স্বাধীনতা কমপ্লেক্স বা মিনি বাংলাদেশ -Shadhinata Complex
স্বাধীনতা কমপ্লেক্স বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের পাশে অবস্থিত একটি থিম পার্ক। এখানে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের দর্শনীয় স্থাপনাগুলো ছাড়াও রয়েছে সুউচ্চ রিভলভিং রেস্তোরাঁ বা ঘূর্ণায়মান হোটেল ও নানা ধরনের এমিউজমেন্ট রাইড। নতুন প্রজন্মের কাছে সংক্ষেপে সমগ্র বাংলাদেশকে পরিচিত করে তোলার জন্য এর গুরুত্ব অসাধারণ।
স্বাধীনতা কমপ্লেক্স চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের পাশেই অবস্থিত। এটির উত্তর-পূর্ব পাশে কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র অবস্থিত।
২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এটিকে স্বাধীনতা কমপ্লেক্স নামে নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর সমন্বয়ে থিম পার্ক হওয়ায় এটি মিনি বাংলাদেশ নামেও পরিচিত।
স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন, আহসান মঞ্জিল, সুপ্রিম কোর্ট, কৃত্রিম জলরাশি, কার্জন হল, কান্তজীর মন্দির, দরবার হল, বড়কুঠি, ছোটকুঠি, ছোট সোনা মসজিদ, লালবাগ কেল্লা, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, চিরন্তন পল্লি, ট্রেনের নিচে ব্রিজ, ছয়টি কিউচ (বসার স্টল), পাঁচটি পানির ফোয়ারা ও তিনটি কিডস জোন। এছাড়াও রয়েছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিল রেখে ৭১ মিটার বা ২৩০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতা টাওয়ার। স্বাধীনতা টাওয়ারে রয়েছে একটি রিভলভিং রেস্টুরেন্ট (ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ)। ২৩ তলা উচ্চতায় অবস্থিত এই রেস্তোরা থেকে এক নজরে পুরো চট্টগ্রাম শহর, কর্ণফুলী নদী এমনকি বঙ্গোপসাগরও দেখা যায়।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ, মহাখালী বাস-স্ট্যান্ড থেকে চট্টগ্রাম যেতে পারেন। এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা, সোহাগ টি আর প্রভৃতি এসি ও নন-এসি বাস চট্টগ্রাম যায় প্রতিদিন। ভাড়া পড়বে ৪২০ থেকে ১১০০ টাকা। চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে সিএনজি অটো রিক্সা ড্রাইভারকে কালুরঘাট মিনি বাংলাদেশ পার্ক নিয়ে যেতে বললেই হবে। ভাড়া স্থান ভেদে ১৫০ থেকে ২০০ নিবে। আপনি যদি সিটি বাসে করে যেতে চান তবে শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে কালুরঘাটের বাসে উঠলেই পার্কের সামনে এনে নামিয়ে দিবে। ভাড়া অবস্থান ভেদে ৭ থেকে ২০ টাকা।
কোথায় খাবেন?
যদি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার চেখে দেখতে চান তবে আপনার জন্য রয়েছে সুখবর! ঐতিহবাহী খাবারে চট্ট্রগ্রাম বেশ সমৃদ্ধ, আর এ জন্য চলে যেতে পারেন হোটেল জামান-এ। আর মেজবানি খেতে চাইলে চলে যেতে পারেন চকবাজারে অবস্থিত “মেজবান হাইলে আইয়্যুন” রেস্তোরায়। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে ছড়িয়ে আছে বেশকিছু ভাল মানের রেস্টুরেন্ট এদের মধ্যে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, হান্ডির নাম, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
প্রবেশ মূল্য ও সময়সূচি
সপ্তাহের সাত দিনই এ পার্ক খোলা থাকে। বেলা ১১টা থেকে রাত্রি ৯টা পর্যন্ত দিনব্যাপী নানাবয়সী দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত থাকে। প্রবেশ মূল্য ১৫০ টাকা।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী
স্বাধীনতা কমপ্লেক্স বা মিনি বাংলাদেশ রাতে থাকতে চাইলে আপনাকে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে আসতে হবে থাকার জন্য। চট্টগ্রামে নানান মানের হোটেল আছে । নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলে নাম ঠিকানা দেয়া হলোঃ
১. হোটেল প্যা রামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়াঃনন-এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, ডাবল ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ টাকা ও ১৮০০ টাকা ।
যোগাযোগ : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪।
২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়া : নন এসি : ১০০০ টাকা, নন এসি সিঙ্গেল। এসি : ১৭২৫ টাকা ।
যোগাযোগ: ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫।
৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম। একটি পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল । ভাড়া : ৭০০ টাকা থেকে শুরু । এসি ১৩০০ টাকা ।
যোগাযোগ: ০৩১-০৬১৪০।
৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম। যারা নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ । ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা ।
যোগাযোগঃ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২
৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। ভাড়া-২৩০০/৩৪০০ টাকা যোগাযোগ: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭।