
অ্যাবোরশন আসলে কী? কারা এই ঝুঁকিতে বেশি থাকেন?
অনেক নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভপাত বা অ্যাবোরশন হওয়ার ঘটনা দেখা যায়। গর্ভধারণের পর থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের বাচ্চা আপনা-আপনি নষ্ট হয়ে যাওয়াকে বলে গর্ভপাত। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভপাত হয় গর্ভধারণের প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে। এর মধ্যে ৭ থেকে ১২ সপ্তাহের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়, অর্ধেক গর্ভধারণই গর্ভপাতের শিকার হয়। অনেক সময় গর্ভধারণের পরপরই গর্ভপাত হয়ে যায়। বহু ক্ষেত্রে মহিলা জানেন না যে তিনি গর্ভধারণ করেছিলেন অথবা তাঁর প্রেগন্যান্সি এসেছিল। ১০০ গর্ভবতী মহিলার মধ্যে গর্ভধারণের পর ১০ থেকে ২০ জনের এমনি এমনিই গর্ভপাত হতে পারে।
গর্ভপাতের ঝুঁকি কোন বয়সে বেশি ?
অল্প বয়স্ক মহিলাদের তুলনায় ৩৫ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি।
৩৫ বছর বয়সে, মহিলারা গর্ভধারণ করলে প্রায় ২০ শতাংশ ঝুঁকি থেকে যায় গর্ভপাত হয়ে যাওয়ার।
বয়স যদি ৪০ ছুঁয়ে ফেলে, তবে গর্ভপাতের ঝুঁকি নিঃসন্দেহে বেড়ে যায়।
বয়সের কাঁটা ৪৫ স্পর্শ করলে ঝুঁকি বেড়ে হয় ৮০ শতাংশ ।
অনেক মহিলাই গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন। তার সঙ্গত কারণও রয়েছে। পড়াশোনা, কেরিয়ার গঠন সহ নানা কারণেই এখন মেয়েরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন ৩০ এ পৌঁছে। কিংবা মাতৃত্বের সিদ্ধান্ত নেন ৩০ এর ghor periye। কারও কারও ক্ষেত্রে তা আরও দেরি হতেই পারে। তবে মনে রাখতে হবে গর্ভধারণ করার আগে, শরীরের খুঁটিনাটি পরীক্ষা একজন স্ত্রীরোগবিশ্ষজ্ঞের পরামর্শ অনুসারে করতে হবে। প্রয়োজনে কাউন্সেলিংও করা দরকার।
পূর্ববর্তী গর্ভপাতের ঘটনা :
যে মহিলাদের পরের পর দুই বা তার বেশি বার গর্ভপাত হয়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রে বেশিমাত্রায় সতর্ক হতে হবে। কেন বারবার গর্ভপাত হচ্ছে জানতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা করিয়ে নিজের শরীরকে নতুন সন্তানকে লালন করার জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
ডায়াবেটিস :
যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিপদ বেশি থাকে। গর্ভধারণ করার আগে অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অনেকের আবার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস দেখা যায়, তাঁদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে বদলাতে হবে ডায়েট। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিয়ে তৈরি করে নিতে হবে ডায়েটচার্ট। তবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধ খাওয়া যাবে না।
জরায়ুর সমস্যা :
যাঁদের জরায়ুতে সমস্যা থাকে, তাঁদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি।
উচ্চ রক্তচাপ :
গর্ভধারণ করার সময়ই দেখে নিতে হবে রক্তচাপ ঠিক আছে কি না। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ধূমপান :
ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। যে মহিলারা গর্ভাবস্থায় ধূমপান করেন তাঁরা গর্ভপাত তো বটেই, হবু সন্তানেরও বিপদ ডেকে আনেন। প্যাসিভ স্মোকিংও এড়িয়ে চলতে হবে। যৌন রোগ বা এসটিডি থাকলে আগে সারিয়ে নিন।