনার বাংলা নামের একটি পত্রিকা। সোনার বাংলা পত্রিকার ছাপাখানায় নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুও এসেছিলেন। দেশ ভাগের পর সোনার বাংলা পত্রিকাটির অফিস কলকাতায় চলে যায়। এরপর জমিদারের কাছ থেকে জায়গাটি বুঝে নেন নলিনী মোহন সাহা ও তার ভাই প্রহ্লাদ সাহা। সোনার বাংলা প্রেসের জায়গায় নলিনী মোহন সাহা তার বড় মেয়ের নামানুসারে বিউটি বোর্ডিং নামে একটি আবাসিক হোটেল ও রেস্তোঁরা স্থাপন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ প্রহ্‌লাদ চন্দ্র সাহার দুই ছেলে তারক সাহা ও সমর সাহার বর্তমানে বিউটি বোডিংয়ের মালিক।১৯৭১ সালে পাকহানাদারবাহিনী জেনে যায় বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির মানুষদের মিলনমেলা এই বোডিংয়ের কথা। ২৮ মার্চ এখানেই শহিদ হন বিউটি বোডিংয়ের মালিক প্রহ্লাদ সাহাসহ আরও ১৭ জন।

বিউটি বোর্ডিং এর ইতিহাস

১৯৪৯ সালে প্রহ্লাদ সাহা এবং তার ভাই নলিনী মোহন সাহা ১১ কাঠা জমির উপর এই বিউটি বোর্ডিং গড়ে তোলেন। নলিনী মোহনের বড় মেয়ে বিউটির নামানুসারে এই বোর্ডিংয়ের নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিউটি বোর্ডিংয়ে আড্ডা দিতেন কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাংবাদিক, চিত্রপরিচালক, অভিনেতা, গায়কসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কিংবদন্তি মানুষজন। এমনকি বিউটি বোর্ডিংয়ে এসেছিলেন নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু, পল্লীকবি জসিমউদ্দীন এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তৎকালীন সময়ে সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কিত আড্ডার আরো বেশকিছু স্থান থাকলেও সবার কাছে বিউটি বোর্ডিং পেয়েছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা।১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় এই বাড়ির মূল মালিক জামিদার পরিবার সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে চলে যায়। সুধীর চন্দ্র দাস এখানে একটি ছাপাখানা গড়ে তোলেন। তখন এই ছাপাখানা থেকে সোনার বাংলা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হত। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে সোনার বাংলা পত্রিকার অফিস কলকাতায় স্থানান্তরিত হয় তখন সুধীরচন্দ্র দাসের কাছ থেকে প্রহ্লাদ চন্দ্র সাহা ও তার ভাই নলিনীকান্ত সাহা এই জায়গাটি কিনে আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেন।

প্রহ্লাদ সাহা

যারা আড্ডার আসরে আসতেন

বিউটি বোর্ডিং যারা আড্ডার আসরে আসতেন এদের মধ্যে-আল মাহমুদ,আহমেদ ছফা,কবি শামসুর রাহমান,রণেশ দাশগুপ্ত,ফজলে লোহানী,আবু হেনা মোস্তফা কামাল,শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী,সমরজিৎ রায় চৌধুরী,ব্রজেন দাস,হামিদুর রহমান,বিপ্লব দাশ,আবুল হাসান,মহাদেব সাহা,হায়াৎ মাহমুদ,সত্য সাহা,এনায়েত উল্লাহ খান,আল মুজাহিদী,আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ,ড. মুনতাসীর মামুন,ফতেহ লোহানী,জহির রায়হান,খান আতা,আখতারুজ্জামান ইলিয়াস,সৈয়দ শামসুল হক,জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী,নির্মল সেন,ফয়েজ আহমদ,গোলাম মুস্তাফা,খালেদ চৌধুরী,সমর দাস,ফজল শাহাবুদ্দিন,সন্তোষ গুপ্ত,আনিসুজ্জামান,নির্মলেন্দু গুণ,বেলাল চৌধুরী,শহীদ কাদরী,ইমরুল চৌধুরী,সাদেক খান,ড. বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর,শফিক রেহমান,মহিউদ্দিন আহমেদ,আসাদ চৌধুরী,সিকদার আমিনুর হক,জুয়েল আইচ প্রমুখ।


বিউটি বোর্ডিং যাওয়ার উপায়

গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে বাহাদুর শাহ ভিক্টোরিয়া পার্ক চলে আসুন। বাহাদুর শাহ্ পার্ক পেরিয়ে এগিয়ে গেলেই বাংলাবাজার। আর বাংলাবাজার যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই বিউটি বোর্ডিংয়ের রাস্তা দেখিয়ে দেবে। চাইলে গুলিস্থান থেকে সরাসরি রিক্সা নিয়ে বিউটি বোর্ডিং যেতে পারবেন।

খাবার ও থাকার ব্যবস্থা



বিউটি বোর্ডিংয়ে রয়েছে নানা পদের খাবার আয়োজন। অল্প টাকার দেশী খাবার খেতে পারবেন।খাবার তালিকায় রয়েছে খিচুড়ি ৩০ টাকা। মুরগির মাংস ৫০ টাকা। খাসির মাংস ৮০ টাকা। সবজি ১০ টাকা। বড়া ১০ টাকা। চচ্চড়ি ১০ টাকা। পোলাও ৫০ টাকা। মুড়িঘণ্ট ৫০ টাকা।এছাড়া বাইলা, কাতলা, রুই, তেলাপিয়া, চিতল, পাবদা, ফলি, সরপুটি, শিং, কৈ, মাগুর, ভাংনা, চিংড়ি, চান্দা, আইড়, বোয়াল, কোড়ালসহ প্রায় সব ধরনের মাছ পাবেন এখানে।সকালের নাস্তা ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে, দুপুর ও রাতের খাবার ৫০ থেকে ৬০ টাকা হলে যথেষ্ট। তবে সরষে ইলিশ খেতে ১০০ টাকা গুনতে হবে।


বিউটি বোর্ডিংয়ে রয়েছে থাকার ব্যবস্থা। রয়েছে ২৫টি কক্ষ। এক বিছানায়ালা রয়েছে ১২টি কক্ষ, এক রাতের জন্য ভাড়া ২০০ টাকা। বাকিগুলো দুই বিছানায়ালা কক্ষ, ভাড়া ৩০০ টাকা।

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক, সীতাকুণ্ড-Botanical Garden & Eco-Park, Sitakunda
ঢাকার আবাসিক হোটেল তালিকা, নাম, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর-Bangabandhu Military Museum
বাঁশখালী ইকোপার্ক-Banshkhali Ecopark
গুটিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ-Gutia Baitul Aman Jame Mosque
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ ট্রেনের সময়সূচী-Dhaka to Mymensingh Train Schedule
ঢাকা থেকে সিলেট ট্রেনের সময়সূচী-Dhaka to Sylhet train Schedule
আনন্দ পার্ক রিসোর্ট-Ananda Park & Resort
ঢাকা থেকে ভোলা লঞ্চ সময়সূচী-Dhaka to Bhola launch schedule
ঢাকা থেকে বরিশাল বাস,লঞ্চ, গ্রীন লাইন ও বিমানের ভাড়া,সময়সূচি