ডুগডুগি গাছের উপকারিতা ও গুণাগুণ
ডুগডুগি গাছ অথবা বৈষ্ণব বেল হচ্ছে মুলত আমেরিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের ছোট ধরনের গাছ। এটি সেন্ট লুসিয়ার জাতীয় গাছ। ভারতে এটির প্রসার প্রকৃতিগতভাবে ব্যাপক আকারে হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক নাম: Crescentia cujete
ইংরেজি নাম: Calabash Tree
ডুগডুগি গাছ
ডুগডুগি খাটো অসরল বৃক্ষ, ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু, তরুণ কান্ড মসৃণ, অর্ধগোলাকার, ধূসর বর্ণযুক্ত। পত্র সরল, গুচ্ছাকারে ছড়ানো, অবৃন্তক, সরু বিডিম্বাকার থেকে বিডিম্বাকার দীর্ঘায়ত, প্রায় ২৮.০ x ৭.৫ সেমি, অখন্ড মূলীয় অংশ ক্রমাগত সরু, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র। পুষ্প কান্ড থেকে উত্থিত, একল বা জোড়ায় বিন্যস্ত, উগ্র গন্ধযুক্ত। বৃতি মূলীয় অংশে দ্বিখন্ডিত, ৫ টি দন্ত বিশিষ্ট।
দলমন্ডল ৪-৭ সেমি লম্বা, নলাকার ৫-খন্ডিত, মলিন সাদা বা ক্ষীণ সবুজ, শিরা লাল। পুংকেশর ৪ টি, দীর্ঘদ্বয়ী। গর্ভাশয় ১ কোষী, ডিম্বক গাত্রীয়,সংখ্যায় অনেক। ফল গোলাকার থেকে উপবৃত্তাকার, প্রায় ২০ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট, অবিদারী, বহিস্ত্বক শক্ত, মসৃণ।
চাষাবাদ ও বংশ বিস্তার: ডুগডুগি গাছটি উদ্যান লাগানো হয়। এদের ফুল ও ফল ধারণ মার্চ থেকে নভেম্বর মাসে ধরে। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা হয়।
বিস্তৃতি: আদি নিবাস মধ্য আমেরিকা, আমেরিকা ও অন্যান্য উষ্ণ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। বাংলাদেশের উদ্যানে চাষাবাদ হয়।
ডুগডুগি গাছের ভেষজ গুণাগুণ
আমাশয় সারাতে :
ডুগডুগি গাছের ফল প্রতিদিন খেলে রক্ত আমাশয়ে উপকার পাওয়া যায় ।
অতিসার সমস্যায় :
প্রথমে ডুগডুগি গাছের পাতা ও ছালের রস করে নিতে হবে । এবার এই রস সকাল বিকাল চিনি সহ সেবন করলে অতিসারে ভালো উপকার পাওয়া যাবে ।
অরুচি দূর করতে :
ডুগডুগি গাছের পাতার রস করে খেলে আস্তে আস্তে মুখের অরুচি ভাব কেটে যাবে।
অতিসারের সমস্যায় :
অতিসার রোগ হলে মানুষের রক্তের সাথে রক্ত বের হতে পারে। এই সমস্যায় ডুগডুগি গাছের ছাল বেটে মধু গরুর সাথে খেলে উপকার পাওয়া যায় ।
কাটা ক্ষত সারাতে :
ডুগডুগি গাছের ছাল প্রথমে মিহি গুড়া করে নিতে হবে । এরপর এই গুড়া থেতো করে লাগালে ক্ষত ভালো হয়ে যায় ।
গলা, মুখ ও জিভের ঘা সারাতে :
এই গাছের পাতা ও ছালের ক্বাথ কুলকুচা করলে গলা, মুখ ও জিভের ঘা ভালো হয় ।
বমি ভাব দূর করতে :
প্রথমে ডুগডুগি গাছের পাতার রস করে নিতে হবে । এরপর এটি মধু সহ সেবন করলে বমি বমি বন্ধ হয়ে যাবে ।