তঞ্চ্যঙ্গা উপজাতির পরিচিতি - Introduction to the Tanchyanga tribe
Tanchangya people

তঞ্চ্যঙ্গা উপজাতির পরিচিতি - Introduction to the Tanchyanga tribe

তঞ্চঙ্গ্যা, তনচংগা, তনচংগ্যা, তংচংগ্যা অথবা তঞ্চংগ্যা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যার দিক থেকে এদের স্থান ৫ম। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এদের জনসংখ্যা ৩১ লাখ ১৬৪। 

আবাস

পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় পাহাড়ি জাতির মতো তঞ্চঙ্গ্যাদের আবাসভূমিও গড়ে ওঠে নদী সংলগ্ন উপত্যকায়। পার্বত্য চটগ্রামের রাঙামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার রইস্যাবিলি,বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়ার আশেপাশের এলাকায় ও কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনার আশেপাশের এলাকায়, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায়, কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্যের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলেও তঞ্চঙ্গ্যাদের আবাসভূমি রয়েছে। মায়ানমারের আরাকান এবং চিন রাজ্য এবং ইয়াংগুন শহরেও তঞ্চঙ্গ্যা রয়েছে। সেখানে তারা ‘দোইনাক’ নামে পরিচিত।

উৎপত্তি

নৃতাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় তঞ্চঙ্গ্যারা মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর লোক। তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী ভারতীয় আর্য ভাষার অন্তর্গত পালি, প্রাকৃত, আদিবাংলা ভাষায় কথা বলে। তঞ্চঙ্গ্যাদের স্বভাব বেশ নম্র। তারা কিছু লাজুক স্বভাবেরও বটে।

ভাষা ও গোত্র

তাদের ভাষা ভারতীয় আর্য ভাষার অন্তর্গত  পালি,  প্রাকৃত, সদভুত বাংলা ভাষা।

তঞ্চঙ্গ্যাদের গোত্র বা গছাভেদে ভাষার উচ্চারণের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য বিদ্যমান। তারা ১২টি গোত্র বা গছায় বিভক্ত। এগুলি হলো: মোগছা, কারওয়াগছা, ধন্যাগছা, মেলংগছা, লাঙগছা, লাপুইসাগছা, অঙয়োগছা, মুলিমাগছা, রাঙীগছা, ওয়াগছা, তাশীগছা।


পোশাক ও অলংকার

পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্য নারীদের মধ্য থেকে স্বকীয় পোশাকে তঞ্চঙ্গ্যা নারীকে সহজে পৃথক করা যায়। নান্দনিক কারুকাজ করা চুলের কাঁটা ও চেইন সজ্জিত খোঁপাকে বেষ্টনী দিয়ে মাথায় খবং (পাগড়ি) বাঁধা তঞ্চঙ্গ্যা নারীর গায়ে থাকে ফুলহাতা জামা বা কেবোই। এই জামার কাঁধে ও হাতের প্রান্তে নানা রঙের সুতায় ফুল বোনা থাকে। পরনে থাকে সাতরঙা পিনুইন বা পিনন। এর দুই প্রান্তে লম্বালম্বি কালো রঙের ডোরা, মাঝখানে দুই প্রান্তে লাল রঙের ডোরা এবং মধ্যে মিশ্রিত সুতার ডোরা। পিননকে তারা দুই প্রান্তে কারুকার্যখচিত সাদা ফাদুরী বা ফাদুই (কোমর বন্ধনী) দিয়ে পরিধান করে। নারীদের ঐতিহ্যবাহী অলংকারের মধ্যে রয়েছে কানে রাইজ্জু ও জংগা, কবজিতে বাঘোর, কিয়াইংশিক, বাহুতে তাজ্জুর, গলায় চন্দ্রহার, সিকিছড়া প্রভৃতি। পুরুষরা ঐতিহ্যগতভাবে ধুতি ও ফুলহাতা জামা পরে।

পেশা

তঞ্চঙ্গ্যাদের পেশা মূলত কৃষি। বিভিন্ন পাহাড়ে, টিলায় বা উঁচু ভূমিতে প্রস্তুত করা বাগান-বাগিচা বৃক্ষ রোপণ করেও কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করে। অতীতে তারাও ব্যাপকভাবে জুম চাষ করতো যা বর্তমানেও অব্যাহত, তবে তুলনামূলকভাবে অনেকটা কম। তঞ্চঙ্গ্যাদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার খুব বেশি নয়। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কেউ কেউ চাকরি করে।

বিবাহ

তঞ্চঙ্গ্যারা বিয়েকে সাঙ্গা বলে। তিন ধরনের বিয়ে হয়। কন্যার গৃহে বরকে নিয়ে আয়োজিত হয় সাধারণ বিয়ে। প্রেমিক-প্রেমিকা গোপনে বিয়ে করলে তাকে বলা হয় ‘ধে যানা সাঙ্গা’। তৃতীয় ধরনের বিয়েকে বলা হয় রানীমেলার সাঙ্গা বা বিধবা বিয়ে।

ধর্ম

দৈংনাকরা যে বৌদ্ধ তা ‘হিসটোরি অব বার্মা’ রচয়িতা তৎকালীন আরাকান বিভাগের কমিশনার ফেইরী উল্লেখ করেছেন। তাদের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্ম শাস্ত্র ত্রিপিটক ছিল। চাকমারাও বৌদ্ধ। শত অত্যাচারিত ও নিপীড়িত হলেও তারা আরাকান ত্যাগের সময় বৌদ্ধ ধর্মকে ত্যাগ করেনি। তাদের পরবর্তী ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তারা আরাকান ত্যাগ করার প্রাক্ক্বালে ধর্ম‌শাস্ত্র সঙ্গে বহন করেছিল। কিন্তু মূল ত্রিপিটক দুষ্প্রাপ্যতার কারণে অথবা তাদের কাছে না থাকাতে তারা মূল ত্রিপিটক সঙ্গে নিতে পারেনি। দৈনন্দিন কাজে বা মৃত্যু, বিবাহ প্রভৃতি সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহারোপযোগী প্রয়োজনীয় সূত্র মূল ত্রিপিটক হতে লিপিবদ্ধ করে নেয়।

পাতিশিয়াল-Golden Jackal
পাল্লার কাঠবিড়ালি- Pallas's squirrel
যুক্তরাষ্ট্রের তরুণীকে বিয়ে করা বরিশালের সেই রং মিস্ত্রি মারা গেছেন!
বাংলাদেশের পাঁচ তারকা হোটেলের তালিকা
টিউবওয়েলের পানি আর গাছের শিড়ক বাকল খেলে রোগ, দূর হচ্ছে বালা মছিবত
ছোট পাতা-নাক বাদুড়- Least Leaf-nosed Bat
রয়েল বেঙ্গল টাইগার,বাঘ-Bengal tiger
বিশ্বের সেরা ১০ মুসলিম স্কলার
বাংলাদেশের সেরা ১০ পলিটেকনিক
ঢাকার কোথায় কাঁকড়া পাওয়া যায় - Where can crabs be found in Dhaka?