বাংলাদেশের সেরা ১০ জন গায়ক-Top 10 singers in Bangladesh
Top 10 singers in Bangladesh

বাংলাদেশের সেরা ১০ জন গায়ক-Top 10 singers in Bangladesh

গান এন্টারটেইনমেন্টের একটি অংশ যা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। মিউজিক পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। একেকজন একেক ধারার মিউজিক পছন্দ করে। গান আমাদের মনে আনন্দের সৃষ্টি করে এবং মনের দুঃখ দূর করে দেয়। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি অনেক বড় মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি যা থেকে মানুষ আত্মতৃপ্তির পাশাপাশি নিজের ক্যারিয়ার পরিচালনা করছে। এমন অনেক কণ্ঠশিল্পী আছে শুধু গান গেয়ে হাজার হাজার মানুষের মন জয় করেছে। আজ আমরা আপনাদের সামনে বাংলাদেশের সেরা ১০ জন গায়ক সম্পর্কে আলোচনা করবো। যারা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে তাদের সুর এবং কন্ট্রিবিউশন দিয়ে আরও সমৃদ্ধ করেছে। কথা না বাড়িয়ে চলুন মূল আলোচনায় শুরু করা যাক।

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে গায়কের অভাব নেই। তবে এসকল গায়কের মধ্যে এমন কিছু লিজেন্ডারী গায়ক আছেন যাদের পুরো দেশ এক নামে চেনে। চলুন তাদের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে আসি।

১.এন্ড্রু কিশোর

এন্ড্রু কিশোরের পুরো নাম এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ। তিনি ১৯৫৫ সালে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী। দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি এবং চলচিত্রে প্লেব্যাক কণ্ঠ দেওয়ার জন্য তাকে প্লেব্যাক সম্রাট উপাধি দেওয়া হয়। 

তার অন্যান্য কন্ট্রিবিউশনের মধ্যে বেশ কিছু ফেমাস গান আছে যা আজো মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। তার “হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস”, “ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে”, “আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি”, “আমার বুকের মধ্যে খানে”, “আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন” ইত্যাদি গান গুলো ইতিহাসের পাতায় এবং ভক্তদের মনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। 

তিনি চলচিত্রে প্লেব্যাক করার কারনে স্বীকৃতি হিসেবে মোট ৮ বার জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার এবং ৫ বার সেরা পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এই গুনি শিল্পী ২০২০ সালে পরলোক গমন করেন।

২.সাবিনা ইয়াসমিন

সাবিনা ইয়াসমিন একজন সুপরিচিত বাংলাদেশী প্লেব্যাক গায়িকা। তিনি 1970 এর দশকে মিডিয়া সেক্টরে প্রবেশ করেন। তিনি 13 বার "সেরা মহিলা প্লেব্যাক গায়কের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার" জয়ের রেকর্ড করেছেন। তিনি এখনও 10,000 টিরও বেশি গান গেয়েছেন, যা একটি রেকর্ড।

সাবিনা ইয়াসমিনের প্রথম প্লেব্যাক গান ছিল ‘শুধু গাওয়া ভূমিকা’। গানটি দারুণ হিট হয়েছিল। তিনি পরে ঢালিউডকে অনেক জনপ্রিয় গান দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন যেমন "সোব কোটা জানালা খুলে দানা", "শুধু গান গেয়ে পরিচয়", "তুমি ইয়ে আমার কবিতা", "এই মন তোমাকে দিলম" ইত্যাদি।

‘জীবন তো নেভা’, ‘ওরা এগারো জান’, ‘আবার তোরা মানুষ হো’, ‘গোলাপী একতা ট্রেন’ প্রভৃতি জনপ্রিয় অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি গায়ক।

৩.রুনা লায়লা

রুনা লায়লা শুধু বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি 1960 সালে পূর্ব পাকিস্তানের সময় সঙ্গীত শিল্পে প্রবেশ করেন। গজলের সঙ্গে ফিউশন ও পপ গান গেয়েছেন তিনি।

রুনা লায়লা ‘দ্য রেইন’, ‘দেবদাস’, ‘তুমি আশা বোলে’, ‘দুর্ঘটনা’, ‘অন্তর অনটোর’, ‘প্রিয়া তুমি সুখী হও’-এর মতো অনেক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন। এই সব প্লেব্যাক তাকে বাংলাদেশ অর্জনে সাহায্য করেছে। সেরা মহিলা ব্যাকিং গায়কের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার "সাতবার।

তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দি, পাঞ্জাবি, ইতালীয় ইত্যাদি সহ 17টিরও বেশি ভাষায় গান গেয়েছেন যা প্রমাণ করে যে তার অপার প্রতিভা এবং এত জনপ্রিয়তার কারণ।

৪.আইয়ুব বাচ্চু

আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তিনি একজন রক ব্যান্ড শিল্পী ছিলেন কিন্তু তিনি কয়েকটি জনপ্রিয় একক অ্যালবাম তৈরি করেছিলেন। বন্ধুর গীটার দিয়ে গীটার বাজানো শেখা আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশের সবথেকে প্রভাবশালী গীটার বাদক। 

তার পুরো নাম আইয়ুব বাচ্চু রবিন। ক্যারিয়ারের শুরুতে “আগলি বয়েজ” নামক ব্যান্ড দল প্রতিষ্ঠিত করেন। এরপর নগর বাউল এবং সোলসে যোগদান করে তার সংগীত জীবন পরিচালনা করেন। তবে ১৯৯১ সালে তিনি তার নিজের ব্যান্ড “লিটল রিভার ব্যান্ড” যা পরবর্তীতে “লাভ রান্স ব্লাইন্ড” বা এলআরবি নামে পরিচিতি পায় তা প্রতিষ্ঠিত করেন। 

একজন গীটারবাদক এবং সংগীতশিল্পী হিসেবে তিনি অনেক সন্মাননা পেয়েছেন। এদের মধ্যে ছয়টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, একটি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস, বাচসাস পুরস্কার এবং টেলে সিনে আজীবন সম্মাননা উল্লেখযোগ্য। ২০১৮ সালে দীর্ঘদিন ফুসফুসে পানি জমা রোগ নিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। চট্টগ্রাম শহরে তার স্মৃতিতে রুপালী গীটার নামক ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে।

৫.আসিফ আকবর

আসিফ আকবর ১৯৭২ সালে কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য পপ সংগীত শিল্পী। সম্প্রতি তিনি তার অভিনয় প্রতিভার প্রকাশ করেছেন ২০১৯ সালের গহীনের গান নামক চলচিত্রের মাধ্যমে। 

তার সর্বপ্রথম অ্যালবাম ও “প্রিয়া তুমি কোথায়” যা বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি তার সংগীত জীবন শুরু করেন ১৯৯৮ সালে এবং এখন পর্যন্ত তার ৩০ টি একক অ্যালবাম রিলিজ হয়েছে। 

তিনি সন্মাননা হিসেবে দুই বার জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার, ছয়বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার এবং সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন। একক অ্যালবাম বাদেও তিনি অন্যান্য শিল্পীর সাথে ডুয়েট গেয়েছেন। এছাড়া তিনি চলচিত্রে প্লেব্যাক হিসেবেও কাজ করেছেন।

৬.তাহসান রহমান খান

তিনি একাধারে শিক্ষক, লেখক, সংগীত শিল্পী, মডেল, উপস্থাপক, গিটারিস্ট এবং অভিনেতা। মিডিয়া জগতে তাকে সবাই তাহসান নামেই চেনে। ১৯৭৯ সালে তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। 

তাহসান সাধারণত স্লো পপ সং গেয়ে থাকেন যা রোমান্টিক সং হিসেবে পুরো দেশে অনেক পপুলার। তিনি এবং তার কিছু বন্ধু মিলে তারা ১৯৯৮ সালে ব্ল্যাক নামক একটি ব্যান্ড টিম তৈরি করেন। পরে অবশ্য তিনি ব্ল্যাক ছেড়ে দিয়ে একক অ্যালবামের দিকে মুভ করেন এবং আশানুরূপ সারা পায়। 

গান করা বাদেও তিনি অনেক ভালো অভিনয় করে এবং বাংলাদেশে তার নাটক অনেক পপুলার। সম্প্রতি তিনি মুভি এবং ওয়েব সিরিজে অভিনয় করা শুরু করে দিয়েছেন। 

৭.সুবীর নন্দী

সুবীর নন্দী ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত গায়ক। তিনি 1972 সালে তার প্রথম গান "জোর কেউ ধুপ জলে দে" রেকর্ড করার মাধ্যমে সঙ্গীত মিডিয়ায় যোগদান করেন।

সুবীর নন্দী অনেক জনপ্রিয় গান গেয়েছেন যেমন "আমার দুতি চোখ", "হাজার মনের কথা", "একতা চিল সোনার কোন", "কোন তোমাকে ভালো", "আমি বৃষ্টি কোশ", "পাহাড় পাহাড় কান্না দেখে"। ‘ও আমার’ ‘উড়াল পাখি রে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’ প্রভৃতি গানের বৈচিত্র্য তার গানকে অমর করে রেখেছে।

চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সুবীর নন্দী। তিনি "দেবদাস", "মহানায়ক", "আমাজন", "শ্রাবণ মেঘের দিন", "সস্থি" ইত্যাদি জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। এই প্লেব্যাকগুলি তাকে "সেরা পুরুষ প্লেব্যাক গায়কের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার" জিততে সাহায্য করেছে।

৮.ইমরান মাহমুদুল

ইমরান মাহমুদুল হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী গীতিকার ও নেপথ্য গায়ক, যিনি অনেকগুলো ভিন্ন অ্যালবাম ও চলচ্চিত্রের জন্য গান পরিবেশন করেছেন। তিনি ২০০৮ চ্যানেল-আই সেরা কণ্ঠে প্রথম-রানার্স আপ হয়েছিলেন। তিনি বসগিরি (২০১৬) চলচ্চিত্রের "দিল দিল দিল", পোড়ামন ২ (২০১৮) চলচ্চিত্রের "ওহে শ্যাম", এবং বিশ্বসুন্দরী (২০১৯) চলচ্চিত্রের "তুই কি আমার হবি রে" গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গায়ক বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।

৯.জেমস

জেমস এর পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম। তিনি রাজশাহীর নওগাঁ জেলায় ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। জেমসকে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে অবদানের জন্য গুরু বলে ডাকা হয়। তিনি একাধারে সুরকার, গীতিকার, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী, গিটারিস্ট এবং বলিউড প্লেব্যাক কণ্ঠশিল্পী। 

তিনি নগর বাউল (পূর্বে ছিল ফিলিংস) নামক ফেমাস রক ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি অনেকগুলো একক অ্যালবাম নিয়ে কাজ করেছেন এবং একক অ্যালবামে তার আগ্রহ সবসময় বেশি ছিল। জেমসকে বাংলাদেশে সাইকেডেলিক রক এর প্রবর্তক বলা হয় কারণ তার ব্যান্ড ফিলিংস এই ধারার রক সংগীত নিয়ে কাজ করে। 

তিনি গীটার বাদেও আরও ৬ টি বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শী। তিনি জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার বাদেও মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার এবং সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস লাভ করেন। বাংলাদেশে রক মিউজিক বিকাশে তার ভূমিকা অস্বীকার করা সম্ভব নয়।

১০.হাবিব ওয়াহিদ

হাবিব তার বিশেষ ধারার মিউজিক পরিচালনার জন্য সবার কাছে পরিচিত। তিনি লোকগীতি গানের সাথে টেকনো এবং ওয়েস্টার্ন বিটের সমন্বয় করে যে গানের ধারার প্রবর্তন করে তা সারা দেশে ব্যাপক পপুলারিটি পায়। 

হাবিব জনপ্রিয় পপ তারকা ফেরদৌস ওয়াহিদের সন্তান। মূলত তার বাবার থেকেই তার এই জগতে প্রবেশ করা। তার সর্বপ্রথম এবং সফল অ্যালবামের নাম “কৃষ্ণ” যা প্রথমে লন্ডনে রিলিজ হয় এবং একই নামে বাংলাদেশে রিলিজ হয়।

এরপর তিনি ১৩ টির মত অ্যালবাম রিলিজ করে এবং বেশ কয়কেটি সিঙ্গেল ট্র্যাক রিলিজ করে। দেশের তরুন সমাজের কাছে তার গান অনেক জনপ্রিয়।

চিত্রা ডলফিন-Pantropical spotted dolphin
বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীসমূহ
বোতল-নাক ডলফিন-Indo-Pacific bottlenose dolphin
বম উপজাতির পরিচিতি - Introduction to the Bawm tribe
পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের নতুন সময়সূচী-New schedule of Panchagarh Express train
মুন্ডা উপজাতির পরিচিতি - Introduction to Munda Tribe
দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেল - Diabari to Agargaon Metrorail
লাল উড়ন্ত কাঠবিড়ালি-Red giant flying squirrel
ফেসবুকে ভূয়া আইডি খুলে মেয়ে সেজে প্রেমের অভিনয়,জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ ২ র‌্যাবের জালে
উপজাতিদের খাবারের তালিকা - Food list of tribes