Golden Jackal
পাতিশিয়াল হচ্ছে ক্যানিডি পরিবারের এক প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।
ইংরেজি নাম: Golden Jackal
বৈজ্ঞানিক নাম: Canis aureus
বর্ণনাঃ
পাতিশিয়ালের আকার আমাদের পোষা কুকুরের মতোই। লেজটি গুটিয়ে রাখে অর্থাৎ নিচের দিকে নামানো থাকে। মাথা লম্বাটে, হাঁটে পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে, পেছনের পায়ে ৪টি ও সামনের পায়ে ৫টি আঙুল। বুক ও পেট কিছুটা ফ্যাকাশে, কখনও সাদা। এদের দৈর্ঘ্য সর্বাধিক ৮০ সেমি, লোম ধূসর-বাদামি, লেজ ঝোপালো। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার সোনালি পাতিশিয়াল ৬০ সেমি লম্বা ও ৪৫ সেমি উঁচু, ওজন ৭-১৪ কেজি। রং ধূসর-হলুদ, পিঠ কালো।
স্বভাবঃ
শিয়াল নিশাচর। তবে কখনো খুব সকালেও দেখা যায়। পেটে ক্ষুধা থাকলে দিনের বেলায়ও বের হয়। সন্ধ্যায় শিয়াল ডেকে ওঠে। দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝোপের ভেতর, মাটির গর্তে লুকিয়ে পড়ে। সাধারণত দলে চলে, একাকীও ঘুরতে দেখা যায়। এরা সর্বভূক। হায়নার তুলনায় শিয়ালের চিৎকার অনেক বেশি আতঙ্কজনক। সাধারণত সন্ধ্যার পরপরই এরা দলবদ্ধভাবে চিৎকার শুরু করে। খেঁকশিয়ালের মতো এটিরও লেজের গোড়ায় একটি গ্রন্থি আছে এবং তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
প্রজননঃ
ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রজনন ঘটে, সঙ্গমের সময়কাল ২৬-২৮ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এদের গর্ভধারণকাল ৬২ দিন। শাবকের সংখ্যা ৩-৮। বাচ্চাগুলি অন্ধ জন্ম গ্রহন করে। ছানাগুলি ৮-১১ দিন পরে চোখ খোলা । ১০-১৩ দিন পর কান খাড়া হয়। জন্মের ১১ দিনে তাদের দাঁত ফেটে যায়, এবং প্রাপ্তবয়স্কদের দাঁতের বিস্ফোরণ ৫ মাস পর সম্পন্ন হয়। ছানাগুলি নরম পশম নিয়ে জন্মায় যার রঙ হালকা ধূসর থেকে গাঢ় বাদামী পর্যন্ত হয়। এক মাস বয়সে, তাদের পশম ঝরানো হয় এবং কালো দাগ সহ একটি নতুন লাল রঙের খোসা দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। ছানাগুলি ১৫-২০ দিন বয়সে মাংস খেতে শুরু করে।
খাদ্য তালিকাঃ
প্রধান খাবার পোকামাকড়, পাখি, ছোট আকারের মেরুদণ্ডী প্রাণী, টিকটিকি, মৃতদেহ, শাকসবজি, আখের রস, ভুট্টা ইত্যাদি।
বিস্তৃতিঃ
এই জন্তুরা আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের শুষ্ক ও উন্মুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দা। যশোর, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, রংপুর, সিতাবগঞ্জ ও জয়পুরহাটের মতো আখ আবাদি এলাকায় পাতিশিয়াল বেশি দেখা যায়।
অবস্থাঃ
পাতিশিয়ালের ১৩টি উপপ্রজাতি রয়েছে। আইইউসিএন এটিকে সবচেয়ে কম বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রেখেছে, কারণ বিভিন্ন স্থানে এর বিস্তার রয়েছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।