অতিরিক্ত ঘাম কমানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ - Homeopathy medicine to reduce excessive sweating
excessive sweating

অতিরিক্ত ঘাম কমানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ

গ্রীষ্মকাল মানেই অতিরিক্ত গরম আর এই গরমের দাবদাহে অতিরিক্ত ঘাম মানুষের সঙ্গী। ভিড় বাস, ট্রেন এবং মেট্রোর ভিড়ে একে অপরের ঘামের গন্ধে মানুষ নাজেহাল। অনেকের পায়ের ঘামের দুর্গন্ধে তাদের মোজা খোলা দায়। অতিরিক্ত ঘামে শিশুরাও নাজেহাল। ঘামের জন্য শিশুদের বিভিন্ন অসুখের কবলে পড়তে হয়। শরীরের অস্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে যাওয়া ঘামকে হাইপারহাইড্রোসিস বলা হয়। অনেকসময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত ঘাম নির্গত হয়। হাইপারহাইড্রোসিস মানসিক এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনের মানকে নষ্ট করে দিতে পারে। হাইপারহাইড্রোসিস মানুষকে নীরব প্রতিবন্ধী করে তোলে।

প্রকারভেদ

১.প্রাইমারি বা ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস: হাত, পা, বগল, কুঁচকি এবং মুখে অতিরিক্ত ঘর্মগ্রন্থি থাকে। তাই এসব জায়গায় বেশি ঘাম হয়। কোনো কারণবশত এসব জায়গায় অত্যধিক ঘাম হলে একে প্রাইমারি বা ফোকাল হাইপারহাইড্রোসিস বলে। কারণ, কী কারণে হয় তা আজও অজানা।

কিন্তু অনেকে মনে করেন এটি সহানুভূতিশীল স্নায়ুতন্ত্রের অতিরিক্ত কার্যকলাপের কারণে ঘটে। কিছু কিছু রোগী ঘামের কারণে নার্ভাস হয়ে যায় এবং এই নার্ভাসনেসই তাদের ঘামের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

২.সেকেন্ডারি হাইপারহাইড্রোসিস : কোনো রোগের কারণে মানুষের শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়াকে বলে সেকেন্ডারি হাইপারহাইড্রোসিস।

কারণ

সাধারণভাবে  কোনো রাগ আমাদের শরীরের মধ্যে থাকলে এটি দখা যায়। যেমন— বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, লিম্পোমা, ফ্রিওত্রোমোসাইটোমা, কারসিনয়েড টিউমার ইত্যাদি।

* এন্ডোক্রিন— ডায়বেটিস, বিশেষ করে যখন রোগীর ব্লাড সুগার কমে যায়, হাইপারপিটুইটারিজম, হাইপারথাইরয়ডিজম।

* ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যারা নিয়মিত এবং বহুদিন যাবৎ কিছু ওষুধ সেবন করেন যেমন— সেরোটনিন ইনহিবিটারস, অ্যান্টি ডিপ্রেসিভ ড্রাগস, ইনসুলিন, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস ইত্যাদি।

* অন্যান্য কারণ, স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি, পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, পারকিনসনস, কনজেসটিভ হার্ট ফেলিওর, মেনোপজ, ওবেসিটি ইত্যাদি। অতিরিক্ত ঘামের ফলে যে সমস্যাগুলো দেখা যায়। * হাইপারহাইড্রোসিসের ফলে হাত, পা ঠান্ডা হয়ে ডিহাইড্রেশন হতে পারে।

* ত্বকে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

* যাঁদের হাতের তলায় বেশি ঘাম হয় তারা হাত দিয়ে বেশি কাজকর্ম করতে পারেন না। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের পেন ধরে লিখতে গিয়ে খুব অসুবিধা হয়। এমনকি অতিরিক্ত ঘামের কারণে তাদের উত্তরপত্র ভিজে যায়।

* অতিরিক্ত ঘামের জন্য অনেকে হ্যান্ডসেক করতে পারেন না।

* অতিরিক্ত ঘামের ফলে অনেকের শরীরে দুর্গন্ধ হতে পারে। ফলে তারা হীনম্মন্যতায় ভোগেন।

* ঘামজনিত কারণে পায়ে দুর্গন্ধ হয় বলে অনেকে সবার সামনে জুতো খুলতে পারে না।

* অতিরিক্ত ঘামের কারণে অনেকের জামাকাপড়ে ঘামের দাগ হয়ে যায়।* বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঘাম বসে গিয়ে ঘন ঘন সর্দি, কাশি জ্বর হতে পারে।

চিকিৎসা:

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় খুবই ভালো ওষুধ আছে। বিশেষ করে প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি হাইপারহাইড্রোসিস থাকলে রোগীর চিকিৎসা করতে হবে। অতিরিক্ত ঘামের জন্য যাদের পায়ে বা শরীরের বিভিন্ন অংশে দুর্গন্ধ হয়, হোমিওপ্যাথি ওষুধ দ্বারা সেটা সহজেই নির্মূল করা যায়। অতিরিক্ত ঘামের জন্য বাচ্চাদের সর্দি, কাশির সমস্যা সহজেই সারানো যায় হোমিওপ্যাথি ওষুধ দ্বারা। তবে রোগ সারাতে গেলে অবশ্যই রোগীর রোগ লক্ষণ বিবেচনা করে তবেই ওষুধ নির্বাচন করতে হবে, কারণ হোমিওপ্যাথিতে রোগের নয়, রোগীর চিকিৎসা করা হয়। যে সমস্ত ওষুধ সাধারণত ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল—

 সিলিসিয়া- রোগী শীতকাতুরে, হাত পা বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে থাকে এবং পায়ের ঘাম খুবই দুর্গন্ধযুক্ত হলে রোগীকে সাইলেসিয়া দেওয়া যায়।

 ক্যাল কার্ব - রোগী খুবই মোটা এবং শীতকাতুরে হলে, সহজেই ঘাম বেরলে, গা ঠান্ডা এবং ঘামে টক গন্ধ থাকলে রোগীকে ক্যাল কার্ব দিলে ভালো হয়।

 হিপার সালফ- রোগীর সর্দি, কাশির ধাত থাকলে, খুব শীতকাতুরে হলে, ঘামে টক গন্ধ এবং ঘাম খুবই চটচটে হলে হিপার সালফ ওষুধটি উপকারী।

 মার্ক সল- রোগী রাত্রিতে বেশি ঘামেন, ঘামের সঙ্গে জল পিপাসা এবং প্রস্রাবের পরিমাণও বেশি হয়। সঙ্গে ঘামে খুবই দুর্গন্ধ বেরলে রোগীকে মার্ক সল ওষুধটি দেওয়া যায়।

 সোরিনাম- রোগী শীতকাতুরে হয় এবং বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগে ভোগে। ঘামের সঙ্গে মল, মূত্র সবেই বেশি মাত্রায় দুর্গন্ধ হয়। এই ধরনের রোগীকে সোরিনাম দিলে উপকার মেলে।

 থুজা- বিরাট ভুঁড়ি, গোলগাল মানুষ, বিশেষ করে মাথাতে এবং শরীরের খোলা অংশে ঘাম হয়— এমন ক্ষেত্রে থুজা ভালো কাজ দেয়।

 পেট্রোলিয়াম- যাদের বগল থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম নির্গত হয় তাদে ক্ষেত্রে পেট্রোলিয়াম বেশ কার্যকরী।

 সানিকুলা- বিশেষ করে বাচ্চাদের সারা শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হয় এবং পায়ের পাতাতে দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম হয়।

 সালভিয়া অফ- এটি অতিরিক্ত ঘামের জন্য খুবই কার্যকরী ওষুধ।

 ফর্মালিন - এটি হোমিওপ্যাথি ডিওড্রেন্ট হিসেবে কাজ করে।

 অ্যাকোনাইট- বিশেষ করে বাচ্চাদের ঘাম বসে সর্দি, কাশি, জ্বর হলে এই ওষুধ খুবই উপকারী।

এছাড়াও হোমিওপ্যাথিতে আরও অনেক ওষুধ আছে, যেমন— টিউলারকুলিনাম, সালফার, সামবুকাস, ক্যালি কার্ব, জোবোরান্ডি, চায়না ইত্যাদি। যেগুলি অবশ্যই রোগীর রোগ লক্ষণ অনুযায়ী প্রয়োগ করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন।

শীতকালে শিশুর যেসব রোগ বাড়ে - Children's diseases that increase in winter
চিকেন পক্স হলে যা করণীয় - What to do if you have chicken pox
যৌনরোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে যা করবেন - What to do to protect yourself from sexually transmitted diseases
জাপানি তেলের উপকারিতা - Benefits of Japanese oil
গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার ঘরোয়া প্রতিকার - Home remedies for heartburn during pregnancy
দ্রুত মেদ ঝরাতে খাবেন ৫ খাবার
পায়ের ব্যথা কমানোর উপায় - Ways to reduce leg pain
সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম
ডেঙ্গু হলে রক্তের প্লাটিলেট বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন - Foods to eat to increase blood platelets if you have dengue
অনবরত হাঁচি হলে দ্রুত যা করবেন - What to do quickly if you sneeze continuously