ভুঁই আমলার ভেষজ উপকারিতা ও গুণাগুণ
ভুঁই আমলা হচ্ছে Phyllanthaceae পরিবারের Phyllanthus গণের ভেষজ গুল্ম। অযত্নে বেড়ে ওঠা এই গুল্মটি এশিয়ার অনেক দেশে জন্মে থাকে। এটি ৫০ থেকে ৭০ সেমি অর্থাৎ ২০-২৮ ইঞ্চি লম্বা হয় এবং এর শাখা-প্রশাখা উপরে উঠে। এর ছাল মসৃণ এবং হালকা সবুজ। এর অনেকগুলি ফ্যাকাশে সবুজ ফুল ফুটে এবং পরে সেটা প্রায়ই লাল হয়ে যায়। এর ফল ছোট আকৃতির ও ছোট মসৃণ ক্যাপসুল মতো বীজ ধারণকারী।
বৈজ্ঞানিক নাম: Phyllanthus nirur
ইংরেজি নাম: gale of the wind, stonebreaker or seed-under-leaf
ভেষজ গুনাগুণ
ভুঁই আমলা প্রাচীনকাল থেকে ভেষজ ঔষুধ হিসাবে ঘরোয়াভাবে বা কবিরাজি পদ্ধতিতে তৈরি করে আসছে। শরীরের নানা রোগের চিকিৎসায় ভুঁই আমলা ব্যবহার হয়ে থাকে।
১. দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগলে এই পাতার রস সারিয়ে তুলতে পারে। ঔষুধ পথ্য কিছুতেই কিছু না হলে সকালে খালি পেটে খান ভুঁই আমলার রস বা এর বীজ বাটা। নিয়মিত ৫-৬ দিন খেলেই মিলবে ফল।
২. শ্বাস কষ্ট হলে ভূঁই আমলা গাছের মূল থেঁতলিয়ে রস করে চার চামচ এবং চিনি এক চামচ মিশিয়ে খেলে উপশম হয়।
৩. শরীরের দুর্বলতা কমাতে ভুঁই আমলা কার্যকরী। রোজ দুপুরে খাওয়ার পর ৩-৪ চামচ এই পাতার রস নিয়মিত ৭-৮ দিন খেলে কাটবে দুর্বলতা।
৪. হাড় ভাঙার যন্ত্রনা এবং শরীরে যেকোনো জায়গায় হাড়ের ব্যাথায় উপশম পেতে এই পাতার রসের সাথে নুন মিশিয়ে ব্যাথার জায়গায় প্রলেপ দিন। মিলবে ব্যাথার উপশম।
৫. ভুঁই আমলা শরীরে যেকোনো ক্ষত বা ঘা, নকখুনি সারাতে বিশেষ কার্যকরী। এই গাছের সাদা আঠা ঘায়ের জায়গায় নিয়মিত লাগালে সারবে ক্ষত বা ঘা।
৬.আমাশয় ও উদরাময়ের রোগে জন্য ভুঁই আমলা গাছের কচি পাতার রস ১০ চামচ পরিমাণে রোজ দু’বার অর্থাৎ সকাল এবং সন্ধ্যায় খেলে উভয় রোগ দূর হয়।
৭. পেটের যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধান পেতে প্রতিদিন দুবেলা করে ৪-৫ টেবিল চামচ ভুঁই আমলা পাতার রস খান। দূর হবে সব সমস্যা।
৮.. জন্ডিস রোগের ওষুধ হিসাবে এই ভুঁই আমলা বিশেষ কার্যকরী। তাই জন্ডিস রোগীদের জন্য ১/২ কাপ এই পাতার রসের সাথে ১/২ কাপ গরুর দুধ মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যা খেলে কমবে এই রোগ।
৯. ভূঁই আমলা গাছের সাদা আঠা শরীরের উপরের ত্বকের ক্ষতে দিলে অবশ্যই ঘা সারবে। এটি ক্ষতের জন্য বিখ্যাত একটি ওষুধ।
১০. এছাড়াও এটি চোখের সমস্যা দূর করতে বেশ কার্যকরী। চোখের ফোলা, ঘা, ব্যাথা বা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দূর করতে তামার পাত্রে এই পাতা থেঁত করে তাতে নুন মিশিয়ে চোখের পাতায় প্রলেপ দিন। ৭-৮ দিন দিলেই কমবে চোখের সমস্যা।