
সুলতানা কামাল খুকী এর জীবনী - Biography of Sultana Kamal Khuki
ডাক নাম: খুকী
বাবার নাম: দবিরউদ্দিন
জন্ম: ১০ ডিসেম্বর ১৯৫২
ধর্ম: ইসলাম
জন্মস্থান: বকশীবাজারে, ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান
জাতীয়তা: বাংলাদেশি
নাগরিকত্ব: বাংলাদেশি
পেশা: ক্রীড়াবিদ
দাম্পত্য সঙ্গী: শেখ কামাল
সুলতানা আহমেদ খুকী হলেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য ক্রীড়াবিদ। হার্ডলস, উচ্চলাফ এবং বিস্তৃত লাফ - এই তিন ক্ষেত্রেই স্বাধীনতার আগে এবং পরে তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে তিনি সাধারণ্যে সুলতানা কামাল নামে পরিচিত লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তাকে ঘাতকরা গুলি করে হত্যা করে।
জন্ম ও শিক্ষা
সুলতানা কামালের জন্ম ১৯৫২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বকশীবাজারে। তার বাবা দবিরউদ্দিন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীফ ইঞ্জিনিয়র।
১৯৬৭ সালে তিনি মুসলিম গার্লস স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তৎকালীন গভ: ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা) ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে তিনি কৃতিত্বের সাথে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এরপর অনার্স পাশ করে ভর্তি হন এম এ ক্লাসে। এমএতে লিখিত পরীক্ষা দেন। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার আগেই ঘাতকদের বুলেটে তিনি নিহত হন।
ক্রীড়াবিদ জীবন
১৯৬২-৬৩ সালে ঢাকার বকশীবাজার মুসলিম গার্লস স্কুলে পড়াকালীন আন্তঃবিদ্যালয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে শুরু এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অ্যাথলেটিক ট্র্যাক দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। অ্যাথলিট হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য অসাধারণ। হার্ডলস, হাইজাম্প এবং ব্রডজাম্প ছিল তার প্রিয় ইভেন্ট। এই তিন ইভেন্টে বরাবরই তিনি দেশে ও বিদেশের মাটিতে অসামান্য পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন।
‘অলইন্ডিয়া রুরাল গেমসে’ লাভ করেন রৌপ্যপদক (১৯৭৩)। ক্রীড়া জগতে অসামান্য অবদানের জন্য ডাকসু তাঁকে বিশেষ পদকে সম্মানিত করে (১৯৭৩)। ১৯৭৩ সালে জাতীয় ক্রীড়ালেখক সমিতি কর্তৃক তিনি সেরা অ্যাথলিটও নির্বাচিত হন। তাছাড়াও নিজ কলেজের শ্রেষ্ঠ অ্যাথলিট পুরস্কার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা অ্যাথলিটের পুরস্কার, ব্যাডমিন্টন পুরস্কারসহ আরো অনেক সাফল্য ছিল তার ঝুলিতে। ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পরে তাকে একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক ও ক্রীড়ালেখক সমিতির পুরস্কারেও ভূষিত করা হয়। এসব পুরস্কার থরে থরে সাজানো ছিল ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক বাড়ির একটি কক্ষে। আফসোস, ঘাতকরা তাকে মারার পাশাপাশি তার অর্জনগুলোকেও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।
বিয়ে
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম ফরিদপুরের কোনো এক পার্লামেন্ট সদস্যকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠান সুলতানার বাবা দবিরউদ্দিনের কাছে। তারপর দু পরিবারের সম্মতিতে কামাল ও সুলতানার বিয়ে সম্পন্ন হয়। সুলতানা আহমেদ, ১৯৭৫ এর ১৪ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বড় ছেলে শেখ কামালের বউ হয়ে আসেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারে। এরপর থেকেই তিনি সুলতানা কামাল নামে পরিচিত।
মৃত্যু
১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সদস্যের হাতে স্বামী শেখ কামালসহ পরিবারের অন্যান্য ১৭ সদস্যদের সাথে খুন হন।