-631369bce77e4.webp)
কালোমাথা টিয়া- Grey-headed Parakeet
কালোমাথা টিয়া সিট্টাকুলিডি (Psittaculidae) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত সিট্টাকুলা (Psittacula) গণের এক প্রজাতির টিয়া। এরা মূলতদক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় পাখি। অন্যসব টিয়া প্রজাতির মত এরাও খুব বেশি পরিমাণে স্থানিক। এরা মেটেমাথা টিয়া নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Grey-headed Parakeet বা Finsch's Parakeet
বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula finschii
বর্ণনাঃ
পুরুষ পাখি লম্বায় ৩৬ সেন্টিমিটার, লেজ ২৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখি লম্বায় লেজসহ ২২ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে সামান্য তফাৎ লক্ষ্য করা যায়। তবে উভয় পাখির মাথা কালচে বা স্নেট কালো। মাথায় গাঢ় ধূসর অংশকে ঘিরে কালো দাগ। মাথার পেছনটায় নীলচে-সবুজ। পিঠ গাঢ় সবুজ। লেজ সবুজাভ হলুদ। মোটা লেজের পালক অর্ধেকটাই হলদেটে। দেহতল হালকা সবুজ। ঠোঁটের উপরের অংশ লাল, ডগা হলদেটে। নিচের অংশ হলদেটে। চোখের তারা হলুদ। পা কালচে। পুরুষ পাখির ডানার উপর খয়েরি-লাল বর্ণের পট্টি রয়েছে, যা স্ত্রী পাখির নেই। এ ছাড়াও পুরুষ পাখির লেজ স্ত্রী পাখির তুলনায় লম্বা।
স্বভাবঃ
এদের ধারালো ও শক্ত ঠোঁট রয়েছে যার দ্বারা সরু তার কামড়ে কেটে ফেলতে পারে। ওরা এখন অসুলভ দর্শন হয়ে পড়েছে। অথচ ওরা দেশের আবাসিক পাখি। স্লিম গড়ন। নজরকাড়া রূপ। শাল এবং মিশ্র-চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এক সময় লোকালয়ে কম-বেশি দেখা যেত, হালে তেমন একটা দেখা যায় না। এরা একাকী কিংবা ছোট-বড় দলে বিচরণ করে।
প্রজননঃ
প্রজনন মৌসুম মার্চ-এপ্রিল। গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২১-২২ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ৪০-৪৫ দিন।
খাদ্য তালিকাঃ
প্রধান খাবার ছোট ফল, শস্যবীজ, ফুলের মধু, গাছের কচিপাতা ইত্যাদি।
বিস্তৃতিঃ
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস ও চীন কালোমাথা টিয়ার বৈশ্বিক বিস্তৃতি।
অবস্থাঃ
প্রায় ১৬ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটারএলাকা জুড়ে এদের আবাস। গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশঙ্কাহীন বলে ঘোষণা করেছে। স্লেটমাথা টিয়ার সাথে কালোমাথা টিয়ার অনেক মিল আর এ দুজনে মিলে একটি মহাপ্রজাতির (Super-species) সৃষ্টি করেছে।